asiannews24bd : বাংলাদেশি কর্মী নিয়োগ বন্ধে মালয়েশীয় সরকারের সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে দেশের এই খাতকে সিন্ডিকেটের প্রভাবমুক্ত ও প্রয়োজনীয় সংস্কারের জন্য বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। তা না হলে বাংলাদেশের শ্রমবাজার বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছে দুর্নীতিবিরোধী সংস্থাটি।
‘একটি সংঘবদ্ধ চক্রের অনৈতিক ব্যবসা পরিচালনার কারণে মালয়েশিয়া সরকার বাংলাদেশি শ্রমিক নিয়োগ বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে’গণমাধ্যমে প্রকাশিত এমন সংবাদের সূত্র ধরে আজ রবিবার এক বিবৃতিতে এ আহ্বান জানায় টিআইবি।
আগামী ১ সেপ্টেম্বর থেকে মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশের অভিবাসী কর্মী নিয়োগ বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে সে দেশের সরকার।
বিবৃতিতে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশি অভিবাসী কর্মী নিয়োগ বন্ধের সিদ্ধান্তের সংবাদে আমরা একদিকে গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। অন্যদিকে জনশক্তি রপ্তানিতে একচেটিয়া ও সিন্ডিকেটভিত্তিক অনৈতিক ব্যবসা বন্ধে মালয়েশিয়া সরকারের এ সিদ্ধান্ত ইতিবাচক হিসেবে দেখার জন্য সরকারের কাছে আহ্বান জানাই।’
কর্মী নিয়োগ বন্ধের ঘোষণায় মালয়েশিয়া সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে ইতিবাচক ও অংশগ্রহণমূলক আলোচনার মাধ্যমে পুনরায় অভিবাসী কর্মী পাঠানোর সুষম সুযোগ তৈরির পথ সুগম হয়েছে বলে মনে করে টিআইবি। ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘তবে এটাও পরিষ্কার যে, এ সুযোগ গ্রহণের পূর্বশর্ত হলো পুরো খাতকে সিন্ডিকেটের প্রভাবমুক্ত করা এবং যারা অবৈধ কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত তাদের জবাবদিহি নিশ্চিত করা।’
‘আমরা ব্যবসাটিকে বাংলাদেশের সব এজেন্টদের জন্য খুলে দিতে চাই’- গণমাধ্যমে প্রকাশিত মালয়েশীয় প্রধানমন্ত্রীর এমন বক্তব্যের সূত্র ধরে ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘যে প্রেক্ষাপটে মালয়েশিয়া সরকার বাংলাদেশের অভিবাসী কর্মী নিয়োগ বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে তা শ্রম অভিবাসন প্রক্রিয়ায় সুশাসন নিশ্চিত করার টিআইবির দাবির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ এবং এই সিদ্ধান্তের মাধ্যমে টিআইবির আশঙ্কাই সত্য প্রতীয়মান হলো।
২০১৭ সালের মার্চ মাসে প্রকাশিত টিআইবির একটি গবেষণার কথা উল্লেখ করে বিবৃতিতে বলা হয়, ‘(সেখানে) বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে পরবর্তী সময়ে মালয়েশিয়াসহ অন্যান্য দেশে অভিবাসী কর্মী প্রেরণে একচেটিয়া ব্যবসার মাধ্যমে অতিরিক্ত মুনাফা অর্জন ও গ্রাহকদের শোষণ প্রক্রিয়া রোধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের সুপারিশ করে সরকারকে একটি পলিসি ব্রিফ প্রদান করে টিআইবি। যথাসময়ে সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ নিলে অভিবাসী কর্মী নিয়োগ বন্ধের মতো অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতির সৃষ্টি হতো না।’
ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘মালয়েশিয়া সরকারের সঙ্গে কার্যকর আলোচনার মাধ্যমে স্বল্পতম সময়ের মধ্যে অভিবাসী কর্মী নিয়োগ প্রক্রিয়া সিন্ডিকেটমুক্ত, উন্মুক্ত প্রতিযোগিতামূলক এবং যৌক্তিক ব্যয় নির্ধারণ করে আবার শ্রমিক পাঠাতে বাংলাদেশকেই উদ্যোগী হতে হবে। অন্যথায় বিশাল এই শ্রমবাজার স্থায়ীভাবে বন্ধের ঝুঁকি সৃষ্টি হবে।’
যে সিন্ডিকেটের কারণে বর্তমান অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে তার কর্ণধার ও তাদের প্রভাব সম্পর্কে সরকারের অবগত না থাকার কথা নয়- এমন দাবি করে বিবৃতিতে বলা হয়, ‘অথচ দীর্ঘদিন তারা ধরা-ছোঁয়ার বাইরে থাকতে পেরেছে। সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হাতে এখন সুযোগ এসেছে অভিবাসন খাতকে সিন্ডিকেট ও যোগসাজশের দুর্নীতির গ্রাস থেকে মুক্ত করার।’
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.
Asian News 24 BD