1. [email protected] : Masumasian :
  2. [email protected] : Masum Talukdar : Masum Talukdar
রবিবার, ১০ অগাস্ট ২০২৫, ১১:৫০ অপরাহ্ন
সর্বশষ সংবাদ:

হাসিনা-ইউনূস দ্বন্দ্বে আমি ‘বলির পাঠা’: টিউলিপ

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট এর সময় : রবিবার, ১০ আগস্ট, ২০২৫
  • ১ বার পঠিত হয়েছে
হাসিনা-ইউনূস দ্বন্দ্বে আমি ‘বলির পাঠা’: টিউলিপ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : যুক্তরাজ্যের হ্যাম্পস্টেড ও হাইগেটের এমপি এবং সাবেক সিটি মিনিস্টার টিউলিপ সিদ্দিক দাবি করেছেন, বাংলাদেশের দুর্নীতি মামলায় তিনি ‘রাজনৈতিক দ্বন্দ্বের বলির পাঠা’। তিনি বলেন, এক সপ্তাহ আগে একজন সাংবাদিকের মাধ্যমে তিনি জানতে পারেন যে, বাংলাদেশে তার বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠন করা হয়েছে।

ব্রিটিশ পত্রিকা দ্য গার্ডিয়ানকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেন টিউলিপ।

বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাগনি হিসেবে প্রভাব খাটিয়ে টিউলিপ মায়ের, ভাইয়ের ও বোনের জন্য ঢাকার পূর্বাচলে একটি জমি নিশ্চিত করেছিলেন। তিনি এই অভিযোগকে ‘সম্পূর্ণ হাস্যকর’ বলে মন্তব্য করেন। তার ও আরও ২০ জনের বিরুদ্ধে বিচার শুরুর তারিখ নির্ধারিত হয়েছে ১১ আগস্ট। তিনি ব্যক্তিগতভাবে বা ভিডিও কনফারেন্সে হাজির হবেন কিনা- এ বিষয়ে এখনো সিদ্ধান্ত নেননি।

টিউলিপ সিদ্দিক জানান, তিনি ব্রিটিশ আইনজীবী হুগো কিথ কেসির পরামর্শ নিচ্ছেন। এখনো তিনি কোনো আনুষ্ঠানিক সমন পাননি।

তিনি বলেন, ‘আমি যেন এক ধরনের ‘কাফকায়েস্ক দুঃস্বপ্নে’ আটকে আছি, যেখানে আমাকে বিদেশে বিচারের মুখোমুখি করা হচ্ছে অথচ আমি এখনো জানি না অভিযোগগুলো আসলে কী।’

‘কাফকায়েস্ক দুঃস্বপ্ন’ এমন পরিস্থিতিকে নির্দেশ করে, দুঃস্বপ্নের মতো জটিল, উদ্ভট ও অযৌক্তিক, যা নিপীড়ক আমলাতন্ত্রের সঙ্গে সম্পর্কিত।

বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্যের মধ্যে প্রত্যর্পণ চুক্তি না থাকলেও দোষী সাব্যস্ত হলে বিষয়টি নতুন করে পরীক্ষার মুখে পড়তে পারে।

গত বছরের জুলাইয়ে লেবার পার্টি ক্ষমতায় আসার পর ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের ঘনিষ্ঠ সহযোগী সিদ্দিক অর্থনৈতিক সচিব ও সিটি মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পান। তিনি আর্থিক খাত পর্যালোচনায় সক্রিয়ভাবে কাজ করছিলেন। তবে এসময় পাঁচ হাজার মাইল দূরে বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি দ্রুত বদলাচ্ছিল। ছাত্র নেতৃত্বাধীন গণঅভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার ১৫ বছরের শাসন ক্ষমতা ভেঙে পড়ে। হাজারো মানুষের মৃত্যুর পর তিনি ও তার বোন শেখ রেহানা ভারত পালিয়ে যান।

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের সামরিক অভ্যুত্থানে টিউলিপ সিদ্দিকের নানা ও বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমান প্রায় পুরো পরিবারসহ নিহত হন। সেই ট্র্যাজেডি মাথায় রেখেই এই নারী রাজনীতিক বলেন, ‘আমি আমার খালার পক্ষে সাফাই গাইতে আসিনি। বাংলাদেশের জনগণ যেন প্রয়োজনীয় ন্যায়বিচার পায়, সেটাই চাই।’

টিউলিপের দাবি অনুযায়ী, ২০২৪ সালের শেষ দিকে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ও শেখ হাসিনার ‘রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী’ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের পর থেকেই, বাংলাদেশের রাজনীতি তার জীবনে প্রভাব ফেলতে শুরু করে। অচেনা কিছু ওয়েবসাইটে খবর ছাপা হতে থাকে যে, তিনি রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্প থেকে ৫০০ কোটি ডলার আত্মসাৎ করেছেন।

এ নিয়ে ২০১৩ সালের এক ছবি সামনে আসে, যেখানে মস্কোতে শেখ হাসিনা ও ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে সিদ্দিককে দেখা যায়। সিদ্দিক ব্যাখ্যা দেন, তিনি ও তার বোন কেবল বেড়াতে গিয়েছিলেন ও শেষ দিনে একটি আনুষ্ঠানিক চায়ের দাওয়াতে দুই মিনিটের জন্য পুতিনের সঙ্গে তার দেখা হয়েছিল।

টিউলিপের বিরুদ্ধে আরেকটি অভিযোগ হলো- ২০০৪ সালে লন্ডনের কিংস ক্রস নামক এলাকায় তাকে বিনামূল্যে একটি ফ্ল্যাট দিয়েছিলেন এক ব্যবসায়ী। টিউলিপের খালা শেখ হাসিনার দলের ঘনিষ্ঠ লোকজনের সঙ্গে ওই ব্যবসায়ীর যোগাযোগ ছিল। এ বিষয়ে টিউলিপ সিদ্দিকের দাবি, ওই ব্যক্তি রাজনৈতিকভাবে সক্রিয় নন ও তাকে ভোটও দেননি।

আগের এক সাক্ষাৎকারে ভুলবশত তিনি বলেছিলেন, ফ্ল্যাটটি তার বাবা-মা কিনেছেন, যা নাকি বৃদ্ধ মা-বাবা ‘দুর্বল স্মৃতির’ কারণে হয়েছিল। অর্থাৎ তার মা-বাবা হয়তো কখনো ভুলবশত বলেছিলেন, ফ্ল্যাটটি তারা কিনেছিলেন।

এছাড়া প্রশ্ন ওঠে- কেন তিনি ক্রিকলউডে নিজের বাড়ি থাকা সত্ত্বেও এক বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ডেভেলপারের বাড়িতে থাকছিলেন। সিদ্দিক জানান, নিরাপত্তা হুমকির কারণে তাকে হঠাৎ বাড়ি বদলাতে হয়েছিল ও পরিচিত একজনের কাছ থেকে তিনি ওই বাড়ি ভাড়া নিয়েছিলেন।

বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষের অভিযোগের পর তিনি নিজেই মন্ত্রীদের নৈতিক মানদণ্ডবিষয়ক স্বাধীন উপদেষ্টা স্যার লরি ম্যাগনাসের কাছে নিজেকে উপস্থাপন করেন। দুই সপ্তাহের গভীর তদন্ত শেষে ম্যাগনাস তাকে কোড লঙ্ঘনের অভিযোগ থেকে মুক্ত করেন। তবে ম্যাগনাস বলেন, পারিবারিক সম্পর্কের কারণে সৃষ্ট সুনামের ঝুঁকি সম্পর্কে আরও সচেতন না থাকা দুর্ভাগ্যজনক। টিউলিপ এ বিষয়ে বলেন, ‘আমি জন্মসূত্রে কার ভাগনি, সেটা তো আমার হাতে নেই।’

স্টারমারের সমর্থন থাকা সত্ত্বেও সরকারে বিভ্রান্তি তৈরি না করার জন্য তিনি পদত্যাগ করেন। স্টারমার তাকে ভবিষ্যতে ফেরার ইঙ্গিত দেন। তবে অভিযোগ থামেনি, আর বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষ থেকেও কোনো স্পষ্টতা আসেনি।

বাংলাদেশে প্রতিশ্রুত নির্বাচন এখনো হয়নি। ডোটি চেম্বার্সের আইনজীবীরা আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে জমা দেওয়ার জন্য সহিংসতার প্রমাণ সংগ্রহ করছেন, যার মধ্যে সাংবাদিক, পুলিশ, সংখ্যালঘু ও সাবেক আওয়ামী লীগের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের ওপর হামলার অভিযোগ রয়েছে।

টিউলিপ জানান, তিনি যুক্তরাজ্যে সফরকালে মুহাম্মদ ইউনুসের সঙ্গে দেখা করতে চেয়েছিলেন, কিন্তু বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা তা প্রত্যাখ্যান করেন। এদিকে, যুক্তরাজ্যের অপরাধ দমন সংস্থা শেখ হাসিনা-সংশ্লিষ্ট দুই ব্যক্তির প্রায় ৯ কোটি পাউন্ড মূল্যের সম্পত্তি জব্দ করেছে, যার একটিতে টিউলিপের মা বসবাস করতেন। টিউলিপ বলেন, এর সঙ্গে তার কোনো সম্পর্ক নেই।

শেখ হাসিনার ভাগনি বলেন, ‘সত্যি কথা বলতে, আমি এই ইউনুস-হাসিনা দ্বন্দ্বের বলির পাঠা মাত্র। বাংলাদেশে অবশ্যই কিছু মানুষ ভুল কাজ করেছে ও তাদের শাস্তি পাওয়া উচিত। কিন্তু আমি তাদের কেউ নই।’

দয়া করে পোস্টটি আপনার স্যোসাল মিডিয়া শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো সংবাদ
© All rights reserved © 2019 LatestNews
Theme Customized BY LatestNews