নিউজ ডেস্ক : পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মো. তৌফিক হাসান জানিয়েছেন, আগামী ডিসেম্বরে ঢাকায় বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে পররাষ্ট্রসচিব পর্যায়ের বৈঠক হতে যাচ্ছে। বৈঠকে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেশে ফেরানো নিয়ে আলোচনার সুযোগ থাকবে।
বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাপ্তাহিক মিডিয়া ব্রিফিংয়ে এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন মুখপাত্র।
তৌফিক হাসান বলেন, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে গতকাল এ সংক্রান্ত একটি আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠক হয়েছে। ডিসেম্বরে এফওসি হবে এটুকু জানা গেছে। কিন্তু চূড়ান্ত তারিখ কূটনৈতিক পর্যায়ে আলোচনা চলছে। আমরা মনে করছি যে, এ এফওসিটা হওয়ার মাধ্যমে আমাদের দুদেশের সম্পর্কে গতিশীলতা পাবে।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেশে ফেরানো নিয়ে এফওসিতে আলোচনার বিষয়ে মুখপাত্র বলেন, সামনে এফওসি যেটা সেখানে এটা আলোচনা করার অবকাশ থাকবে। তখন হয়তো পরিষ্কার হবে আমরা আসলে কী চাই।
শেখ হাসিনাকে ফেরানো নিয়ে প্রত্যর্পণ চুক্তির প্রশ্নে তৌফিক হাসান বলেন, সেটা এ মুহূর্তে বলা যাচ্ছে না। মাত্র একটা আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠক হয়েছে। এখনও অনেক সময় আছে।
শেখ হাসিনাকে ফেরানো নিয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কোনো অনুরোধ পেয়েছে কিনা- জানতে চাইলে মুখপাত্র বলেন, এটা একটা রাজনৈতিক বিষয়। কাজেই সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে যখন আমাদের নির্দেশনা দেওয়া হবে আমরা তখনই কাজ করবো। আমরা আসলে আনুষ্ঠানিকভাবে এখনও কোনো অনুরোধ পাইনি। আমরা পত্রিকার মাধ্যমে দেখেছি, ইন্টারপোলের মাধ্যমে যোগাযোগ করা হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, যেহেতু এটা পররাষ্ট্র সম্পর্কিত বিষয় সেহেতু এটা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে যাওয়া ভালো। তবে আমরা কিন্তু এখনও কোনো নির্দেশনা পাইনি। যথাযথ ব্যবস্থার বিষয়ে মুখপাত্র বলেন, আনুষ্ঠানিকভাবে আমরা ভারতীয় কর্তৃপক্ষকে জানাবো।
এফওসিতে আলোচনার বিষয়ে মুখপাত্র বলেন, কী বিষয়ে আলোচনা হবে এটা দুদেশ মিলে ঠিক করবে। সাধারণত যেটা হয় সব বিষয় নিয়ে এখানে আলোচনা হয়। এ মুহূর্তে ঠিক বলা যাচ্ছে না ঠিক কোন বিষয়ে আলোচনা হবে। আশা করি আলোচনায় সব বিষয় স্থান পাবে। ভিসা নিয়ে যে সমস্যা তৈরি হয়েছে সেটা নিয়ে আমরা আলোচনা করার সুযোগ পাবো। যাতে অচিরেই এ ভিসা সমস্যা সমাধানে তারা প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করে।
ঢাকায় বৈঠক করার বিষয়ে উভয়পক্ষের সম্মতিতে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলেও জানান তৌফিক হাসান।
ভারতীয় গণমাধ্যমে বাংলাদেশ নিয়ে অপপ্রচারে সরকারের উদ্যোগ নিয়ে মুখপাত্র বলেন, ভারতে বিভিন্ন গণমাধ্যমে বাংলাদেশ নিয়ে যে অপপ্রচার চলছে সেটি আমরা বাংলাদেশে অবস্থিত ভারতীয় হাইকমিশনকে বিভিন্ন সময়ে জানিয়েছি। আমরা ভারতীয় কর্তৃপক্ষকে এটি জানিয়েছি যে, আমাদের দুদেশের পারস্পরিক যে সম্পর্ক রয়েছে তার পরিপ্রেক্ষিতে এ ধরনের বাংলাদেশ নিয়ে অপপ্রচার মোটেই কাম্য নয়।
ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের চুক্তি ও সমঝোতা পুনর্বিবেচনার বিষয়টি সময়সাপেক্ষ ব্যাপার বলেও জানান মুখপাত্র। তিনি বলেন, ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে যেসব অ্যাগ্রিমেন্ট ও এমওইউ সই হয়েছে সেগুলো বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের আওতাভুক্ত। সে কারণে সবার সঙ্গে আলোচনা করে এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়া দরকার। যেটা একটু সময়সাপেক্ষ ব্যাপার।
তৌফিক হাসান বলেন, গত ১০০ দিনে হয়তো এ ব্যাপারে অগ্রগতি সীমিত। কিন্তু আশা করছি, আগামী দিনগুলোতে এ ব্যাপারে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হওয়ার অবকাশ রয়েছে।