যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজায় যারা মারা গেছেন, তারা যেন বেঁচে গেছেন। কারণ এখনও যারা প্রাণে রক্ষা পেয়েছেন, তাদের প্রতিনিয়ত খাবারের জন্য লড়াই করতে হচ্ছে। টিকে থাকার জন্য খাওয়া লাগছে জঙ্গলের আগাছাও।
দুই শিশুকে নিয়ে ওয়াদ্দেয়া পরিবার এখন ক্ষুধার জ্বালা নিবারণ করছেন কাঁটাযুক্ত ‘ক্যাকটাস’ খেয়ে। এরপর কীভাবে চলবে, তা জানা নেই কারও। এভাবেই পশুর মতো দিন কাটছে গাজাবাসীর।
এমন অবস্থা শুধু ওয়াদ্দেয়া পরিবারেরই নয়, পুরো গাজাজুড়েই ক্ষুধার জ্বালা মেটাতে এমন নানা অখাদ্য খাচ্ছেন অসহায় মানুষগুলো। মিটছে না প্রয়োজনীয় পুষ্টির যোগান।
ওয়াদ্দেয়া পরিবারের একজন বলেন, ভয়াবহ দুর্ভিক্ষের মধ্যে আছি আমরা। খাওয়ার কিছুই নেই। কিছুদিন আগেও মালো নামের এক আগাছা খেয়েছি। কিন্তু এখন তাও নেই। বাধ্য হয়ে কাঁটাযুক্ত ক্যাকটাসই খাচ্ছি। ছোটো শিশুরাও খাচ্ছে বিস্বাদ এই উদ্ভিদ। অথচ এই বয়সে তাদের দুধ, ডিম, মাংসের মতো পুষ্টিকর খাবার প্রয়োজন।
পরিবারের আরেকজন বলেন, খাবারের অভাবে আমার সদ্য জন্ম নেয়াটা শিশুটা রক্তশূন্যতায় ভুগছে। ক্ষুধা নিবারণে আমি প্রতিবেলায় ক্যাকটাস খাচ্ছি। যেকারণে ওকে দুধও খাওয়াতে পারি না।
কাঁটাযুক্ত হওয়ায় এই উদ্ভিদ আগে ব্যবহার হতো বেড়া দেয়ার কাজে। কিন্তু খাবারের অভাবে এখন সেই গাছই হয়ে উঠেছে উপত্যকার মানুষের প্রধান খাদ্য। তাদের শঙ্কা, আর কিছু দিন পর পাওয়া যাবে না স্বাদহীন এই উদ্ভিদও। সেই আশঙ্কায় এখনই যতোটুকু পারছেন, সংগ্রহ করে রাখছেন।
ইসরায়েলি আগ্রাসন শুরুর পর থেকেই দুর্ভিক্ষ চলছে গাজায়। তবে গত এক মাস একেবারেই খাদ্যের যোগান নেই অঞ্চলটিতে। এমন পরিস্থিতিতে গাজায় মানবিক সঙ্কট আরও বাড়বে, এমন সতর্কবার্তা জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের। খাবারের অভাবে লাখ লাখ মানুষের মৃত্যু ঠেকাতে বিশ্ব নেতাদের প্রতি প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান সংস্থাটির।