অনলাইন ডেস্ক – কোটা বাতিলের দাবিতে এক দফা কর্মসূচি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্রসমাজ। কর্মসূচি অনুযায়ী, আগামী বুধবার সারা দেশে সর্বাত্মক ব্লকেড কর্মসূচি পালন করা হবে। এছাড়াও আগামীকাল মঙ্গলবার ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনসহ অনলাইন অফলাইন গণসংযোগ চলমান থাকবে।
সোমবার রাত সাড়ে ৮টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও আশপাশের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলোতে অবস্থান কর্মসূচি শেষে শাহবাগে এই কর্মসূচি ঘোষণা করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম। আগামীকাল বিকেল ৩টায় এক সংবাদ সম্মেলন করে বুধবার সর্বাত্মক কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে বলে জানান তিনি।
সর্বাত্মক বাংলা ব্লকেড শুরু হলে বুধবার সারাদিন দেশের সব গুরুত্বপূর্ণ স্থান অবরোধ করা হবে বলে ঘোষণা করা হয়। সেজন্য মঙ্গলবার প্রস্তুতি নেবেন তারা। মঙ্গলবার অনলাইনে এবং অফলাইনে গণসংযোগ চালানো হবে।
কর্মসূচি ঘোষণা করে আন্দোলনের সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, আমরা নিয়মতান্ত্রিকভাবে আমাদের কর্মসূচি পালন করছি। আমরা বাধ্য হয়েই আজ রাজপথে নেমে এসেছি। ছাত্ররা সহজে মাঠ ছাড়বে না। আমাদের আহ্বান থাকবে আপনারা দায়িত্বশীল আচরণ করুন। তা না হলে আমরা আরও কঠোর কর্মসূচিতে যেতে বাধ্য হব।
তিনি বলেন, অর্ধবেলা ব্লকেডে আমরা থেমে থাকব না। আমরা সর্বাত্মক ব্লকেড ঘোষণা করব। মঙ্গলবার আমরা সারা দেশে অনলাইন অফলাইন গণসংযোগ করব। অর্থাৎ সর্বাত্মক ব্লকেডের প্রস্তুতি চলবে কাল। বুধবার থেকে সর্বাত্মক ব্লকেড।
তিনি আরও বলেন, আমাদের যে এক দফা দাবি এটি আদালতের হাতে নেই। খেলার বল এখন সরকারের কোর্টে। আমরা সরকারকে বলব আমাদের দাবি অবিলম্বে বাস্তবায়ন করুন। আইন পাস করে আমাদের এক দফা দাবি পূরণ করুন। এখানে আদালতের কোনো এখতিয়ার নেই। সরকার চাইলেই এটা সম্ভব।
এ সময় শিক্ষার্থীদের বাধা দিলে বা হয়রানি করা হলে দাঁতভাঙা জবাব দেওয়া হবে বলেও হুঁশিয়ারি দেন তিনি।
এ সময় আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, আমরা আজকে মন্ত্রীর কথায় মর্মাহত হয়েছি। বিচার বিভাগকে নির্বাহী বিভাগের মধ্যে এনে আমাদের হাইকোর্ট দেখানো হচ্ছে, অন্ধকে হাইকোর্ট দেখানো হচ্ছে। আপনারা আমাদের ধৈর্যের পরীক্ষা নেবেন না। আমরা ফিরে যাওয়ার জন্য রাজপথে আন্দোলনে নামি নাই। আমরা দাবি আদায়ের আগ পর্যন্ত এই আন্দোলন চালিয়ে যাবো। আপনারা দায়িত্বশীলরা সহজ বিষয়কে ঘোলা করছেন। আপনাদের জন্যই শিক্ষার্থীদের মাঝে নেতিবাচক ধারণা তৈরি হচ্ছে। আপনাদের ওপর আমরা আস্থা হারাচ্ছি।
তিনি বলেন, আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই, শিক্ষার্থীদের যেকোনো ক্ষতির দায়ভার আপনাদের নিতে হবে। কেউ আহত হলে অসুস্থ হলে তার দায়ভার আপনাদের ঘাড়ে বর্তাবে। আমরা রাস্তায় থাকবো আর আপনারা এসে রুমে বসে রায় দেবেন তা আমরা মেনে নেব না। অতি দ্রুত আপনারা আমাদের সঙ্গে সমন্বয় না করেন তাহলে বুঝব আপনারা ছাত্র সমাজের পালস বোঝাতে ব্যর্থ হয়েছেন।
আন্দোলনের আরেক অন্যতম সমন্বয়ক আবু বাকের মজুমদার বলেন, আজকে মন্ত্রী বলেছেন হাইকোর্টের রায়ের ওপর তাদের কথা নেই। হাইকোর্টের রায়ই নাকি চূড়ান্ত। আমরা এমন রায় মানি না, এমন বক্তব্যকে আমরা প্রত্যাখ্যান করছি। বাংলাদেশের সব শিক্ষার্থীরা একত্রিত হয়ে এই রায় বর্জন করে কঠোর আন্দোলনের মাধ্যমে এই দাবি আদায় করে নেবে।
শিক্ষার্থীদের ঘোষিত বর্তমান এক দফা দাবি হলো- সব গ্রেডে সব প্রকার অযৌক্তিক ও বৈষম্যমূলক কোটা বাতিল করে সংবিধানে উল্লিখিত অনগ্রসর গোষ্ঠীর জন্য কোটাকে ন্যূনতম পর্যায়ে এনে সংসদে আইন পাস করে কোটা পদ্ধতিকে সংশোধন করতে হবে।