নিউজ ডেস্ক : বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেছেন, জাতীয় নির্বাচন যত বিলম্বিত হবে দেশের বহুমাত্রিক নিরাপত্তা ঝুঁকিও তত বৃদ্ধি পাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
তিনি বলেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির ক্রমাবনতিতে জনগণের জানমালের নিরাপত্তাহীনতা নতুন উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। দেশজুড়ে মব সন্ত্রাস ছড়িয়ে পড়া নতুন উৎকণ্ঠার জন্ম দিয়েছে। সরকারের অকার্যকারিতায় সামাজিক নৈরাজ্য দ্রুত রাজনৈতিক নৈরাজ্যের পথে বাঁক নিচ্ছে। সংস্কার ও নির্বাচনকে ঝুলিয়ে দিতে নানা অপতৎপরতা চলছে।পরিকল্পিতভাবে এসব ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে কিনা- তা খতিয়ে দেখা দরকার।
বুধবার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সংহতি মিলনায়তনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সাইফুল হক এসব কথা বলেন।
সংবাদ সম্মেলনে সাইফুল হক বলেন, আগামী বছরের ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানে বোঝাপড়ার সংবাদে রাজনৈতিক দলসহ জনগণের মধ্যে এক ধরনের স্বস্তি দেখা গেছে। সরকারের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর মনস্তাত্ত্বিক দূরত্বও খানিকটা কমেছে বলে ধারণা করা যায়।কিন্তু সরকারের প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের বৈঠকের পর প্রধান নির্বাচন কমিশনার নির্বাচনের সম্ভাব্য তফশিল নিয়ে কোনো কথা বলতে পারেননি। এই পরিস্থিতি কাঙ্ক্ষিত নয়।নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট তফশিল মোটামুটি নির্বাচনের ৬০ দিন আগে ঘোষণা করার বিধান থাকলেও নির্বাচন কমিশনের দিক থেকে মধ্য ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন অনুষ্ঠানের ব্যাপারে দেশবাসীকে আশ্বস্ত করা দরকার ছিল। আশা করি, নির্বাচন কমিশন এই সম্পর্কে নির্দিষ্টভাবে কথা বলবে।
তিনি বলেন, গত একমাসে জাতীয় নির্বাচন নিয়ে নতুন করে আবার উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকারের নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবিটাই অবান্তর। এটা অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্বও নয়।গত ১৬ বছর দেশের মানুষ নিশ্চয় স্থানীয় সরকারের নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলন করেনি।
সাইফুল হক বলেন, বাংলাদেশের সমাজ ও রাজনৈতিক দলগুলোতে এখনো পর্যন্ত রাজনৈতিক ও মনস্তাত্ত্বিক দিক থেকে এখনো পিআর পদ্ধতিতে ভোটের জন্য প্রস্তুত হতে পারেনি।এ কারণে এবার কেবল আমরা সংসদের উচ্চকক্ষ পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবি জানিয়ে আসছি।
তিনি বলেন, ফ্যাসিবাদী জমানায় সংঘটিত হত্যাকাণ্ডের বিচার ও সংস্কারের প্রক্রিয়া জোরদার করার ব্যাপারে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্য রয়েছে।নির্বাচনের আগে বিচারের উদ্যোগকে দেশবাসী দৃশ্যমান দেখতে চায়। আর সাংবিধানিক সংস্কার ছাড়া মতৈক্যের ভিত্তিতে বাকি সংস্কার সরকার নির্বাহী আদেশে এখনই সম্পন্ন করতে পারে।তবে সাংবিধানিক সংস্কারের জন্য নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি ও সংসদের প্রয়োজন হবে, যাতে জনসম্মতির ভিত্তিতে তা সংবিধানে যুক্ত হতে পারে। আশা করি এই জুলাই মাসের মধ্যে আমরা এই লক্ষ্যে জাতীয় সনদ স্বাক্ষর করতে পারব।
সাইফুল হক এই পরিস্থিতি উত্তরণে রাজনৈতিক দল ও সংশ্লিষ্ট সবাইকে আস্থায় নিতে সরকারের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানান।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি জুলাই-আগস্ট ছাত্র-শ্রমিক-জনতার অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তীতে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির ২১ দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন পার্টির রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য আকবর খান, মীর মোফাজ্জল হোসেন মোশতাক, সাইফুল ইসলাম, ফিরোজ আলী, কেন্দ্রীয় সংগঠক বাবর চৌধুরী, জামিরুল রহমান ডালিম প্রমুখ।