অনলাইন ডেস্ক – শারীরিক অবস্থার উন্নতি হওয়ায় অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিককে হাসপাতাল থেকে কারাগারে নেওয়া হয়েছে।
সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিক্যাল বোর্ডের সভাপতি অধ্যাপক শিশির চক্রবর্ত্রী গণমাধ্যমকে বলেন, ‘সাবেক বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক এখন সুস্থ।
তিনি এখন অনেকটা স্বাভাবিকভাবে চলাফেরা করতে পারছেন। সার্বিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর মেডিক্যাল বোর্ড তাকে হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। ’
তিনি জানান, মূলত শামসুদ্দিন মানিকের হার্টে সমস্যা আছে। ১০ বছর আগে বাইপাস সার্জারি করেছিলেন। এছাড়া ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ আছে। তার শারীরিক অবস্থার উন্নতি হওয়ায় সাধারণ কেবিনে দেওয়া হয়েছিল।
সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার মো. শাখাওয়াত হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, বৃহস্পতিবার বিকাল সাড়ে ৪টায় সাবেক বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিককে হাসপাতাল থেকে কারাগারে নেওয়া হয়।
চিকিৎসকরা বলেছেন, তার শারীরিক অবস্থা আগের তুলনায় অনেক ভালো। তবে ফলোআপ চিকিৎসার জন্য তাকে আবারো হাসপাতালে নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকরা। গত ২৪ আগস্ট তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল।
সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারের সহকারী সার্জন (কারা হাসপাতাল) ডা. মো. ইনামুল হক চৌধুরী স্বাক্ষরিত স্মারকপত্রে বলা হয়েছে, হাজতি আবুল হোসেন মোহাম্মদ শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিককে (৭৪) ইনজুরি আউটসাইড অবস্থায় সতর্কতার সঙ্গে সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করতে সুপারিশ করা হয়।
কারা সূত্র জানায়, ঢাকার আদাবর থানায় পোশাকশ্রমিক হত্যার ঘটনায় করা মামলায় শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিককে শুনানির দিন গত ৩ সেপ্টেম্বর ধার্য করেছিলেন ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত। সেদিন তাকে আদালতে হাজির করার কথা থাকলেও শারীরিক অবস্থা উন্নতি না হওয়ায় মেডিক্যাল বোর্ড তাকে ছাড়পত্র দেয়নি।
গত ২৮ আগস্ট তাকে হাসপাতালের আইসিইউ থেকে সাধারণ কেবিনে স্থানান্তর করা হয়। সিলেট ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ওই কেবিনটি প্রিজন সেল হিসেবে ব্যবহার করা হয়।
গত ২৩ আগস্ট রাত ১১টার দিকে সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার দনা সীমান্ত দিয়ে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টাকালে শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিককে আটক করে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।
পরদিন শনিবার (২৪ আগস্ট) সকালে তাকে কানাইঘাট থানায় হস্তান্তর করা হলে ৫৪ ধারায় গ্রেফতার দেখিয়ে সিলেটের আদালতে হাজির করা হয়। পরে সিলেটের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট-১ আলমগীর হোসাইন তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
ওইদিন আদালত প্রাঙ্গণে পুলিশি নিরাপত্তা ভেদ করে ক্ষুব্ধ জনতা বিচারপতি মানিককে বেধড়ক কিল-ঘুষি, লাথি মারেন এবং ডিম ও জুতা নিক্ষেপ করেন। আঘাতে তার অণ্ডকোশ ফেটে যায়। পরে অবস্থার অবনতি হলে ২৪ আগস্ট রাতেই হাসপাতালে ভর্তি করে জরুরিভিত্তিতে তার দেহে অস্ত্রোপচারের পর আইসিইউতে চিকিৎসাধীন রাখা হয়। এরপর অবস্থার উন্নতি হলে ২৮ আগস্ট আইসিইউ থেকে কেবিনে স্থানান্তর করা হয়।