আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ভারতে এক মানবসম্পদ (এইচআর) কর্মকর্তার লিংকডইন পোস্ট ঘিরে তোলপাড় শুরু হয়েছে। পোস্টে তিনি জানান, সদ্য নিয়োগপ্রাপ্ত এক কর্মী বেতন পাওয়ার মাত্র পাঁচ মিনিট পরই পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন। সকাল ১০টায় তার বেতন অ্যাকাউন্টে জমা হয়, আর ১০টা ৫ মিনিটেই ইমেইলে পদত্যাগপত্র আসে। খবর ভারতীয় গণমাধ্যম।
পোস্টে এইচআর লেখেন, সকাল ১০টায় অ্যাকাউন্টে প্রথম মাসের বেতন পাঠানো হয়। সকাল ১০টা ৫ মিনিটে ইমেলে আসে পদত্যাগ। একজন নতুন কর্মীকে ইন্টারভিউয়ের পর সংস্থায় জয়েনিং করানো, প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্য এইচআর ও ট্রেনিং টিম তাদের সময় ও এনার্জি খরচ করেছিল। তাই এইভাবে একজনের পদত্যাগে তারা প্রত্যেকেই হতাশ, একথাও উল্লেখ করেছেন তিনি।
পোস্টে তিনি প্রশ্ন তুলেছেন, পেশাগত নীতিশাস্ত্র নিয়ে। লেখেন, কোম্পানি আপনাকে স্বাগত জানিয়েছে, বিশ্বাস করেছে, উন্নতির সুযোগ দিয়েছে। আর আপনি, প্রথম বেতন হাতে আসার পাঁচ মিনিট পরই চলে গেলেন। এটা কি ন্যায্য? এটা কি নৈতিক?’
ওই এইচআর জানিয়েছেন, শেষ মুহূর্তের পদত্যাগ অনেক সময় উদ্দেশ্যের অভাব, পরিণত মনোভাবের ঘাটতি ও দায়িত্বহীনতার ইঙ্গিত দেয়। তিনি খোলামেলা যোগাযোগের গুরুত্বের ওপর জোর দিয়েছেন। তিনি লেখেন, যদি কিছু ঠিক না লাগে, আপনি কথা বলতে পারতেন, পরিষ্কার ধারণা চাইতে পারতেন, সাহায্য চাইতে পারতেন। সচেতনভাবে সবটা হত, সুবিধামতো নয়।
তার মতে, সবকাজেই চ্যালেঞ্জ থাকে আর প্রকৃত উন্নতি কেবল বেতন পাওয়ার মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, কেবল প্রয়োজন ধৈর্য, অঙ্গীকার ও পরিশ্রম। কোনো কাজ সহজ নয়। উন্নতি আসে অধ্যাবসায়ের মাধ্যমে, প্রথম বেতনের মাধ্যমে নয়, লিখেছেন তিনি।
পোস্টের শেষে তিনি পেশাজীবীদের নিজের ক্যারিয়ার সিদ্ধান্তের দায় নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি আরও লেখেন, সংস্কৃতি বা কাজের অসামঞ্জস্যের দোষ দেওয়ার আগে থামুন, ভাবুন, কথা বলুন। কারণ, আপনার পেশাদারিত্ব আপনার পদবি দিয়ে নয়, আপনার কাজের মাধ্যমে বিচার হয়।
লিংকডিনের এই পোস্টটি দ্রুত সবার নজর পড়ে যায়, অনেকেই নিজেদের মতামত জানান। একজন লেখেন, ওই কর্মী চাকরি ছেড়ে ভুল কিছু করেননি। কিন্তু একজন এইচআর হিসেবে এই ধরনের বিষয় সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট করা উচিত নয়। এতে আপনার অপরিণত মনোভাব প্রকাশ পায়।
আরও একজন কর্মীর পক্ষ নিয়ে মন্তব্য করেছেন, নীতিশাস্ত্র? বেতন তো কাজের বিনিময়ে দেওয়া হয়, দান হিসেবে নয়, আগামও নয়। কেউ বেতন পাওয়ার পর পদত্যাগ করেছেন মানে, ওই মাসের দায়িত্ব সে পূরণ করেছে। তাছাড়া বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই নোটিস পিরিয়ড থাকে, তাই কোম্পানি হঠাৎ বিপদে পড়ে না। যদি কোম্পানি আজীবন আনুগত্য চায়, তাহলে তাদের অফার লেটারের বদলে বিয়ের চুক্তিপত্র দেওয়া উচিত।
তৃতীয় একজন লেখেন, এটা দুই দিকেই কাজ করে, কিন্তু ভারসাম্য নেই। কর্মী যদি এমন করে, কোম্পানি সচরাচর ধসে পড়ে না। কিন্তু কোম্পানি যদি কর্মীর সঙ্গে এমন করে, অনেক সময় পুরো পরিবার রাস্তায় চলে আসে। দয়া করে বিষয়টা মাথায় রাখুন।