আন্তর্জাতিক ডেস্ক : থাইল্যান্ডের নতুন মন্ত্রিসভার সদস্য হিসেবে শপথ নিয়েছেন দেশটির বরখাস্ত হওয়া প্রধানমন্ত্রী পেতাংতার্ন সিনাওয়াত্রা। এতে দেশটির মন্ত্রিসভার বৈঠকে অংশ নেওয়ার সুযোগ তৈরি হয়েছে তার জন্য। যদিও নিজের অসদাচরণ নিয়ে সাংবিধানিক আদালতের পর্যালোচনার অপেক্ষায় রয়েছেন দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশটির এই রাজনীতিবিদ।
স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) ব্যাংককে তেরো সদস্যের থাইল্যান্ডের নতুন মন্ত্রিসভার শপথ হয়েছে। গত মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে থাইল্যান্ডের সিনাওয়াত্রা পরিবারের এই সদস্যকে। একইদিন নতুন মন্ত্রিসভার অনুমোদন দিয়েছেন থাই রাজা। এতে পেতাংতার্ন সিনাওয়াত্রাকে সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রী হিসেবে দেখা গেছে।
শপথ অনুষ্ঠানে মন্ত্রিসভার অন্য সদস্যদের সঙ্গে যখন সরকারি ভবনে আসেন পেতাংতার্ন, তখন তাকে খুব হাসিখুশি অবস্থায় দেখা গেছে। এ সময়ে সাংবাদিকদের কোনো প্রশ্ন নেননি তিনি। নতুন মন্ত্রিসভার নেতৃত্ব দেন ভারপ্রাপ্ত প্রধানমন্ত্রী সুরিয়া জুংরুংগ্রেয়াংকিত।
পেতাংতার্ন সিনাওয়াত্রার কাছ থেকে প্রধানমন্ত্রীত্বের কর্তৃত্ব কেড়ে নেওয়ার কয়েক ঘণ্টা আগে মন্ত্রিসভায় এই রদবদল হয়েছে। সম্প্রতি থাইল্যান্ডের রক্ষণশীল ভুমজাথাই পার্টি ক্ষমতাসীন জোট থেকে বেরিয়ে গেছে। এখন ক্ষমতা ধরে রাখতে ছোট ছোট দলগুলোর কাছ থেকে সমর্থন আদায়ে মরিয়া ক্ষমতাসীন জোট।
দেশটিতে নতুন করে রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে আসন্ন বাজেটসহ গুরুত্বপূর্ণ আইন প্রণয়নে সরকারের দক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। সেনাবাহিনীর অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হয়েছিলেন পেতাংতার্নের বাবা থাকসিন সিনাওয়াত্রা।
গেল মাসে কম্বোডিয়ার সাবেক নেতা হুন সেনের সঙ্গে পেতাংতার্নের ফোনালাপের পর সাম্প্রতিক রাজনৈতিক এই অস্থিতিশীলতা তৈরি হয়েছে। এতে তারা দুই দেশের মধ্যকার বিতর্কিত সীমান্ত নিয়ে আলোচনা করেন। ওই ফোনকল ফাঁস হওয়ার পরে পেতাংতার্নের বিরুদ্ধে ব্যাপক ক্ষোভ তৈরি হয়েছে, তার জনপ্রিয়তায়ও ধস নেমেছে।
ব্যাংককভিত্তিক অর্থনীতিবিদ টিম লিলাহাফান বলেন, ‘ফেউ থাই পার্টির নেতৃত্বাধীন জোটের ঐক্য নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। আসছে দিনগুলোতে রাজনৈতিক অস্থিরতা বাড়তে পারে। এরসঙ্গে যোগ হয়েছে থাই-কম্বোডিয়ার মধ্যকার সীমান্ত উত্তেজনা। এতে সামরিক বাহিনী ক্ষমতা নিয়ে নিতে পারে বলেও উদ্বেগ তৈরি হয়েছে।’
পেতাংতার্ন সিনাওয়াত্রার বিরুদ্ধে অভিযোগের জবাব দিতে ১ জুলাই থেকে ১৫ দিনের সময় দেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার দিন শেষে বিশেষ মন্ত্রিসভার বৈঠকে সভাপতিত্ব করতে পারেন ভারপ্রাপ্ত প্রধানমন্ত্রী সুরিয়া জুংরুংগ্রেয়াংকিত।