আন্তর্জাতিক ডেস্ক : চলতি বছরের মার্চে মিয়ানমারে সংঘটিত ৭.৭ মাত্রার ভয়াবহ ভূমিকম্পে থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককে একটি ভবন ধসে পড়ে প্রায় ১০০ জন শ্রমিক নিহত হয়। এ ঘটনায় দেশটির অন্যতম বড় রিয়েল এস্টেট সংস্থা ইটালিয়ান-থাই ডেভেলপমেন্ট কোম্পানির প্রেসিডেন্ট প্রেমচাই কার্নাসুতাসহ ১৫ জন পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করেছেন।
শুক্রবার দেশটির কর্তৃপক্ষের বরাতে বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ তথ্য জানিয়েছে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, ভয়াবহ ভূমিকম্পটির কেন্দ্র ছিল প্রতিবেশী মিয়ানমারে। তবে এর প্রবল কম্পনে ব্যাংককের আংশিক নির্মাণাধীন ৩০ তলা স্টেট অডিট অফিস ভবনটি সম্পূর্ণরূপে ধসে পড়ে।
ছয় সপ্তাহের উদ্ধার অভিযানে এ পর্যন্ত ৯২টি লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এখনো ৪ জন নিখোঁজ রয়েছেন।
উল্লেখ্য, ভূমিকম্পে মিয়ানমারে প্রাণহানি ঘটে ৩ হাজারেও বেশি জনের।
নকশা ও নির্মাণে গুরুতর অনিয়ম
এদিকে ব্যাংকক মেট্রোপলিটন পুলিশ ব্যুরোর ডেপুটি কমিশনার নোপ্পাসিন পুনসাওয়াত জানান, রিয়েল এস্টেট টাইকুন প্রেমচাইসহ ১৫ জন অভিযুক্ত বিভিন্ন নকশা ও নির্মাণ সংশ্লিষ্ট কোম্পানির সঙ্গে যুক্ত। তাদের বিরুদ্ধে দায়িত্বে অবহেলা ও নির্মাণ বিধিমালা লঙ্ঘনের অভিযোগ আনা হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘বিশেষজ্ঞদের মূল্যায়নে দেখা গেছে, স্থাপত্য নকশাটি মন্ত্রণালয়ের বিধিমালা অনুসরণ করে হয়নি এবং টেন্ডার চুক্তিতে উল্লিখিত প্রযুক্তিগত মানও পূরণ করেনি’।
এছাড়াও নির্মাণে ব্যবহৃত উপকরণেও অনিয়ম ধরা পড়েছে। নিম্নমানের কংক্রিট ও স্টিল, এমনকি প্রকৌশল ডকুমেন্টে জাল স্বাক্ষরের প্রমাণও পাওয়া গেছে বলে জানান তিনি।
এদিকে, দুর্ঘটনার পরপরই একটি নজরদারি সংস্থা দুর্নীতির আশঙ্কা প্রকাশ করেছিল। মার্চ মাসে ঘটনাস্থল থেকে সংগৃহীত উপকরণ পরীক্ষা করে নিম্নমানের স্টিল পাওয়া যায়।
স্থানীয় কর্তৃপক্ষের বরাতে রয়টার্স বলছে, অভিযুক্ত ১৫ জন বর্তমানে আদালতে পূর্ব বিচারিক কার্যক্রমে অংশ নিচ্ছেন। যদিও তারা সবাই আনিত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। আরও দুজন অভিযুক্ত সোমবার পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করবেন বলে জানানো হয়েছে।
ইটালিয়ান-থাই ডেভেলপমেন্ট কোম্পানি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তারা সরকারি তদন্তে পূর্ণ সহযোগিতা করছে।
উল্লেখ্য, প্রেমচাই কার্নাসুতা এর আগে ২০১৮ সালে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ এলাকায় একটি কালো ইন্দোচায়না চিতাসহ বিভিন্ন সংরক্ষিত প্রাণী শিকার করার দায়ে দোষী সাব্যস্ত হন। পরে ২০২১ সালে তাকে সাড়ে তিন বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত করা হন।