আন্তর্জাতিক ডেস্ক : মন্দির পরিচালনাকে কেন্দ্র করে ১২টি পরিবার সামাজিক বয়কটের শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। হালদার পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, প্রায় ১০ থেকে ১২ দিন ধরে তারা বাজার-হাটে দুধ, সবজি, মাছ এমনকি নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রীও পাচ্ছেন না। গ্রামের কেউ তাদের সঙ্গে লেনদেন করছেন না, বন্ধ হয়ে গেছে শিশুদের প্রাইভেট টিউশনও। বাধাপ্রাপ্ত হচ্ছে চাষাবাদ।
ঘটনাটি ভারতের পশ্চিমবঙ্গের হুগলির তারকেশ্বরের তেঘরি গ্রামের।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, হালদার পরিবারের মোট ১২টি ঘরে প্রায় ৬০ জন সদস্য রয়েছেন পুরুষ, মহিলা, শিশু ও বৃদ্ধ মিলিয়ে। তারা জানিয়েছেন, একঘরে হয়ে গ্রামের ভেতরে কার্যত বিচ্ছিন্ন অবস্থায় দিন কাটাতে হচ্ছে।
হালদার পরিবার দাবি করেছে, তারা দীর্ঘ প্রায় ৩০০ বছর ধরে বংশ পরম্পরায় গ্রামের রক্ষাকালী মন্দিরের সেবাইত হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন।
তবে ছয় বছর আগে গ্রামেরই কয়েকজন সেই মন্দিরের দখল নেন। এই নিয়ে আদালতে মামলা হলে কলকাতা হাইকোর্ট হালদার পরিবারের পক্ষেই রায় দেন বলে জানিয়েছে ভারতীয় গণমাধ্যম।
কিন্তু অভিযোগ, সেই রায় মানতে অস্বীকার করে এখনো মন্দির দখল করে রেখেছেন স্থানীয় কয়েকজন তৃণমূল ঘনিষ্ঠ ব্যক্তি। শুধু তাই নয়, তাদের পক্ষ থেকে হালদার পরিবারকে সামাজিকভাবে একঘরে করে দেওয়ার ঘোষণাও করা হয়েছে বলে দাবি করেছেন ক্ষতিগ্রস্তরা।
হালদার পরিবার জানিয়েছে, তারা বিষয়টি স্থানীয় প্রশাসন, থানাসহ বিভিন্ন জায়গায় জানিয়েও এখনও কার্যকর কোনো পদক্ষেপ পাননি।
এই বিষয়ে তারকেশ্বরের তৃণমূল বিধায়ক রামেন্দু সিংহরায় জানিয়েছেন, বিষয়টি আগে জানা ছিল না। তিনি বলেন, ‘ব্লক সভাপতিকে ওই পরিবারগুলোর সঙ্গে দেখা করতে বলেছি। সামাজিক বয়কট মেনে নেওয়া যায় না। তৃণমূলের কেউ জড়িত থাকলে, সেটিও খতিয়ে দেখা হবে।’
এদিকে, বিজেপির আরামবাগ সাংগঠনিক জেলা সভাপতি সুশান্ত বেরা ঘটনাটির নিন্দা করে বলেন, ‘এমন জঘন্য কাজ তৃণমূলই করতে পারে। প্রশাসন দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে আমরা রাস্তায় নামতে বাধ্য হব।’
পুলিশ জানিয়েছে, অভিযোগ সম্পর্কে তারা অবগত এবং বিষয়টি তদন্ত করে দেখছে।
তেঘরি গ্রামে বর্তমানে হালদার পরিবারের সদস্যরা বাকি গ্রামের কাছ থেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছেন। সামাজিক বয়কটের এই অভিযোগ প্রশাসন ও রাজনৈতিক মহলে নাড়া দিলেও এখন পর্যন্ত এর নিরসনে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে কিনা, তা স্পষ্ট নয়।