অনলাইন ডেস্ক – ভারতের প্রধানমন্ত্রী পদে তৃতীয়বারের মতো শপথ নিতে চলেছেন নরেন্দ্র মোদি। স্থানীয় সময় রোববার সন্ধ্যা সোয়া ৭টায় রাষ্ট্রপতি ভবনে শুরু হবে শপথ অনুষ্ঠান। শপথ পাঠের আগেই এদিন নতুন মন্ত্রিসভার সদস্য এবং সংসদ সদস্যদের সঙ্গে দেখা করেছেন মোদি।
রাজনাথ সিং এবং নীতিন গড়করিসহ মোদির তৃতীয় মেয়াদের মন্ত্রিসভায় যারা ঠাঁই পেতে চলেছেন, কেন্দ্রীয় জোট নেতৃত্বের তরফে তারা ইতোমধ্যেই ফোন পেতে শুরু করেছেন।
আজ রোববার নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে মন্ত্রিসভার সদস্য হিসেবে যারা শপথ নেবেন- তাদের এদিন সকাল সাড়ে ১১টায় মোদির বাসভবনে চা চক্রে আমন্ত্রণ জানানো হয়। এই তালিকায় পশ্চিমবঙ্গ থেকে রয়েছে বড় চমক। মন্ত্রিত্ব পেতে চলেছেন পশ্চিমবঙ্গ বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। মন্ত্রিত্বের তালিকায় থাকছেন শান্তনু ঠাকুরও।
ভারতীয় গণমাধ্যম সূত্রের খবর, এক ডজনেরও বেশি বিজেপি সংসদ সদস্যের নাম রয়েছে নতুন মন্ত্রী পরিষদের তালিকায়। আরও ডজন খানেক রয়েছেন জোটের তরফ থেকে। যদিও এদিনের বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন অধিকাংশ নেতারা, যাদের প্রায় সবারই মন্ত্রিসভায় স্থান পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
আজকের সভায় ছিলেন নির্মলা সীতারমনও। ভারতীয় গণমাধ্যম সূত্রের খবর, লক্ষ্ণৌ লোকসভা আসন থেকে বিজয়ী প্রবীণ বিজেপি নেতা রাজনাথ সিং কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষামন্ত্রীর পদে অব্যাহত থাকতে পারেন।
আগের মন্ত্রিসভার ১০ জন মন্ত্রীর পুনরাভিষেক হবে বলেই ইঙ্গিত রয়েছে। এই তালিকায় অমিত শাহ, রাজনাথ সিং, নীতিন গড়করি, এস জয়শঙ্কর, নির্মলা সীতারমন, ধর্মেন্দ্র প্রধান, পীযূষ গোয়েল, হরদীপ সিং পুরী এবং অশ্বিনী বৈষ্ণব কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হিসেবে থাকতে পারেন তৃতীয়বারেও। তবে সম্ভবত অনুরাগ ঠাকুরকে বাদ দেওয়া হতে পারে।
এদিন মোদির সঙ্গে বৈঠকের জন্য যেসব সংসদ সদস্যের কাছে ফোন গেছে, একনজরে দেখে নেওয়া যাক তাদের নামের তালিকা।
রাজনাথ সিং- বিজেপি
নীতিন গড়করি- বিজেপি
অর্জুন রাম মেঘওয়াল- বিজেপি
চিরাগ পাসওয়ান- এলজেপি
এইচডি কুমারস্বামী- জেডি (এস)
সর্বানন্দ সোনোয়াল- বিজেপি
প্রহ্লাদ জোশি- বিজেপি
শিবরাজ সিং চৌহান- বিজেপি
চন্দ্রশেখর পেমমাসানি- টিডিপি
রাম মোহন নাইডু কিঞ্জরাপু- টিডিপি
রামনাথ ঠাকুর- জেডি (ইউ)
লালন সিং- জেডি (ইউ)
প্রতাপ রাও যাদব- শিবসেনা
কে আন্নামালাই- বিজেপি
অমিত শাহ- বিজেপি
জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া- বিজেপি
এমএল খট্টর- বিজেপি
চন্দ্রশেখর চৌধুরি- এজেএসইউ
জয়ন্ত চৌধুরি- আরজেডি
মনসুখ মান্ডাভিয়া- বিজেপি
অশ্বিনী বৈষ্ণব- বিজেপি
পিযূষ গোয়েল- বিজেপি
কিরেণ রিজিজু- বিজেপি
রক্ষা খাডসে- বিজেপি
কমলজিৎ সেহরাওয়াত- বিজেপি
রাও ইন্দ্রজিৎ সিং- বিজেপি
রামদাস আটওয়ালে- রিপাবলিকান পার্টি অফ ইন্ডিয়া
জিতন রাম মাঞ্জি- হিন্দুস্তানি আওয়াম মোর্চা
গিরিরাজ সিং- বিজেপি
বান্দি সঞ্জয়- বিজেপি
সুরেশ গোপী- বিজেপি
জি কিষাণ রেড্ডি- বিজেপি
শোভা করন্দলাজে- বিজেপি
হর্ষ মালহোত্রা- বিজেপি
এস জয়শঙ্কর- বিজেপি
অন্নপূর্ণা দেবি- বিজেপি
অজয় তমতা- বিজেপি
মনসুখ মান্ডাভিয়া- বিজেপি
হরদীপ সিং পুরি- বিজেপি
অনুপ্রিয়া প্যাটেল- আপন দল (সোনিলাল)
হর্ষ মালহোত্রা- বিজেপি
ভগীরথ চৌধুরি- বিজেপি
রবনীত সিং বিট্টু- বিজেপি
বিএল ভার্মা- বিজেপি
জিতিন প্রসাদ- বিজেপি
পঙ্কজ চৌধুরি- বিজেপি
সি আর পাতিল- বিজেপি
এর আগে, গত মঙ্গলবার ভারতের ৫৪৩টি আসনের লোকসভা নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে। তাতে বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ জোট পেয়েছে ২৯২টি আসন। বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’ পেয়েছে ২৩৩টি। অন্যান্য দলের প্রাপ্ত আসনসংখ্যা ১৮টি।
তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হল- এনডিএ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেলেও ২০১৪ এবং ২০১৯-এর মতো এবার আর এককভাবে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি বিজেপি। কারণ ৫৪৫ আসনের (দুটি মনোনীত আসনসহ) লোকসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতার জন্য প্রয়োজন ২৭৩টি আসন। সেখানে বিজেপি এককভাবে পেয়েছে ২৪০টি। তাই সরকার গঠন করতে তাদের শরিক দলগুলোর ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে।
এই পরিস্থিতিতে বুধ ও শুক্রবার দফায় দফায় এনডিএ শরিকদের নিয়ে দিল্লিতে বৈঠকে বসেন মোদি-অমিত শাহরা। শুক্রবারই এনডিএ-র বৈঠকে সর্বসম্মতিক্রমে নরেন্দ্র মোদিকে সংসদীয় দলনেতা নির্বাচিত করা হয়। এরপরেই রাষ্ট্রপতি ভবনে গিয়ে রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর কাছে তৃতীয়বারের মতো সরকার গঠনের অনুমতি চান মোদি।
তথ্যসূত্র- জিনিউজ।