নিউজ ডেস্ক : লন্ডন প্রবাসী রাইয়ান আরা লাবণ্যের ৬৪নং নাহার বাড়িতে গতকাল রাত আনুমানিক ১০টার সময়ে এলাকার উত্তেজিত মুসল্লিরা আক্রমন করেন এবং অগ্নিসংযোগ করে বাড়ির আসবাব পত্র পুড়িয়ে ভস্ম করে দেয়। এর লাবণ্যের বাবা-মা ও ছোট বোন, রাফিয়া রাফা লুবাবা, মারাত্মক ভাবে আহত হন।
জানা যায়, লাবণ্য ময়মনসিংহ সদরের নাহার রোডের ৬৪ নং বাড়িতে এমডি রবিউল আলম ফকির ও নাসরীন সুলতানার বড় মেয়ে। লাবণ্য বাংলাদেশে থাকা অবস্থায় সিটি ইউনিভার্সিটিতে পড়া কালীন হিন্দু বন্ধুদের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে হিন্দু ধর্মে বিশ্বাসী হয়ে ওঠেন। মুসলীম প্রধান দেশ বাংলাদেশে ইসলাম ধর্ম ত্যাগ করে হিন্দু ধর্ম পালন করা অসুবিধা ও প্রাণের ঝুকি থাকায় স্টুডেন্ট ভিসায় লন্ডনে চলে যান। লাবণ্যে বিভিন্ন সময় নামে বেনামে স্যোসাল মিডিয়ায় ইসলাম ধর্মের সমালোচনা করে এবং হিন্দু ধর্মের সমর্থনে লেখালেখি করতেন। ফলে স্থানীয় ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা মেনে নিতে পারেনি। এতে অনেক বার রবিউল আলম ফকির ও নাসরীন সুলতানা এলাকার মুসলীদের দ্বারা লাঞ্ছনার স্বীকার হন।
গত বছর ডিসেম্বরে লাবন্যের ইসলাম বিদ্বেষী স্যোসাল মিডিয়া পোস্টের কারণে একদল লোক রবিউল আলম ফকিরের পথ রোধ করে এবং তাকে বেধড়ক পিটিয়ে বেহুশ অবস্থায় রাস্তার পাশে ফেলে রেখে চলে যায়। পরে অবশ্য পথচারিরা তাকে হাসপাতালে ভর্তি করে এবং প্রায় একসপ্তাহ হাসপালে চিকিৎসা নেন। এব্যাপারে থানায় অভিযোগ করতে গেলে পুলিশ কোন এক আজানা কারণে রবিউল ফকিরের অভিযোগ আমলে নেন নি।
স্থানীয় বাসিন্দাদের সূত্রে জানা যায়, লাবণ্যের ধর্ম ত্যাগ ও ইসলাম বিদ্বেষী লেখালেখি করার কারণে গত মঙ্গোলবার রাতে এলাকায় চাঞ্চল্যকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয় এবং এরই জের ধরে এলাকার ধর্মপ্রাণ মানুষ লাঠিসোটা ও ধারালো অস্ত্র নিয়ে নাহার রোডের বাড়িতে হামলা চালায় এবং গ্নিসংযোগ করে অনেক মূল্যবান বস্তু ও আসবাবপত্র পুড়ে ভস্মীভূত হয়। আক্রমণ চলা অবস্থায় ওই বাড়িতে লাবণ্যের বাবা, মা ও ছোট বোন অবস্থান করছিলেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন মহল্লার বাসিন্দা বলেন, গত কয়েকদিন আগে লাবণ্য ইসলামের মৌলিক বিষয়ে ও সরকারের বিরুদ্ধে সমালোচনা করে একটা পোস্ট দেন। এই পোস্ট প্রকাশের পরে লাবণ্যের বিরুদ্ধে স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতা, মেয়র একরামুল হক টিটুর নেতৃত্বে সাধারণ ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা ফুঁসে ওঠে। তারই রেশ ধরেই এই হামলা ও অগ্নি সংযোগের ঘটনা ঘটেছে।
এলাকার একজন জনপ্রতিনিধী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, লাবণ্য বাংলাদেশে থাকা অবস্থায় হিন্দু ধর্মের আচার আচরণ নিয়মিত পালন করত এবং নিয়মিত হিন্দুদের পুজা পর্বনে অংশগ্রহণ করতেন। এর আগে লাবণ্যকে এলাকার ইমামের নেতৃত্বে অনেকবার হুমকি দেয়া হয় এবং ইসলাম বিরোধি লেখা লেখি করলে লাবণ্যকে আগুনে পুড়িয়ে মারার হুমকি দেন। ফলে ভয়ে লাবণ্য দেশ ত্যাগে বাধ্য হন।
স্থানীয় কাউন্সিলরের সাথে যোগাযোগ করতে চেষ্টা করেও আমাদের প্রতিনিধী যোগাযোগ করতে পারেনি। আমাদের প্রতিনিধি স্থানীয় থানায় যোগাযোগ করলে কর্তব্যরত পুলিশ পরিদর্শক এ ব্যপারে কিছু বলতে পারেননি।