অনলাইন ডেস্ক – ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশ তামাকমুক্ত হবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী সামন্ত লাল সেন।
আজ শুক্রবার (৩১ মে) সকালে রাজধানীর শাহবাগে বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব কনভেনশন হলে ‘বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবস ২০২৪’ উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি একথা জানান।
জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ সেল এ আলোচনা সভার আয়োজন করে।
সামন্ত লাল সেন বলেন, সচেতনতার কোনো বিকল্প নেই। শুধুমাত্র তামাক আইন নয়, সব ক্ষেত্রেই সচেতনতা প্রয়োজন। সবাই প্রধানমন্ত্রীর অঙ্গীকারের সঙ্গে তাল মিলিয়ে প্রতিজ্ঞা করব যে, ২০৪০ সালের মাঝে দেশকে তামাকমুক্ত করব।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, বৈশ্বিক তামাক নিয়ন্ত্রণে আজকের এ দিনটি অনেক গুরুত্বপূর্ণ। ১৯৮৭ সাল থেকে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের সরকার, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এবং তামাক বিরোধী সংগঠনগুলো দিবসটি পালন করে আসছে।
তিনি জানান, তামাক কোম্পানির হস্তক্ষেপ প্রতিহত করি, শিশুদের সুরক্ষা নিশ্চিত করি- এ প্রতিপাদ্য সামনে রেখে অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও তামাকবিরোধী র্যালি, মেলা, আলোচনা সভা, সম্মাননা প্রদান, ক্রোড়পত্র প্রকাশসহ নানা আয়োজন করা হয়েছে।
ধূমপানের প্রত্যক্ষ ক্ষতি উল্লেখ করে সামন্ত লাল সেন বলেন, পরোক্ষ ধূমপানও অধূমপায়ীদের জন্য ক্ষতিকর। ধূমপান ও তামাক সেবনের কারণে হৃদরোগ, স্ট্রোক, ক্যানসার, ডায়াবেটিস, ফুসফুসের দীর্ঘস্থায়ী রোগসহ নানা অসংক্রামক রোগ দেখা দেয়। তামাকের কারণে পৃথিবীতে প্রতি বছর ৮৭ লাখ মানুষ অকালে মারা যায়।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৬ সালে ঢাকায় অনুষ্ঠিত সাউথ এশিয়ান স্পিকার সামিটে ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে তামাকমুক্ত করার যে অভিপ্রায় ব্যক্ত করেছিলেন, তা বাস্তবায়নে জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি প্রনয়ন, জাতীয় তামাক কর নীতি প্রনয়ন ও বিদ্যমান তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধন ও বাস্তবায়ন করার স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় সরকারের অন্যান্য মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সঙ্গে সমন্বয়ের মাধ্যমে কাজ করে যাচ্ছে। তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন বাস্তবায়নে প্রশিক্ষণ, কর্মশালা এবং গণমাধ্যমে প্রচার-প্রচারণা পরিচালনা করা হচ্ছে।
বিদ্যমান তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের দুর্বলতা দূর করে অংশীজনদের মতামতের ভিত্তিতে খসড়া প্রস্তাব চূড়ান্ত করা হয়েছে বলে মন্ত্রী জানান। তামাকের আগ্রাসন থেকে শিশু-কিশোরদের সুরক্ষা দিয়ে তামাকমুক্ত বাংলাদেশ গড়ে তুলতে স্বাস্থ্যমন্ত্রী পরিবার-ভিত্তিক সচেতনতা ও সামাজিক আন্দোলনের ওপর জোর দেন।
আলোচনা সভা শেষে স্বাস্থ্যমন্ত্রী সামন্ত লাল সেন তামাক নিয়ন্ত্রণে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে পুরস্কারপ্রাপ্ত ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের মাঝে তামাক নিয়ন্ত্রণে জাতীয় সম্মাননা স্মারক ২০২৪ তুলে দেন। আলোচনা সভা শেষে মন্ত্রী তামাকবিরোধী মেলার বিভিন্ন স্টল পরিদর্শন করেন এবং তার সুচিন্তিত মতামত দেন।
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব মো. জাহাঙ্গীর আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. জিয়াউদ্দীন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বাংলাদেশ প্রতিনিধি বর্ধন জং রানা, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত ডিজি আহমেদুল কবীর, জাতীয় স্থানীয় সরকার ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক মনোজ কুমার রায় প্রমুখ।