নিজেস্ব প্রতিবেদক : সরকারের অন্যতম আয়ের খাত দেশের বিদ্যুৎ বিভাগ। এ বিভাগের উন্নয়নের লক্ষে বিদ্যুতের প্রিপেইড মিটার স্থাপনে জোরালো পদক্ষেপ নিয়েছে সরকার। এতদিন ঢিমেতালে হলেও এখন জোরতালে কাজ করছে। বিদ্যুৎ বিভাগ মনে করছে- বিদ্যুতের চুরি, সিস্টেম লস, বিল বকেয়া পড়ে থাকার সংকট থেকে রেহাই এবং গ্রাহক হয়রানি দূর, বিদ্যুতের অপচয়রোধে প্রিপেইড মিটার একটি কার্যকর প্রক্রিয়া। ফলে দ্রুত প্রিপেইড মিটারের আওতায় দেশের সব বিদ্যুৎ গ্রাহককে আনতে চায় সরকার।
বিদ্যুৎ বিভাগ সূত্রে জানা যায়, বর্তমানে দেশে বিদ্যুৎ গ্রাহক প্রায় চার কোটি। এ পর্যন্ত ছয়টি বিদ্যুৎ বিতরণ কোম্পানি ৩৮ লাখ ৭২ হাজার গ্রাহককে প্রিপেইড মিটারে সংযুক্ত করতে পেরেছে। ২০২০-২১ অর্থবছরে আরও প্রিপেইড মিটার স্থাপন করা হয়েছে ৫ লাখ ৩২ হাজার ৭১৫টি। ২০১৬-১৭ থেকে ২০২০-২১ অর্থবছর পর্যন্ত প্রিপেইড মিটার স্থাপনের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছিল ৬৬ লাখ ৬৫ হাজার ৩০টি।
ছয়টি বিদ্যুৎ বিতরণ কোম্পানির মধ্যে গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) ১৩ লাখ ১৯ হাজার ৩৫০টি প্রিপেইড মিটার স্থাপন করে। পিডিবির গ্রাহক এ পর্যন্ত ৩২ লাখ ৫২ হাজার ৩৩৮ জন। বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের (বিআরইবি) গ্রাহক সংখ্যা তিন কোটি।
এ পর্যন্ত সংস্থাটি ১১ লাখ ১০ হাজার ৫০০ গ্রাহককে প্রিপেইড মিটারের আওতায় আনতে পেরেছে। ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির (ডিপিডিসি) গ্রাহক সংখ্যা ১৪ লাখ ১৭ হাজার ২৬১, প্রিপেইডের আওতায় এসেছে ৫২ হাজার ৮৪৪টি; ঢাকা ইলেকট্রিক সাপ্লাই কোম্পানির গ্রাহক ১০ লাখ ৩৪ হাজার ৪২৭, প্রিপেইড ৫ লাখ ৫৫ হাজার ২২৫; ওয়েস্টজোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি (ওজোপাডিকো) গ্রাহক ১২ লাখ ৯৭ হাজার ৮৮, প্রিপেইড হয়েছে ৩ লাখ ৫১ হাজার ৬৯৮; নর্দার্ন ইলেকট্রিক সাপ্লাই কোম্পানির (নেসকো) গ্রাহক ১৬ লাখ ২৭ হাজার ৭৩৭; প্রিপেইড হয়েছে ১৩ হাজার ৪৩৯টি।
ছয়টি বিদ্যুৎ বিতরণ কোম্পানির ৩১ ডিসেম্বর ২০২০ পর্যন্ত গ্রাহক ৩ কোটি ৮৬ লাখ ২৮ হাজার ৮৫১, প্রিপেইড হয়েছে মাত্র ৩৮ লাখ ৭১ হাজার ১২৪টি। এর মধ্যে সিঙ্গেল ফেজ প্রিপেইড মিটার ৩৭ লাখ ১৮ হাজার ৬৫৪, থ্রিফেজ প্রিপেইড মিটার স্থাপন করা হয়েছে ১ লাখ ৫২ হাজার ৪৭০টি।
ডিপিডিসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী বিকাশ দেওয়ান আমাদের সময়কে বলেন, প্রিপেইড মিটার কার্যক্রম আরও দ্রুতগতিতে চলত। কিন্তু মাঝখানে একটি স্বার্থান্বেষী মহল প্রিপেইড মিটারের বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষকে ভুল বোঝানোর চেষ্টা করে। ফলে কোথাও কোথাও প্রিপেইড মিটারের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়। কিন্তু এখন পর্যায়ক্রমে মানুষ প্রিপেইড মিটারের গুরুত্ব বুঝতে পারছে। ফলে প্রিপেইড মিটার স্থাপনে আর সংকট নেই। তিনি বলেন, ডিপিডিসি চলতি অর্থবছরের মধ্যে ৬ লাখ ৮ হাজার গ্রাহককে প্রিপেইড মিটার স্থাপন করে দেওয়ার পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছে।
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.
Asian News 24 BD