সারাদেশে শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখর পরিবেশে পূজা উদযাপিত হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন নৌপরিবহন এবং বস্ত্র ও পাট উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব:)
ড. এম সাখাওয়াত হোসেন। উপদেষ্টা বলেন, সারাদেশে শান্তিপূর্ণভাবে অত্যন্ত আনন্দ উৎসবমুখর পরিবেশের মধ্যে দিয়ে এবারকার পূজা উদযাপিত হচ্ছে। সরকার সর্বোচ্চ নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেছে। পুলিশ আনসারের পাশাপাশি সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে।
উপদেষ্টা আজ সন্ধ্যায় রাজধানীর তেজগাঁও থানাধীন বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয় এর ওসমানী হল খেলার মাঠ সংলগ্ন পূজা মন্ডপ, তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানা পূজা মন্ডপ, বি জি প্রেস পূজা মন্ডপসহ বিভিন্ন পূজামন্ডপ পরিদর্শন করেন এবং সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সাথে দূর্গাপূজার শুভেচ্ছা ও মতবিনিময় করেন।
দূর্গাপূজার আনন্দকে আরো বেশি আনন্দময় ও উৎসবমুখর করতে বর্তমান সরকার প্রথমবারের মতো ছুটি বৃদ্ধি করেছে বলে জানান নৌপরিবহন এবং বস্ত্র ও পাট উপদেষ্টা। এ সময়ে উপদেষ্টা এবারকার মতো আগামীতেও ছুটি বৃদ্ধির বিষয়টি বিবেচনা করা হবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
বাংলাদেশে কোন ধর্মীয় বিভাজন নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমাদের ছোট্ট একটি দেশ। আবহমানকাল ধরে আমরা সকলে ধর্ম বর্ণ গোত্র নির্বিশেষে মিলেমিশে বসবাস করে আসছি। ছোটবেলার পূজার স্মৃতিচারণ করে তিনি বলেন, পূজার সময়ে সনাতন ধর্মাবলম্বী বন্ধু-বান্ধবীদের সাথে বিভিন্ন উৎসবে আনন্দ উদযাপন ছিল উৎউৎসবমুখর কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য সাম্প্রতিক সময়ে দুর্গা উৎসব উদযাপন নিয়ে রাজনৈতিক কারণে গুজব বা আতঙ্ক ছড়ানো হচ্ছে যা কোনভাবেই কাম্য নয় বলে তিনি মন্তব্য করেন।
নৌপরিবহন উপদেষ্টা বলেন, বর্তমান সরকার এবার দুর্গোৎসবে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা প্রদানের ব্যবস্থা করেছে যাতে কেউই এখানে নাশকতা করার সাহস না পায়। তিনি সনাতন ধর্মাবলম্বীদের নির্বিঘ্নে দুর্গোৎসব উদযাপনের আহ্বান জানান।
৫ ই আগস্ট এর ছাত্র-জনতার গণঅভূথ্যানের পর কিছু অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেছে মর্মে উল্লেখ করে উপদেষ্টা বলেন, তবে সেটি শুধু হিন্দু ধর্মালম্বীদের উপরই নয়, মুসলমানদেরও বাড়ি ঘর ভেঙেছে। আসলে একটি অস্বাভাবিক ঘটনার প্রেক্ষিতেই এটি ঘটেছে। বিগত স্বৈরাচার সরকার বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের সময় প্রায় দুই হাজার মানুষকে নির্বিচারে হত্যা করেছে।কে মুসলমান কে হিন্দু সেটি বিবেচনা করা হয়নি। তিনি আরও বলেন, প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িতদের বিচারের আওতায় আনা হচ্ছে।তিনি আশা প্রকাশ করেন ,বাংলাদেশ যেন কখনোই কেউ ধর্মীয় চর্চা বা ধর্মীয় স্বাধীনতায় বাধা দিতে না পারে এবং যারা এই কাজটি করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে ।তিনি ধর্মীয় সম্প্রীতির নতুন বাংলাদেশ গড়ার ক্ষেত্রে সকলের সহযোগিতা কামনা করেন।তিনি আরও উল্লেখ করেন, চাত্র-জনতার উপর যখন গুলি চালানো হয়েছে তখন সে গুলি হিন্দু মুসলমান ভাগ করেনি। যারা সেই অন্যায়ের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছে ,ন্যায়ের পক্ষে দাঁড়িয়েছে তারাই নির্যাতিত হয়েছে। কোন একটি সম্প্রদায় যদি ক্ষতিগ্রস্ত হয় তাহলে অন্য সম্প্রদায়ের জন্য তা সুখকর হতে পারে না।বর্তমান সরকার বাংলাদেশের সকল মানুষের জন্য কধর্ম বর্ণ গোত্র নির্বিশেষে সকলেই গণঅভ্যুত্থানের সুফল পাবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন উপদেষ্টা।
তরুণ প্রজন্ম সম্প্রীতির বাংলাদেশ বিনির্মাণের জন্যই জুলাই আগস্টের বিপ্লবে এত বড় আত্মত্যাগ করেছেন বলে মন্তব্য করে নৌ পরিবহন উপদেষ্টা বলেন, আমাদের সামনে নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণের সুযোগ এসেছে। দেশের সকল ধর্ম গোত্র বর্ণ নির্বিশেষে সকল মানুষকে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে রাষ্ট্র সংস্কার তথা নতুন বাংলাদেশ গড়ার আহ্বান জানান তিনি।
পরিদর্শনকালে সংখ্যালঘু অধিকার আন্দোলনের শিক্ষার্থী প্রতিনিধিসহ স্থানীয় সনাতন ধর্মের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।