নিউজ ডেস্ক : বগুড়ায় পাঁচ লাখ টাকা মুক্তিপণ না পেয়ে মাহাদী হাসান নামে চার বছরের এক শিশুকে হত্যা করা হয়েছে। শুক্রবার সকালে সদর উপজেলার চারমাথার ধমকপাড়ায় প্রতিবেশী ভাড়াটিয়ার বাড়ি থেকে তার বস্তাবন্দি লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।
শিশুটি বৃহস্পতিবার সকাল থেকে নিখোঁজ ছিল। লাশের পাশে মুক্তিপণ দাবির একটা চিরকুট পাওয়া গেছে।
এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে জনগণ তাহমিনা খাতুন (৩৫) নামে এক গৃহবধূকে আটক করে পিটুনি দিয়েছেন।
সদর থানার ওসি এসএম মঈনুদ্দিন এ তথ্য দিয়েছেন।
সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) একেএম মঈন উদ্দিন, চাচা জাহিদুল ইসলাম ও স্বজনরা জানান, শিশু মাহাদী হাসান বগুড়া সদরের চারমাথা ধমকপাড়ার হোটেল ব্যবসায়ী শফিকুল ইসলামের ছেলে। চারমাথা কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালে তার খাবার হোটেল রয়েছে। বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে তার শিশুসন্তান বাড়ি থেকে নিখোঁজ হয়। সম্ভাব্য সব স্থানে খোঁজ করেও তার সন্ধান মেলেনি। এ ব্যাপারে তিনি সদর থানায় জিডি করেন।
শুক্রবার সকালে প্রতিবেশী রতনের বাড়ির ভাড়াটিয়া তাহমিনা খাতুন একটি বস্তার পাশে পায়চারি করছিলেন। ঘটনাটি বাড়ির মালিক রতনের সন্দেহ হলে তিনি এলাকাবাসীকে জানান। তখন ওই নারীর বাড়ি থেকে বস্তাবন্দি শিশু মাহাদীর লাশ পাওয়া যায়। মরদেহের পাশে একটি চিরকুট পাওয়া গেছে। যাতে পাঁচ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবির কথা লেখা রয়েছে।
বিক্ষুব্ধ গ্রামবাসীরা শিশু মাহাদীকে হত্যা ও বস্তায় লাশ গুমে জড়িত সন্দেহে তাহমিনা খাতুনকে আটক করে বেদম মারপিট করেন। খবর পেয়ে সদর থানা পুলিশ লাশ উদ্ধার ও নারীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে থানায় নিয়ে আসে।
তাহমিনা খাতুন বগুড়ার শিবগঞ্জের জানগ্রামের আনিস মণ্ডলের দ্বিতীয় স্ত্রী। তারা ওই এলাকায় ভাড়া বাড়িতে থাকেন।
ধারণা করা হচ্ছে, মুক্তিপণ না পেয়েই শিশুটিকে শ্বাসরোধে হত্যা করে লাশ গুমের জন্য বস্তায় তোলা হয়। পরে সুবিধামতো সময় ও স্থানে গুম করা হতো।
শিশু মাহাদী হাসান নিহতের ঘটনায় শুধু তার পরিবারেই নয়, আত্মীয়-স্বজন ও পুরো গ্রামবাসীর মাঝে শোকের ছায়া নেমে আসে। তারা খুনির দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।
শুক্রবার বিকালে বগুড়া সদর থানার ওসি এসএম মঈনুদ্দিন জানান, মারপিটে আহত ওই নারীকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালে ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
তিনি আরও জানান, লাশের পাশে পাওয়া চিরকুট ওই নারীর লেখা কিনা তা যাচাই করতে সিআইডি বিশেষজ্ঞের কাছে দেওয়া হবে। এ ব্যাপারে মামলার প্রস্তুতি চলছে।