সোনালী ব্যাংকের পাথরঘাটা শাখায় ক্যাশ অফিসার পদে ২০১৫ সালের ৫ জুলাই যোগদান করেন সোহাগ সমদ্দার। তিনি এই চাকরি পেয়েছিলেন মুক্তিযোদ্ধা কোটায়। পরে জানা যায়, সোহাগ সমদ্দার তার বাবা নিত্যানন্দ সমদ্দারের নামে যে মুক্তিযোদ্ধা সার্টিফিকেট দাখিল করেছিলেন তা ভুয়া।
সার্টিফিকেটেটি ভুয়া প্রমাণিত হলে ২০১৯ সালের ১০ জানুয়ারি তাকে চাকরিচ্যুত করা হয়। ততদিনে সোনালী ব্যাংকে সোহাগ সমাদ্দারের চাকরির বয়স পেরিয়ে যায় সাড়ে ৩ বছর। এই সময় তিনি বেতন বাবদ তুলে নেন প্রায় ২৮ লাখ টাকা। নিত্যানন্দ সমদ্দার এর ছেলে সোহাগ সমদ্দার বাড়ি পাথরঘাটা উপজেলার কাঁঠালতলী ইউনিয়নের তালুকের চরদুয়ানী গ্রামে।
এই টাকা ফেরত পেতে মামলা করেছে ব্যাংক। সোনালী ব্যাংক পাথরঘাটা শাখার ব্যবস্থাপক মো. আবদুল জলিল জানান, সোনালী ব্যাংকের চাকুরির বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী বিধি মোতাবেক আবেদন করে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় অফিসার (ক্যাশ) পদে নির্বাচিত হয়ে সোহাগ সমদ্দার। তার বিরুদ্ধে প্রাপ্ত অভিযোগ যাচাই বাছাই করে দেখা যায় তার পিতার দাখিল করা মুক্তিযোদ্ধার সনদ ভুয়া। দাখিল করা একটি সাময়িক সনদে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের স্বাক্ষর রয়েছে। ২০০৬ সালের ১ জুন সনদ ইস্যূ করা হয়েছে। (যার স্মারক মু ব ম/সা/বরগুনা/প্র-৩/৪৭/২০০২/২১২৭ তাং ০১.০৬.২০০৬)।
মুক্তিযোদ্ধা সংসদ পাথরঘাটা উপজেলা কমান্ডের সাবেক ডেপুটি কমান্ডার এমএ খালেক বলেন, ‘উপজেলায় মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা বর্তমানে ২০৫ জন। তবে নিত্যানন্দ সমদ্দার নামে কোন মুক্তি যোদ্ধা পাথরঘাটা উপজেলায় নেই বা ছিলনা।’
পাথরঘাটা সার্টিফিকেট অফিসার ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার এর অফিস সূত্রে জানা গেছে গত ৫ সেপ্টেম্বর সরকারি অর্থ আদায়ের জন্য ১৯১৩ সালের সরকারি পাওনা আদায়ের আইন মোতাবেক মামলা রুজু হলে সোহাগ সমাদ্দারকে ২৭ লাখ ৮৪ হাজার ৪৯ টাকা ফেরত দেওয়ার জন্য নেটিশ দেওয়া হয়। সোনালী ব্যাংকের উক্ত পাওনা টাকার মধ্যে বেতন,নববর্ষ ভাতা, উৎসব ভাতা,উৎসাহ বোনাস,কোভিড ভাতা, যাতায়াত, লাঞ্চ/রিফ্রেশমেন্ট এবং অন্যান্য বিষয় উল্লেখ আছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও সার্টিফিকেট অফিসার মো. রোকনুজ্জামান বলেন, সরকারি পাওনা পুনরুদ্ধার করতে প্রয়োজনে মালক্রোক বা সম্পত্তি নিলামে বিক্রী করে আদায় করা হবে।