নিউজ ডেস্ক : হাওরে ট্যুরিজম নিয়ন্ত্রণে শিগগিরই সুরক্ষা আদেশ চূড়ান্ত হবে বলে জানিয়েছেন পানি সম্পদ এবং পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।
মঙ্গলবার (৮ জুলাই) সকালে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির শফিকুল কবির মিলনায়তনে ‘হাওরের সংকট ও সম্ভাবনা’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা জানান।
তিনি বলেন, ‘পানি আইন ২০১৩-এর আওতায় হাওরে ট্যুরিজম নিয়ন্ত্রণে শিগগিরই সুরক্ষা আদেশ চূড়ান্ত করা হবে। এরই মধ্যে সুরক্ষা আদেশের খসড়াটা আমরা প্রস্তুত করেছি। এটি চূড়ান্ত করে দিয়ে যাব, যেখানে থাকবে হাওরে পর্যটক গেলে তারা কী করতে পারবেন আর কি করতে পারবেন না।’
সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘হাওরে একই মানুষ প্রতিবার যাবে, কিন্তু অন্য মানুষ যাবে না, তা হতে পারে না। হাওরে হাউসবোটগুলো কোথায় যাবে আর কোথায় যেতে পারবে না, কী কী আদেশ মেনে হাউমবোট চালাতে হবে, সেটা সুরক্ষা আদেশে পরিস্কার বলা থাকবে।’
উপদেষ্টা রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘প্রকৃতিকে দেখার জন্যই তো ট্যুরিজম। প্রাকৃতিক নিসর্গকে আপনাকে উপলব্ধি করতে হবে। আশা করছি, অল্প কিছুদিনের মধ্যে আমরা হাওরের ট্যুরিজমকে একটা কাঠামোর মধ্যে নিয়ে আসতে সক্ষম হব।’
পানিসম্পদ উপদেষ্টা বলেন, ‘হাওর হচ্ছে মিঠা পানির সমুদ্র। এ মিঠা পানির সমুদ্রে যখন বর্ষার আগে দেখা যায় যে সবুজ বোরো ধান হচ্ছে, বোরো ধান কাটার এক সপ্তাহের মধ্যে দেখা যায় যে হাওরে পানি এসে গেছে, পানি আসার পরে দেখা যাবে আবার এখানে ধান রোপণ করা হচ্ছে। এ রকম অনন্য ইকো সিস্টেম আসলে পৃথিবীতে বিরল।’
রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘হাওর মাস্টারপ্ল্যানটা শুরু হয়েছিল ২০০৩ সালে। সাম্প্রতিক সময়ে এই মাস্টার প্ল্যান হালনাগাদকরণের খসড়াটা সরকারের তরফ থেকে চূড়ান্ত করছি।’
তিনি বলেন, ‘এই মাস্টারপ্ল্যানটা আপডেট করার ক্ষেত্রে আমার একটা স্পষ্ট নির্দেশনা ছিল যে হাওর এলাকার স্থানীয় মানুষজনের মতামত নিয়ে এটি হালনাগাদ করতে হবে এবং সেই নিরিখে দিনব্যাপী একটি কর্মশালা হয়েছে হাওরের ওপর এবং ওখানে যে অভিমতগুলো পাওয়া গেছে, সেটি মাস্টার প্ল্যান হালনাগাদকরণে সন্নিবেশ করা হবে।’
‘হালনাগাদকরণের খসড়াটা আমরা ওয়েব সাইটে দিয়ে দেব। এ ছাড়া হাওর নিয়ে আরও যারা কাজ করেন, তাদের মতামত নিয়ে হাওর মাস্টারপ্ল্যান হালনাগাদকরণ চূড়ান্ত করা হবে।’
উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘হাওরগুলোর সীমানা চিহ্নিত করার একটা নির্দেশনা দিয়েছি। কারণ হাওর বলে কিছু আছে, এটা খুব কম জায়গাতেই ল্যান্ড রেকর্ড আছে। সব জায়গাতে আমরা দেখেছি হাওর এলাকায় কিছু খাল,কিছু পুকুর, কিছু নদী আছে, আর বাকিগুলো হচ্ছে ধানী জমি। যেগুলো মানুষের নামেই রেকর্ড করা আছে। অনেক মানুষ হাওরের মালিকানায় যুক্ত, সে জন্য হাওর ব্যবস্থাপনাটা একটু কঠিন হয়ে পড়ে।’
কোন কোন হাওরে গাছ লাগানো উচিত তার একটা তালিকা প্রাথমিকভাবে চূড়ান্ত করা হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘হাওরে গাছ লাগাতে হয় সাধারণত অক্টোবর-নভেম্বর মাসে, যখন পানি নেমে যায়। প্রাথমিকভাবে ৫টা হাওরে বনায়নের কাজ শুরু করা হবে।
রিজওয়ানা বলেন, ‘হাওরে ভাসমান হাসপাতাল দেওয়া যায় কি না- এ বিষয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আমরা কথা বলেছি। আমরা চিন্তা-ভাবনা করছি কীভাবে হাওরে ভাসমান হাসপাতালের মাধ্যমে মানুষকে চিকিৎসাসেবা দেওয়া যায়। বিশেষ করে জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট ফান্ডের মাধ্যমে আমরা হাওরে ভাসমান হাসপাতাল করার চিন্তা করছি।’