বিনোদন ডেস্ক : গত ১২ ফেব্রুয়ারি হানিয়া আমিরের জন্মদিন ছিল। তবে অবাক করা বিষয়, পাকিস্তানি এই অভিনেত্রী জন্মদিনকে মাসব্যাপী উদযাপন করতে একদম বিরোধী নন। যে কারণে জন্মদিনের উদযাপন তিনি ১২ ফেব্রুয়ারির আগে থেকেই করা শুরু করেছিলেন, এমনকি এর রেশ এখন পর্যন্তও চলছে। তাই বলা যায়, ফেব্রুয়ারি আসলেই হানিয়ার মাস। শুধু টেলিভিশনের পর্দা নয় হানিয়া আমির সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমেও বিভিন্নভাবে প্রতিনিয়ত আমাদের বিনোদন জুগিয়ে চলেছেন। এছাড়াও তার ব্যক্তিগত জীবনের কার্যাবলী, চালচলন, বাচনভঙ্গি ও ব্যক্তিত্বের কারণে হানিয়া আমির পাকিস্তানের জেন জি প্রজন্মের মুখ হয়ে উঠেছেন। আজকের আয়োজনে ‘কাভি মে কাভি তুম’ খ্যাত এই তারকার এমনকিছু উদাহরণ তুলে ধরা হলো-
নেট দুনিয়ায় স্প্যামিংয়ের রানী
ইনস্টাগ্রামে হানিয়া আমিরের পোস্টের সংখ্যা ১২শ এরও বেশি। তবে এই সংখ্যাটা আপনাকে বিভ্রান্ত করতে পারবে না, যদি আপনি জানেন তার পোস্টের ধরন সম্পর্কে। হানিয়ার একটাই কথা—তিনি জীবনের সাধারণ মুহূর্তগুলোকে রোমান্টিকভাবে উপস্থাপন করতে ভালোবাসেন।
অনেক সক্রিয় জেন-জি ব্যবহারকারীর মতো হানিয়া জীবনের ছোট ছোট আনন্দগুলো উদযাপন করতে পছন্দ করেন। তার ইনস্টাগ্রাম ফিডটি বেশ সাধারণ ও সহজাত, যেখানে চকচকে জীবনের পাশাপাশি সাধারণ মুহূর্তও রয়েছে। সেলিব্রিটি জীবনেও হানিয়া তার সাদামাটা ছবি শেয়ার করতে পছন্দ করেন, যেমন বন্ধুর সঙ্গে সময় কাটানো কিংবা একটি নখের ছবি।
হাঁটতে গেলেও ফ্যাশন ছাড়েন না
এই জনপ্রিয় সুন্দরী তারকা আমাদের মনে করিয়ে দেন যে, মজা করার অর্থ কখনো স্টাইল থেকে পিছিয়ে যাওয়া নয়। বিদেশি রাস্তায় যখন তিনি হাঁটেন তার স্ট্রিট স্টাইল লুকগুলো একেবারে নজরকাড়া। শীতকালের ঠান্ডা দিনে তিনি পছন্দ করেন বড় চাঙ্কি কোট পরতে। মাঝেমধ্যে রাস্তায় হাঁটার সময় তিনি রক-সঙ্গীতের টিশার্ট এবং সানগ্লাস পড়ে লুকটাকে একদম পারফেক্ট করে তোলেন। তার বব হেয়ারস্টাইল তো এক কথায় আইকনিক।
স্টোরি শেয়ার করতে কখনো ক্লান্ত হন না
যদিও হানিয়া তার ক্যাপশনে খুব বেশি তথ্য দেয় না, তবে তার ইনস্টাগ্রাম স্টোরিগুলো সবসময় বেশ বিনোদনপূর্ণ। যেমন, জানুয়ারিতে তিনি শেয়ার করেছিলেন ‘একটি অলস মেয়ে’ নামক ইনস্টাগ্রাম রিলস। সেখানে তিনি বলেছিলেন, আমার সব বন্ধুদের সময় আছে, কিন্তু আমি বাড়ি থেকে বের হতে চাই না। তবে হানিয়া কিন্তু ক্যামেরার সামনে হাসতে হাসতে এসব মুহূর্ত উপভোগ করেন।
ক্রস-বর্ডার বন্ধু
হানিয়া আমির ও বলিউডের সঙ্গীতশিল্পী বাদশাহর বন্ধুত্ব এখন অনেকেই জানেন। তিনি চণ্ডীগড়ে গিয়ে বাদশাহর সঙ্গে সময় কাটানোর ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন। তার এই বন্ধুত্ব আরও রঙিন হয় যখন দিলজিত দোসাঞ্জ তাকে তার কনসার্টে স্টেজে ডেকেছিলেন।
জানুয়ারির শেষের দিকে এই তারকা বলিউড অভিনেত্রী রাখি সাওয়ান্তের একটি খোলামেলা ঘোষণা নিয়ে একটি অডিও ভিডিও শেয়ার করেছিলেন, যেখানে রাখি পাকিস্তানি জনপ্রিয় তারকাদের নাচ প্রতিযোগিতার আহ্বান জানাচ্ছিলেন। এটা ছিল স্পষ্টভাবে একটি জেন-জি স্টাইলে বন্ধুত্বপূর্ণ তর্কে অংশগ্রহণ, তবে হানিয়া তার বন্ধুত্ব আরও পরিষ্কার করে রাখিকে ‘আইকন’ বলে অভিহিত করেছেন। এমনকি রাখিও হানিয়ার মায়ায় পড়েছিলেন এবং তিনি পাকিস্তানে এসে হানিয়ার কাছে থাকার ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন।
হানিয়া গত বছর ‘কাভি মে কাভি তুম’ নাটকে শারজিনার চরিত্রে অভিনয় করে পাকিস্তানের বাইরে অনেক ভক্তের হৃদয় জিতেছেন, যা তার ইনস্টাগ্রামে অনুসারীর সংখ্যা ব্যাপকভাবে বাড়িয়েছে।
ইতিবাচক মনোভাব তৈরির সঙ্গী
হানিয়া আমিরের হাস্যরস এবং তার মানসিক স্বাস্থ্য সম্পর্কে সচেতনতা অনেক ভক্তের হৃদয়ে জায়গা করে নিয়েছে। তিনি তার ইনস্টাগ্রাম হাইলাইটে একদম ইতিবাচক বার্তা শেয়ার করেন এবং যা তার অনুসারীদের মনোবল বৃদ্ধি করতে সাহায্য করেন।
এক সাক্ষাতকারে হানিয়া বলেছিলেন, অনেকদিন ধরে আমি আমার চারপাশে এমন একটি কমিউনিটি তৈরি করতে সক্ষম হয়েছি; যারা আমাকে বুঝে এবং এই সত্যটাও বুঝে যে একজন অভিনয়শিল্পীর অভিনয় জগতের বাইরেও একটি জীবন আছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করে যদি আমি ভালো কিছু করতে পারি তাহলে সেটা ভালো।
এই কয়েকটি উদাহরণ তুলে ধরে যে, হানিয়া আমির শুধু একজন সেলিব্রিটি হিসেবে নয় বরং জেন-জি প্রজন্মের প্রতিনিধিত্বও করছেন এবং তাদের জন্য ভালোবাসা, হাস্যরস এবং মানসিক স্বাস্থ্য সম্পর্কে সচেতনতা প্রচার করছেন।