যেতে পারলাম না, তাই বলা হলো না। খুব আগ্রহ ছিল উত্তরা (ঢাকা- ১৮) আসনের এমপি হাবিব হাসানকে সামনে রেখে দুটো কথা বলার। উত্তরায় গণমাধ্যম কর্মিরা কেমন থাকছেন, কেমন আছেন সেসব বিষয় তার হৃদয়ে জাগ্রত করে দেয়ার। বলতে চেয়েছিলাম, জনাব হাবিব হাসান, আপনার মতো প্রভাবশালী নেতা, দাপুটে মানুষ থাকতেও উত্তরায় আমাদের গণমাধ্যম কর্মিরা সকাল বিকাল হয়রানির শিকার হয় কেন? কেন তাদের বিরুদ্ধে একের পর এক কল্পিত মামলা দিয়ে হয়রানি করা হয়? কেন আপনার নাম ভাঙ্গিয়ে চাটুকারের দল রক্তচক্ষু দেখিয়ে সাংবাদিকদের কোনঠাসা করে রাখার স্পর্ধা পায়? যে দুঃসাহস আপনি নিজে সারাজীবন দেখানোর পাঁয়তারা করেননি, অথচ আজ আপনারই নাম যপ করা কথিত চামুন্ডার দল কিভাবে এতোটা ভয়ঙ্কর হয়ে উঠলো? আপনি নেতা বেষ্টিত গন্ডি থেকে হঠাৎ বাইরে বেরিয়ে আসুন, নিজের কানে শুনুন, চোখে দেখুন। আপনার উত্তরাবাসী কেমন থাকছেন, কেমন থাকছেন সাংবাদিক মহল? আশা করি বহু সমস্যার সমাধান মুহূর্তেই হয়ে যাবে আপনারই হাত ধরে। আজ বিকেলে দক্ষিণখান কলেজ মাঠে দৈনিক জনতার প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে আয়েজিত অনুষ্ঠানে হাসান হাবিব এমপি ছিলেন প্রধান অতিথি। সেখানেই বিশেষ অতিথি হিসেবে রাখা হয়েছিল আমাকে। টঙ্গী, উত্তরখান, দক্ষিণখান, তুরাগসহ সমগ্র উত্তরা এলাকায় কর্মরত সংবাদ কর্মিরা আমার যাওয়ার খবরে খুবই উচ্ছ্বাস নিয়ে দলে দলে হাজির হয়েছিলেন। অনুষ্ঠানস্থলে যাওয়ার উদ্দেশ্যে যথাসময়ে আমরাও রওনা হয়েছিলাম। সঙ্গে ছিলেন দেশবাংলা পত্রিকার হেড অব নিউজ সজীব আকবর ও অনলাইন ইনচার্জ মেহেদী হাসান রিয়াদ। কিন্তু বাধ সাধলো উত্তরার দুর্ঘটনাটি। গাড়ি চাপায় স্কলাস্টিকা স্কুলের ছাত্র আহত হওয়ার ঘটনায় বিক্ষুব্ধ ছাত্ররা সড়ক অবরোধ করায় আমি সদলবলে আটকে পড়ি খিলক্ষেত এলাকায়। টানা দুই ঘন্টা দমবন্ধ গরমে অপেক্ষা করেও রাস্তার অবরোধদশা থেকে মুক্তি মেলেনি, ফলে পৌঁছাতে পারিনি আর কাঙ্ক্ষিত অনুষ্ঠানে। অথচ তখনও রাস্তায় রাস্তায় অপেক্ষমাণ ছিলেন আমাদের বিমানবন্দরস্থ সাংবাদিক স্বপন রানা, উত্তরার সিনিয়র সাংবাদিক, বন্ধুবর মনির হোসেন জীবন, পারিবারিক সদস্য কাউসার আকন্দ, ছোট ভাই মাসুদ, মোহসীন, শামীম, আনুসহ অনেকেই। মিনিটে মিনিটে তাদের ফোন তাগিদও চলছিল। ফোন আসছিল আয়োজক রাসেল হাসান ও সংবাদকর্মি ইজাজুলের পক্ষ থেকেও। আমি তখনও অনিশ্চিত যানজটের বেড়াজালে বসে বসেই মোবাইলে লিখছিলাম, বক্তব্যের খুটিনাটি। সেই নোটে লেখা হচ্ছিল, জনাব হাবিব হাসান, আপনি এমপি নির্বাচিত হওয়ার পর মাত্র কয়েক মাসেই উত্তরায় দুই ডজনেরও বেশি সাংবাদিক নিগৃহীত হয়েছে, মামলার শিকার হয়েছে অন্তত ১৫ জন। অথচ প্রয়াত সাহারা খাতুন টানা দশ বছরের এমপিত্বকালেও এত সাংবাদিক নীপিড়ন নির্যাতনের নজির নেই। সম্মানিত এমপি সাহেব, সাংবাদিকদের প্রতি অমনোযোগিতা নাকি সাইজ করার গোপন নির্দেশনায় এতো এতো নির্যাতন বাড়ছে তা বিনয়ের সঙ্গে জানতে চাই। এটাও বলতাম, মাননীয় সংসদ সদস্য হাবিব হাসান, আপনি এমপি নির্বাচিত হওয়ার পর থেকেই নিজেকে স্বচ্ছতার পরিপূর্ণ কাতারে নিয়ে গেছেন, বদলে গেছেন আমূল। অপরাধী সহচররা পর্যন্ত আপনার কাছে ঘেষতে পারে না এখন…সেসব খবরও কিন্তু সংবাদ কর্মিদের মাধ্যমে জেনেই আমরা আশ্বস্ত হই, আপনার অজান্তেই প্রশংসা করি। আপনার মৌলিক প্রশংসাসূচক সত্য তথ্য জানানো সেই সংবাদ কর্মিরাই থাকে অবহেলায়, অবজ্ঞায় তা শুনলে কেমন লাগে বলতে পারেন? বলতে চেয়েছিলাম আরো আরো…. ক্ষোভ, প্রতিবাদ আর সর্বশেষ ভালবাসার সম্মানও।
সাঈদুর রহমান রিমন
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.
Asian News 24 BD