বাংলাদেশ বর্ডার গার্ডের (বিজিবি) সদস্যদের চেইন অব কমান্ড মেনে চলার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, শৃঙ্খলা এবং চেইন অব কমান্ড, এটি শৃঙ্খলা বাহিনীর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ চালিকাশক্তি। কখনও শৃঙ্খলায় ব্যাঘাত ঘটাবেন না। সবাই চেইন অব কমান্ড মেনে চলবেন। সোমবার (৪ মার্চ) সকালে বিজিবি দিবস উপলক্ষ্যে বাহিনীটির সদর দফতর পিলখানায় এক অনুষ্ঠানে এ আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।
এসময় প্রধানমন্ত্রী বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনা স্মরণ করে নিহতদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন। শেখ হাসিনা বলেন, এখানে (পিলখানা) এলেই মনটা ভারি হয়ে যায়। ২০০৯ সাল, কেবল আমরা সরকার গঠন করেছি। ২৪ ফেব্রুয়ারি আমি এখানে প্যারেডে এসে অফিসারদের সাথে বসে কথা বলি। অত্যন্ত মেধাবি সব অফিসাররা ছিল তখন। তবে দুর্ভাগ্যের বিষয় ২৫ ও ২৬ তারিখ ঘটে এক অঘটন, সেই বিদ্রোহের ফলে এই বাহিনীর ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তাসহ সাধারণ মিলে ৭৪ জন প্রাণ হারান। এই বাহিনীর মহাপরিচালকসহ যারা প্রাণ হারিয়েছে তাদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করি।
বিদ্রোহে স্বজনহারাদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, স্বজন হারানোর বেদনা যে কী কঠিন সেটি আমার চেয়ে বোধহয় বেশি আর কেউ উপলব্ধি করতে পারে না। তবে যারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে তাদেরকে বিচারের আওতায় আনা হয়েছে। এ ধরনের ঘটনা যেন আর না ঘটে।
বিজিবি দেশের সীমান্ত নিরাপত্তার পাশাপাশি সীমান্তের সব অপরাধ দমনে কাজ করে উল্লেখ করে সরকারপ্রধান বলেন, দেশের সীমান্তের নিরাপত্তার দায়িত্ব বিজিবির উপর। এর পাশাপাশি চোরাচালান, মাদক চালান, শিশু পাচারসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কাজ বিজিবি অত্যন্ত দায়িত্বের সাথে প্রতিরোধ করে থাকে। দেশমাতৃকা রক্ষায় দায়িত্বের সাথে কাজ করে এ বাহিনী। বিজিবি হবে স্মার্ট বাহিনী। এই বাহিনীকে আধুনিক করে গড়ে তুলতে কাজ করছে সরকার।
অনুষ্ঠানে রোহিঙ্গা সমস্যা নিয়েও কথা বলেন প্রধামন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, মানবিক কারণে রোহিঙ্গাদের আমরা আশ্রয় দিয়েছি। মিয়ানমারের সাথে আলোচনা চলছে, যাতে আমরা এ অবস্থা থেকে দ্রুত পরিত্রাণ পেতে পারি এবং শরণার্থীদের নিজ দেশে ফেরত পাঠাতে পারি। আমরা প্রতিবেশিদের সাথে ঝগড়া করতে যাইনি। সেজন্য আলোচনার মাধ্যমে এ সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করে যাচ্ছি।
এর আগে, প্রধানমন্ত্রী বিজিবি দিবসের কুচকাওয়াজ পরিদর্শন করেন। পরে বিজিবিতে বীরত্বপূর্ণ ও কৃতিত্বপূর্ণ কাজের জন্য ৭২ জনকে পদক প্রদান করেন।