অনলাইন ডেস্কঃ দীর্ঘ মন্দা ও করোনা পরিস্থিতির মধ্যেও চলতি বছরে ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছে দেশের শেয়ারবাজার।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) বেঁধে দেওয়া ফ্লোর প্রাইসের (শেয়ারের সর্বনিম্ন দাম) ভিত্তিতে পতনের বৃত্ত থেকে বেরিয়ে এসেছে শেয়ারবাজার। ফলে সম্প্রতি শেয়ারবাজারে সূচক ও লেনদেনে রেকর্ড ছুঁয়েছে। এতে হারানো আস্থা ফিরে পেয়ে নতুন আশায় বুক বাঁধছেন বিনিয়োগকারীরা।
বিনিয়োগকারী ও সংশ্লিষ্টদের মতে, শেয়ারবাজারে ধারাবাহিক পতন রোধে ফ্লোর প্রাইস চালু করার সিদ্ধান্ত আশীর্বাদ স্বরূপ। এমন পরিস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে বিএসইসি ফ্লোর প্রাইস চালুর সিদ্ধান্ত না নিলে, শেয়ারবাজারকে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনা সম্ভব হতো না। বর্তমানে ফ্লোর প্রাইসের ওপর ভিত্তি করেই শেয়ারবাজারে হাজার কোটি টাকার লেনদেন হচ্ছে। ফলে বছরজুড়েই শেয়ারবাজারে বিনিয়োগকারীদের আলোচনার কেন্দ্র বিন্দুতেই ছিল ফ্লোর প্রাইস।
তথ্য মতে, বিগত কয়েক বছরের ন্যায় চলতি বছরের শুরু থেকে ব্যাপক পতন দেখা দেয় দেশের শেয়ারবাজারে। এরপর মার্চের মাঝামাঝি সময়ে এসে যুক্ত হয় বৈশ্বয়িক মহামারি করোনাভাইরাসের প্রভাব। এই অবস্থায় আতঙ্কিত বিনেয়োগকারীদের শেয়ার বিক্রির চাপে দেখা দেয় বড় পতন। এতে টালমাটাল হয়ে উঠে পুরো শেয়ারবাজার।
তীব্র দর পতনে গত ১৮ মার্চ ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৩৬০৩.৯৫ পয়েন্টে নেমে আসে, যা ৭ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন অবস্থান। ওই দিনই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশেই শেয়ার ও ইউনিটের দরপতন রোধে ফ্লোর প্রাইস চালুর উদ্যোগ নেন তৎকালীন বিএসইসির সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক এম খায়রুল হোসেন। আর ১৯ মার্চ থেকে ফ্লোর প্রাইসের ভিত্তিতে শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হয়। তবে ফ্লোর প্রাইস চালুর পর থেকেই অনেক স্টেকহোল্ডার এটা নিয়ে বিরোধীতা করেন। তারা প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে ফ্লোর প্রাইস উঠিয়ে নেওয়ার জন্য বিএসইসির ওপর চাপ সৃষ্টি করেন।
এদিকে, ব্যাংক ঋণ, আমানত ও সঞ্চয়পত্রে সুদের হার কম থাকা, শেয়ার বাজারে ব্যাংকগুলোর বিনিয়োগ বৃদ্ধি, শর্তহীন অপ্রদর্শিত অর্থের বিনিয়োগ এবং বিএসইসির বিভিন্ন ইতিবাচক সিদ্ধান্তে চলতি বছরের জুলায়ের শেষ সপ্তাহ থেকে পতনের বৃত্ত থেকে বেরিয়ে এসেছে দেশের উভয় শেয়ারবাজার। আর আগস্টের প্রথম থেকেই শেয়ারবাজার অনেকটাই স্বাভাবিক হতে শুরু করে। ফ্লোর প্রাইস বহাল রাখার কারণেই প্রায় প্রতিদিনই সূচক ও লেনদেন বাড়ছে। অনেক কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট ফ্লোর প্রাইসের ওপরে উঠে এসেছে। ফলে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে স্বস্তি ফিরে এসেছে।
এ বিষয়ে বিএসইসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম বলেন, ‘যতদিনের জন্য প্রয়োজন, ততদিন শেয়ারের ফ্লোর প্রাইস বহাল থাকবে। এ বিষয়ে কমিশনের আগের অবস্থান এখনও বহাল আছে। শেয়ারবাজারের উন্নয়নে প্রয়োজনীয় সব কিছুই করবে বিএসইসি।’
ফ্লোর প্রাইস নির্ধারণ:
বিভিন্ন শেয়ারের ৫ কার্যদিবসের ওয়েটেড এভারেজ ক্লোজিংপ্রাইসকে (ক্লোজিং মূল্যের ভারিত্ব গড়) ফ্লোর প্রাইস হিসেবে নির্ধারণ করা হয়। ওই নির্দেশনা অনুসারে, কোনো শেয়ারের দাম কোনোভাবেই ফ্লোরপ্রাইসের নিচে নামতে পারবে না।
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.
Asian News 24 BD