স্পোর্টস ডেস্ক : নানান কল্পনা-জল্পনা শেষে রোববার ভোর থেকে যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতে পর্দা উঠতে যাচ্ছে ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপে ২১তম আসর। টুর্নামেন্টে অংশ দিতে ইতিমধ্যে দলগুলো যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমাতে শুরু করেছে। উদ্বোধনী ম্যাচে মাঠে নামবে স্বাগতিক লিওলেন মেসির ক্লাব ইন্টার মায়ামি ও মিশরের ক্লাব আল আহলি। সবশেষ ২০২৩ সালে সাত দল নিয়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে এই টুর্নামেন্টের।
প্রথমবারের মতো ৩২ দল নিয়ে আয়োজন করা হচ্ছে ক্লাব বিশ্বকাপ। যেখানে খেলবে রিয়াল মাদ্রিদ, ইন্টার মিলান, বায়ার্ন মিউনিখ, পিএসজির মতো ইউরোপের শক্তিশালী দলগুলো। তবে টুর্নামেন্টে খেলার যোগ্যতা অর্জন করতে পারেনি বার্সেলোনা, এসি মিলান, লিভারপুলের মতো ক্লাবগুলো। যার কারণে এই টুর্নামেন্টের জনপ্রিয়তায় কিছুটা ভাটা পড়েছে বলে মনে করছেন অনেকে।
যদিও ক্লাব বিশ্বকাপের খেলার যোগ্যতা অর্জনের আলাদা কোনো বাছাই পরীক্ষা হতে হয় না ক্লাবগুলোকে। ২০২১ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে মহাদেশীয় চ্যাম্পিয়ন ও র্যাংকিংয়ে ওপরে থাকা ক্লাবগুলো অর্জন করেছে টুর্নামেন্টটিতে খেলার টিকিট। প্রতিটি লিগ থেকে দুটি ক্লাব খেলবে এবারের আসর। যেখানে ইউরোপের সর্বোচ্চ ১২টি ক্লাব অংশগ্রহণ করছে। এছাড়াও দক্ষিণ আমেরিকার ছয়টি ক্লাব, উত্তর ও মধ্য আমেরিকা, এশিয়া ও আফ্রিকা থেকে চারটি করে ক্লাব অংশ নিচ্ছে। সবশেষ ওশেনিয়ার একটি ক্লাব ও স্বাগতিক দল হিসেবে যুক্ত হয়েছে ইন্টার মিয়ামি ও প্লে-অব বিজয়ী দল লস অ্যাঞ্জেলস।
৪৮ দল নিয়ে আগামী বছর যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও মেকিক্সোতে অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপ ফুটবল। এছাড়াও ২০৩১ সালে নারী বিশ্বকাপে শিরোপার জন্য লড়াই করবে ৪৮টি দল। বিশ্বকাপের মতো ক্লাব বিশ্বকাপও চার বছর পরপর আয়োজন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্বফুটবল নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফিফা। সেই হিসেবে আগামী ২০২৯ সালে অনুষ্ঠিত হবে ক্লাব বিশ্বকাপের ২১ তম আসর। সামঞ্জস্য বজায় রাখতে সেই আসরে ৪৮ দল নিয়ে টুর্নামেন্ট আয়োজনের পরিকল্পনা চলছে। যেখানে চ্যাম্পিয়ন দল ১ বিলিয়ন ডলার পুরস্কার পারে। যেখানে এবারে আসরের চ্যাম্পিয়ন দল পাবে ১২৫.৮ মিলিয়ন ডলার। যা সর্বশেষ চ্যাম্পিয়ন লিগ জেতা পিএসজির প্রাপ্ত অর্থের চেয়ে প্রায় ২৫ মিলিয়ন পাউন্ড কম। ফিফার তরফ থেকে বলা হয়েছে, এই বিষয়ে এখনো গভীর আলোচনা হয়নি। আসর শেষে ক্লাব বিশ্বকাপের ফরম্যাট ও কাঠামো সম্পর্কে সকল স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
গেল সপ্তাহে অ্যাথলেটিককে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ফিফার সাধারণ সম্পাদক ম্যাটিয়াস গ্রাফস্ট্রোম বলেছিলেন ২০২৯ সালের আসর নিয়ে বড় পরিকল্পনা করছেন তারা। তিনি বলেন, ‘ভবিষ্যতের জন্য আমরা ফরম্যাট এবং অন্য বিষয়গুলো নিয়ে খুব খোলামেলাভাবে ক্লাব এবং কনফেডারেশনগুলোর সঙ্গে আলোচনা করবো। ভবিষ্যতে এই টুর্নামেন্ট আরো জনপ্রিয়তা লাভ করবে তা আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি।’
এছাড়াও ইউরোপের ক্লাবগুলোর দ্বারায় ক্লাব বিশ্বকাপ ভবিষ্যতে আরও সমাদৃত হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ক্লাবগুলোর বাণিজ্যিক শক্তি এবং বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয়তা কাজে লাগিয়ে আগামীতে একটি বৃহত্তর টুর্নামেন্ট আয়োজন করতে চায় ফিফা। যদিও ইতিমধ্যে আন্তর্জাতিক খেলোয়াড় ইউনিয়ন ফিফপ্রো সম্প্রসারণের বিরোধিতা করেছে। ইউরোপা লীগ ইউরোপীয় কমিশনের কাছে একটি অভিযোগ দায়ের করেছে।
যেখানে টুর্নামেন্টের সময়সূচি নিয়ে তাদের সঙ্গে পরামর্শ না করার অভিযোগ করেছে। সেখানে ফিফাকে ‘ক্ষমতার অপব্যবহার’ করার অভিযোগ করা হয়েছে। তবে ফিফা এমন অভিযোগ অস্বীকার করেছে এবং সংস্থাটির তরফ থেকে বল হয়েছে, কিছু লীগ বাণিজ্যিক স্বার্থপরতা এবং ভিত্তিহীন অভিযোগ করেছে। অভিযোগটি তদন্ত করা হবে কিনা এই বিষয়ে ইউরোপীয় কমিশন এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি।