নিউজ ডেস্ক : টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে সাবেক কাউন্সিলর সালেহা বেগমের বাড়িতে মাদকবিরোধী অভিযানের নামে প্রায় সাড়ে ৮ লাখ লুটের ঘটনায় জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কর্মরত ডিবি হারুনের ভাইসহ তিন কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
সোমবার রাতে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক হাসান মারুফ স্বাক্ষরিত অফিসে আদেশে এ তথ্য জানানো হয়।
সাময়িক বরখাস্তকৃতরা হলেন- টাঙ্গাইল জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের পরিদর্শক সিরাজুল ইসলাম, সহকারী উপ-পরিদর্শক মোস্তাফিজুর রহমান ও মোহাম্মদ জিয়াউর রহমান। মোহাম্মদ জিয়াউর রহমান আলোচিত সমালোচিত ডিবি হারুনের ছোট ভাই।
মঙ্গলবার বিকেলে জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আবুল হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এদিকে অভিযানে নেতৃত্ব দেওয়া মূল অভিযুক্ত শামীম আল আজাদকে বরখাস্ত না করায় বাদী সাবেক কাউন্সিলর সালেহা বেগমসহ স্থানীয়রা ক্ষোভ প্রকাশ করেছে।
এছাড়াও শামীম আল মামুনকে জেলা মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর থেকে টাঙ্গাইল আদালতে সংযুক্ত করা হয়েছে। তবে সেখানে যোগদান না করায় কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছেন জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক।
অধিদপ্তরের মহাপরিচালক হাসান মারুফের স্বাক্ষরিত অফিসে আদেশে বলা হয়, সালেহা বেগমের বাড়ি থেকে টাকা আত্মসাতের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তাদের প্রধান কার্যালয়ে সংযুক্তপূর্বক সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮ এর ধারা ১২ এর উপধারা ১ মোতাবেক সরকারি চাকরি থেকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হলো। মঙ্গলবার দুপুরের মধ্যে তাদের প্রধান কার্যালয়ে যোগদান করার আদেশ করা হয়েছে।
সাবেক কাউন্সিলর সালেহা বেগম অভিযান পরিচালনাকারী কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, জেলা প্রশাসন, উপজেলা প্রশাসন ও থানায় লিখিত অভিযোগ করেন।
অভিযোগে তিনি বলেন, গত ১৮ জুন সকালে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের লোকজন প্রথমে আমার বাড়িতে অভিযান পরিচালনা করে কোনো মাদকদ্রব্য না পেয়ে তাদের গাড়ির তেল খরচের জন্য ২০ হাজার টাকা দাবি করেন। তখন আমি তাদের ১০ হাজার টাকা দেই। পরবর্তীতে তারা আমাকে বাকি ১০ হাজার ঢাকা মোবাইল ফোনের মাধ্যমে পাঠিয়ে দিতে বলে চলে যান। কিছুক্ষণ পরে তারা পুনরায় আমার ঘরে প্রবেশ করে আসবাবপত্র এলোমেলো করতে থাকেন। পরে প্রায় তিন ঘণ্টার অধিক সময় নাটকীয়ভাবে অভিযান চালিয়ে ১০ বোতল ফেনসিডিল উদ্ধার দেখানো হয়। একপর্যায়ে তারা ঘরের আলমারির তালা খুলে সেখানে থাকা নগদ ৬ লাখ ৬৬ হাজার টাকা নেন। আমার ছেলের ঘরে প্রবেশ করে ঘরের আসবাবপত্র এলোমেলো করে ও ঘরের আলমারির ড্রয়ারে থাকা নগদ ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা নেন। টাকা নেওয়ার কারণ জানতে চাইলে আমাকে ও আমার ছেলের স্ত্রীকে বিভিন্ন ভয়ভীতি ও হুমকি দেন। পরে জবানবন্দি ভিডিও রেকর্ড করা হয়।
জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আবুল হোসেন বলেন, অভিযোগ পাওয়ার পরেই তদন্তকারী কর্মকর্তারা তদন্ত করে। তদন্তে প্রাথমিক সত্যতা পাওয়ায় তাদের সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। এছাড়াও তাদের বিরুদ্ধে দোষী প্রমাণিত হলে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।