স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় এবং ভূমি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা এ. এফ. হাসান আরিফ বলেছেন, জলাবদ্ধতা ঢাকা মহানগরীর দীর্ঘদিনের সমস্যা। বর্ষা মৌসুমে জলাবদ্ধতা নিরসনে ক্রমান্বয়ে কিছু কিছু উদ্যোগ নেয়া হয়েছে, কিন্তু তা যথেষ্ট নয় । জলাবদ্ধতার স্থায়ী সমাধানের জন্য বিশেষজ্ঞগণের পরামর্শ অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে মন্ত্রণালয় আজ সভা আহ্বান করেছে। ধাপে ধাপে জলাবদ্ধতা নিরসন হবে। পনের বছরের জঞ্জাল একদিনে পরিষ্কার হবে না।
উপদেষ্টা আজ (মঙ্গলবার) সচিবালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত বর্ষা মৌসুমে ঢাকা মহানগরীর জলাবদ্ধতার নিরসনকল্পে প্রস্তুতি ও কর্মপরিকল্পনা পর্যালোচনার লক্ষ্যে ২০২৪ সালের ২য় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপস্থিত সাংবাদিকদের প্রতি এসব কথা বলেন।
স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা বলেন, আমাদের ক্ষুদ্র অভিজ্ঞতা বা মন্ত্রণালয়ের যে অভিজ্ঞতা সেটার মধ্যে সীমাবন্ধ না থেকে, এই বিষয়ে যারা বিশেষজ্ঞ আছেন এবং জলাবদ্ধতার উপর লেখালেখি আছে ও গবেষণা আছে তাদেরকে আমরা আমন্ত্রণ জানিয়েছি। তাদের কথা আমরা শুনবো, তাদের বিজ্ঞ মতামত আমরা গ্রহণ করবো এবং সেটাকে বাস্তবায়ন করার চেষ্টা করবো। জলাবদ্ধতা দূর না হলে আমরা বুঝবো জনগণ নাগরিক সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, জলাবদ্ধতার কারণে মানুষের মুভমেন্ট কমে যাচ্ছে, মুভমেন্ট বন্ধ হয়ে যাচ্ছে, বাচ্চারা স্কুলে যেতে পারছে না, স্কুল বন্ধ হয়ে যাচ্ছে, অসুখ বিসুখ হচ্ছে। তাই জলাবদ্ধতা দূর করা একান্ত জরুরী। শহরের মধ্যে কেন পানি থাকবে যেখানে এত কোটি কোটি টাকা খরচ করে ড্রেনেজ ব্যবস্থা করা হয়েছে! গলদটা কোথায় এটা আমরা বিশেষজ্ঞজনের কাছ থেকে পরামর্শ নিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
হাসান আরিফ জানান, শুধুমাত্র মন্ত্রণালয়ের একমুখী উদ্যোগে জলাবদ্ধতা নিরসন করা সম্ভব নয়। নাগরিকদেরকেও সচেতন হতে হবে। নর্দমায় প্ল্যাস্টিকের বোতল, ওয়ান টাইম ব্যবহারকৃত কাপ, পলিথিনের ব্যাগ এবং ডাবের খোসা মন্ত্রণালয় গিয়ে ফেলে আসে না, জনগণ ফেলে। জনগণ সচেতন না হলে মন্ত্রণালয় এক কোটি পরিচ্ছন্নতা কর্মী দিয়েও নর্দমায় জমে থাকা ময়লা পরিষ্কার করতে পারবে না। নাগরিকদের মধ্যে সচেতনতা গড়ে তুলতে প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়াকেও সাহসী ভূমিকা পালন করতে হবে।
উক্ত সভায় স্থানীয় সরকার বিভাগ সচিব (রুটিন দায়িত্ব) মো. নজরুল ইসলাম, নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক এ এইচ এম কামরুজ্জামান, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী মো. আলি আখতার হোসেন, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মোস্তফা আলী, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী তুষার মোহন সাধু খাঁসহ স্থানীয় সরকার বিভাগের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ এবং বিভিন্ন বিশেষজ্ঞজন উপস্থিত ছিলেন।