আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ২০২৩ সালে ‘শারভি’ নামের এক নারীকে ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠিয়েছিলেন ৮০ বছরের বৃদ্ধ। প্রথমে রিকোয়েস্ট গ্রহণ না করলেও কয়েক দিন পর ‘শারভি’র অ্যাকাউন্ট থেকেই ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠানো হয়। এরপরই শুরু হয় প্রেমের কথাবার্তা। পরে তা ফেসবুক থেকে গড়ায় হোয়াটসঅ্যাপে। আর এখানেই ধীরে ধীরে প্রতারণার ফাঁদে পা দিয়ে প্রায় ৯ কোটি রুপি হারান ওই বৃদ্ধ। সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে এ খবর জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, কথাবার্তার এক পর্যায়ে ‘শারভি’ ওই বৃদ্ধকে জানান, তিনি স্বামীর কাছ থেকে আলাদা হয়ে সন্তানদের সঙ্গে থাকেন। এরপর ধীরে ধীরে সন্তানদের অসুস্থতাসহ নানান অজুহাতে টাকা চাইতে থাকেন।
কিছুদিন পর ‘কবিতা’ নামে আরেক নারী ওই বৃদ্ধের সাথে হোয়াটসঅ্যাপে যোগাযোগ শুরু করেন। নিজেকে ‘শারভি’র পরিচিত দাবি করে তিনি বন্ধুত্বের প্রস্তাব দেন এবং অশালীন বার্তা পাঠানোর পাশাপাশি টাকা চাইতে থাকেন।
এরপর একই বছরের ডিসেম্বরে ‘দিনাজ’ নামের আরেক নারী নিজেকে ‘শারভি’র বোন পরিচয় দিয়ে জানান, ‘শারভি’ মারা গেছেন এবং হাসপাতালের বিল পরিশোধের জন্য টাকাও চান। ‘শারভি’ ও বৃদ্ধের মধ্যে হওয়া হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাটের স্ক্রিনশট পাঠিয়ে তাকে চাপে রাখেন ‘দিনাজ’।
এরপর ‘দিনাজ’র বন্ধু পরিচয়ে ‘জেসমিন’ নামের আরেক নারী বৃদ্ধের সঙ্গে যোগাযোগ করেন এবং সাহায্যের অনুরোধ করেন। ওই বৃদ্ধ তাকেও টাকা পাঠান।
২০২৩ সালের এপ্রিল থেকে ২০২৫ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত সেই বৃদ্ধ ৭৩৪টি লেনদেনে মোট ৮.৭ কোটি রুপি পাঠিয়েছেন। সমস্ত সঞ্চয় শেষ হয়ে গেলে তিনি পুত্রবধূর কাছ থেকে ২ লাখ রুপি ধার নেন। তবুও দাবির শেষ হয়নি। পরে ছেলের কাছে ৫ লাখ রুপি চান। এখানেই সন্দেহ হয় ছেলের। জানতে চাইলে বৃদ্ধ পুরো ঘটনা খুলে বলেন।
এর মধ্যেই প্রতারিত হওয়ার বিষয়টি বুঝতে পেরে ওই বৃদ্ধ মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং হাসপাতালে ভর্তি হন। সেখানে তার ডিমেনশিয়া ধরা পড়ে। পরে এ ঘটনায় গত ২২ জুলাই সাইবার ক্রাইম সেলে অভিযোগ দায়ের করা হয়। পুলিশ প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে, চার নারীর পরিচয় আসলে এক ব্যক্তিরই সৃষ্ট চরিত্র।