নিউজ ডেস্ক : বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, কথিত অল্প সংস্কার আর বেশি সংস্কারের অভিনব শর্তের আবর্তে ঘুরপাক খাচ্ছে আগামী জাতীয় নির্বাচনের ভবিষ্যত। জনগণ বিশ্বাস করতে শুরু করেছে সংস্কার নিয়ে সময়ক্ষেপণের আড়ালে অন্তর্বর্তী সরকারের ভেতরে ও বাইরে কারও কারও মনে হয় ভিন্ন উদ্দেশ্য রয়েছে।
বুধবার ঢাকায় বিএনপির তিন সহযোগী সংগঠনের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত ‘তারুণ্যের সমাবেশে’ ভার্চুয়ালি বক্তব্য দেওয়ার সময় এসব কথা বলেন তারেক রহমান।
তিনি বলেন, সংস্কার ইস্যুর পাশাপাশি সরকারের উচিত জাতীয় নির্বাচনের দৃশ্যমান প্রস্তুতি নেওয়া। আগামী নির্বাচনে জনগণের রায়ে বিএনপি রাষ্ট্র পরিচালনার সুযোগ পেলে দেশ ও জনগণের কল্যাণে দলের কর্মসূচি বাস্তবায়ন করবে। তবে যে কোনো দলের কর্মসূচি বাস্তবায়ন করতে হলে দরকার একটি জবাবদিহিমূলক ও নির্বাচতি সরকার।
তারেক রহমান বলেন, পলাতক স্বৈরাচারের সময় দেখেছি কিভাবে তারা আদালতকে, আদালতের রায়কে অবজ্ঞা করেছে। স্বৈরাচারের পর মানুষ আশা করেছিল আদালতের প্রতি সম্মান দেখাবে। আদালতের রায়ের প্রতি সম্মান না দেখিয়ে ইশরাক হোসেনকে যারা বাধা সৃষ্টি করেছে তাতে স্বৈরাচারের একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি আমরা দেখতে পাচ্ছি। যারা আইনের প্রতি শ্রদ্ধা দেখায় না, যারা আদালতের নির্দেশ অবজ্ঞা করে তাদের কাছ থেকে কতটা সংস্কার আশা করতে পারি? বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।
ঢাকার সমাবেশে দেওয়া বক্তব্য তারেক রহমান বলেছেন, আদালতের রায়ের প্রতি সম্মান না দেখিয়ে যারা ইশরাক হোসেনকে দায়িত্ব পালনে বাধার সৃষ্টি করেছে সেটি সেই স্বৈরাচারের পুনরাবৃত্তির ঘটনাই আমরা দেখতে পাচ্ছি।’
তিনি বলেন, পলাতক স্বৈরাচারের সময় দেখেছি তারা কিভাবে আদালত ও আদালতের রায়কে অবজ্ঞা করেছে। আদালতের রায়ের প্রতি সম্মান না দেখিয়ে যারা বাধা তৈরি করেছে তার মধ্যে স্বৈরাচারের পুনরাবৃত্তি দেখতে পাচ্ছি, বলছিলেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘যারা আইনের প্রতি শ্রদ্ধা দেখায় না, আদালতের নির্দেশ যারা অবজ্ঞা করে তাদের কাছ থেকে কতটা সংস্কার আশা করতে পারি?’
‘পুঁথিগত সংস্কারের চেয়ে ব্যক্তি মানসিকতার সংস্কার জরুরি। ইশরাকের শপথ গ্রহণে বাধা সৃষ্টি করে স্বৈরাচারী মানসিকতার বহিঃপ্রকাশ দেখতে পাচ্ছি, বলছিলেন তিনি।
গত পাঁচই অগাস্ট শেখ হাসিনার সরকার পতনের পর দেশের সব সিটি মেয়রকে অপসারণ করা হয়। এমন অবস্থায় গেল ২৭শে মার্চ ফজলে নূর তাপসকে বিজয়ী ঘোষণার ফল বাতিল করে ইশরাক হোসেনকে ঢাকা দক্ষিণের মেয়র ঘোষণা করেন ঢাকার প্রথম যুগ্ম জেলা জজ ও নির্বাচনি ট্রাইব্যুনাল।
একইদিন ইশরাককে মেয়র ঘোষণা করে দেওয়া রায় ও ডিক্রির বিরুদ্ধে আপিল করতে লিগ্যাল নোটিশ দেন দুই ব্যক্তি। নোটিশে গেজেট প্রকাশ ও ইশরাককে শপথ নেওয়া থেকে বিরত থাকতে বলা হয়।
পরে গত ১৪ই মে বিএনপির এই নেতাকে ঢাকা দক্ষিণের মেয়র হিসেবে শপথ না পড়ানোর নির্দেশনা চেয়ে রিট আবেদনটি করা হয়। ২২শে মে রিট খারিজ করে দিয়েছে হাইকোর্ট।
ঢাকায় বিএনপির তিন সহযোগী সংগঠনের উদ্যোগে অনুষ্টিত ‘তারুণ্যের সমাবেশে’ দেওয়া বক্তব্যের শেষ পর্যায়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান নতুন একটি স্লোগান দিয়েছেন।
তিনি তার বক্তৃতার শেষ পর্যায়ে স্লোগানটি দেয়ার আগে দলীয় নেতাকর্মী ও দেশের মানুষকে এটি শুনতে এবং এরপর স্লোগানটি উচ্চারণের আহ্বান জানান।
‘আপনাদের সামনে একটি ছোট্ট স্লোগান তুলে ধরতে চাই, দয়া করে মন দিয়ে সবাই শুনবেন। প্রথমে আমি স্লোগানটি বলবো, মন দিয়ে শুনবেন। এরপর আমি বলবো তখন আপনার সবাই বলবেন,’ বলছিলেন তিনি।
তিনি এরপর বলেন, ‘দিল্লি নয়, পিন্ডি নয়, নয় অন্য কোনো দেশ… সবার আগে বাংলাদেশ।’ এরপর তিনি সবাইকে এই স্লোগান দেয়ার আহ্বান জানান। এর পর তিনি তার বক্তব্য শেষ করেন।