নিউজ ডেস্ক : বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) সঙ্গে বৈঠক করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা। শনিবার (২৬ অক্টোবর) বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয়ে এই বৈঠক হয়। বৈঠক শেষে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেছেন, নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত করার জন্য বিএনপির সঙ্গে রাষ্ট্রপতির অপসারণ, দ্বিতীয় প্রজাতন্ত্র ও জাতীয় ঐক্য নিয়ে আলোচনা হয়েছে। তারা দলীয় ফোরামে কথা বলে সিদ্ধান্ত জানাবেন।
তিনি বলেন, রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের অপসারণ নিয়ে জামায়াত ও ইসলামী আন্দোলন একমত পোষণ করেছে। সবাই জাতীয় ঐক্যের ভিত্তিতে সবাই রাষ্ট্রপতির অপসারণ চায়। আগামীকাল গণতন্ত্র মঞ্চ ও ১২ দলীয় জোটের সঙ্গে বৈঠক হবে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, গত ২৩ অক্টোবর আমরা জাতীয় ঐক্যের ডাক দিয়েছিলাম। ফ্যাসিবাদ বিলুপ্তের আরেকটি বাধা হিসেবে আমাদের সামনে এখন এসে দাঁড়িয়েছে রাষ্ট্রপতিকে অপসারণ।
হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, আমাদের নতুন যে রাজনৈতিক বন্দোবস্ত তা নিয়ে দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করছি। আজকে বিএনপির সঙ্গে আলোচনা করেছি। সেখানে ৩টি বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছি। প্রথমটি হচ্ছে- সেকেন্ড রিপাবলিক কীভাবে গঠন করা যায় এবং ঘোষণা দেব তা নিয়ে আলোচনা করেছি। দ্বিতীয়ত, রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনকে কীভাবে দ্রুততম সময়ে অপসারণ করা যায় এবং কীভাবে রাজনৈতিক সংকট দূর করা যায়- তা নিয়ে কথা বলেছি। তৃতীয়ত, জাতীয় ঐক্যকে ধরে রেখে কীভাবে সরকার পরিচালনা করা যায় তা নিয়ে কথা বলেছি।
তিনি বলেন, বিএনপির আমাদের সব কথা শুনেছে। তারা জানিয়েছেন আমাদের বার্তা নিয়ে দলীয় ফোরামে আলোচনা করবে পরে তাদের সিদ্ধান্ত জানাবে। জামায়াতের সঙ্গে বৈঠকে রাষ্ট্রপতি অপসারণ ইস্যুতে তারা একমত পোষণ করেছেন বলেও জানান হাসনাত। তিনি বলেন, একই ইস্যুতে আমরা ইসলামী আন্দোলনের সঙ্গে বৈঠক করেছি। তারাও নৈতিকতার জায়গা থেকে রাষ্ট্রপতিকে অপসারণ চায়।
নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক নাসির উদ্দিন পাটোয়ারি বলেন, ‘চুপ্পু মাস্ট বি গোন’। আমরা টাইম ফ্রেম বেধে দিচ্ছি না। ছাত্র নেতারা গত দুইদিনে জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী আন্দোলন, বাংলাদেশ এই দুইটি রাজনৈতিক দলের সাথে বৈঠক করেছে।
প্রসঙ্গত, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটির পক্ষ থেকে রাষ্ট্রপতির পদচ্যুতির দাবি তোলার পর ২৩ অক্টোবর সালাহউদ্দিন আহমেদসহ বিএনপির শীর্ষ পর্যায়ের তিনজন নেতা প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে দেখা করে এ মুহূর্তে কোনো সাংবিধানিক সংকট সৃষ্টি না করার কথা বলেছিলেন। দলটি মনে করে, এ মুহূর্তে রাষ্ট্রপতির পদে শূন্যতা হলে সাংবিধানিক ও রাজনৈতিক সংকট দেখা দেবে, সেটা বিএনপি চায় না।
এরপরই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটির পক্ষ থেকে রাষ্ট্রপতির পদচ্যুতির বিষয়ে জাতীয় ঐক্য তৈরির জন্য রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার উদ্যোগ নেয়া হয়। এর অংশ হিসেবে গত বৃহস্পতিবার রাতে বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন আহমেদের বাসায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটির প্রতিনিধিদের বৈঠক হয়। সেই বৈঠকে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীও যোগ দেন। আন্দোলনের ছাত্র নেতৃত্ব ও নাগরিক কমিটি তাদের দাবিতে অনড় থেকে রাষ্ট্রপতির পদ থেকে মো. সাহাবুদ্দিনকে সরানোর ব্যাপারে অন্তর্বর্তী সরকারের ওপর চাপ বাড়াতে চাইছে।