নিউজ ডেস্ক : শুনতে পাচ্ছি, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে পালিয়ে যাওয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ফেরত দেবে না বলে রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভারত, বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা মাহফুজ আলম।
রোববার (২৯ ডিসেম্বর) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ‘নতুন বাংলাদেশ গঠন: সংস্কার ও পররাষ্ট্র নীতি’ শীর্ষক সংলাপে তিনি সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।
উপদেষ্টা মাহফুজ বলেন, আমরা শুনতে পাচ্ছি, ভারত একটি রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে তারা ফেরত দেবে না। কিন্তু রাষ্ট্রের জায়গা থেকে আমাদের যেটি দরকার সেটি হচ্ছে বাস্তবধর্মী পদক্ষেপ। কোন ধরনের হঠকারিতা আমরা করতে পারি না। আমাদের রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্ব, আমাদের জাতীয় নিরাপত্তা, আমাদের অখণ্ডতা–এই জিনিসগুলো আমাদের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। আমরা কীভাবে শক্তি বৃদ্ধি করতে পারি সেদিকে মনোযোগ দিতে চাই।
তিনি বলেন, কোন রাষ্ট্র কি করলো সেটির থেকে বেশি গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে আমাদের সক্ষমতা বাড়ানো এবং সেখান থেকে দর কষাকষির ক্ষমতা বাড়ানো। বাংলাদেশ যদি সক্ষমতা বাড়াতে পারে তবে, দর কষাকষির ক্ষমতা বাড়বে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে। আর এটা আমাদের জনগণকে উপকৃত করবে।
তিনি আরো বলেন পররাষ্ট্র নীতি প্রণয়নের সময়ে সবদলের রাজনৈতিক ঐকমত্য প্রয়োজন। আমাদের একটি বৃহৎ সংলাপ দরকার সব ধরনের রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে। আমাদের দরকার হচ্ছে সবাইকে নিয়ে বাংলাদেশে একটি জাতীয় ঐকমত্যের দিকে আগানো।পররাষ্ট্র নীতির বিষয়ে ঐকমত্য জাতীয় ঐক্যের জায়গা থেকে হয় এবং সরকার অদল-বদলের ভিত্তিতে কোন রদবদল না হয়। বরং বাস্তবতার ভীত্তিতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় যেন বাংলাদেশকে বিশ্ব মঞ্চে উপস্থাপন করে এবং আমরা যেন বাংলাদেশকে একটি মর্যাদাময় একটি জায়গায় পুরো দুনিয়ার কাছে উপস্থাপন করতে পারি।
আওয়ামী লীগ আমল নিয়ে তিনি বলেন, গত সরকার হঠকারিতা এতো বেশি করেছে যে, একটি নতজানু পররাষ্ট্র নীতি নিয়েছিলো। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আগে যে জায়গায় ছিল এটা দলীয়করণ হয়ে গিয়েছিল এবং বিভিন্ন দলের উপস্থাপন ফুটে উঠেছিল। আমরা চাই, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বাংলাদেশকে উপস্থাপন করবে। কোনো দলের হয়ে নয় বরং বাংলাদেশকে উপস্থাপন করুক। এটাই হচ্ছে, আমাদের জন্য এখন বড় বিষয়।
মাহফুজ আলম বলেন, ‘সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারো সঙ্গে বৈরিতা নয়’– এটি আমাদের মটো আকারে ছিলো। এটি খুব বেশি পরিবর্তন হয়নি। আমরা চাই সবার সঙ্গে বাস্তবধর্মী সম্পর্ক, সব দেশের সঙ্গে। এখানে রোমাঞ্চ বা হঠকারিতার জায়গা নেই।
আমাদের পররাষ্ট্রনীতি কেমন হওয়া উচিত, মধ্যপ্রাচ্য থেকে শুরু করে ভারত, চীন, মিয়ানমার বিভিন্ন রাষ্ট্রের সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ কেমন হওয়া উচিত, এটা নিয়ে আমরা আলোচনা করেছি। এ পর্যায়ে এসে আমরা রাষ্ট্রের কিছু সংস্কারের প্রস্তাবনা এবং পদক্ষেপ নিয়েছি। এগুলো আসলে কীভাবে টেকসই করা যায় এবং এই সময়ে সংস্কারগুলোকে কীভাবে দৃশ্যমান করা যায়। সেক্ষত্রে আমাদের মতামত হিসেবে বলেছি, আমাদের একটা বিস্তৃত পরামর্শ দরকার। রাজনৈতিক দলসহ সব সংশ্লিষ্টদের নিয়ে, বলে জানান মাহফুজ আলম বলেন।