নিউজ ডেস্ক : বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীকে দাঁড়িপাল্লা প্রতীকসহ নিবন্ধন ফিরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
বুধবার (৪ জুন) বিকেলে নির্বাচন কমিশনার আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ নির্বাচন ভবনে ষষ্ঠ কমিশন বৈঠকের পর সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
জামায়াতের নিবন্ধন ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য আদালতের আদেশের বিষয়ে তিনি বলেন, প্রতীকের বিষয়টি আমরা বিবেচনায় নিয়ে নিয়েছি। একই প্রজ্ঞাপনে ২০০৮ সালে দলটিকে প্রতীকসহ নিবন্ধন দেওয়া হয়েছে। এছাড়া প্রতীক কোনো দলকে দিলে সেটি সেই দলের জন্য সংরক্ষিত থাকে আরপিও অনুযায়ী। দলটি প্রতীকসহ নিবন্ধন পাবে।
তিনি আরও বলেন, ডিএসসিসি নির্বাচন নিয়ে আপিল বিভাগের পর্যবেক্ষণ বিশদভাবে দেখেছি। আমরা রেফারেন্সগুলোও দেখেছি। আমরা মনে করি গেজেট প্রকাশ করার মধ্যে ইসি তার কাজ সম্পন্ন করেছে।
প্রতীক ও নিবন্ধন নিয়ে ইসির আইনি ব্যাখ্যা
আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ বলেন, গত ১ জুন মহামান্য আপিল বিভাগ ২০১৩ সালের হাইকোর্টের একটি রায়ের মাধ্যমে দলটির নিবন্ধন যে বাতিল করেছিল, সেটাকে পূর্বাপর অবস্থায় ফিরিয়ে দেওয়ার নির্দেশনা দিয়েছেন। আদেশের কপি নির্বাচন কমিশনে পাঠাতে বলেছেন এবং ব্যবস্থা নিতে বলেছেন। যে কারণে আমরা আলোচনা করেছি। অতিসত্বর জামায়াতে ইসলামী নিবন্ধন ফিরে পাবে। পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামী তাদের প্রতিনিধির মাধ্যমে আমাদের কাছে একটি আবেদন করেছে, তারা চান তাদের দাঁড়িপাল্লা যে দলীয় প্রতীকটি ছিল সেটিও যেন ফেরত পান। আমরা এটা নিয়েও বিশদ আলোচনা করেছি।
তিনি বলেন, যে বিষয়টি বিবেচনায় নিয়েছি, ২০১৩ সালে জামায়াতের যে প্রতীকটি ছিল সেটা বিবেচনায় ছিল। নিবন্ধন যেটা দেওয়া হয়েছিল ৫ নভেম্বর ২০০৮ সালে, সেই নিবন্ধন প্রজ্ঞাপনে নিবন্ধনের সঙ্গে সঙ্গে প্রতীক হিসেবে দাঁড়িপাল্লাও দেওয়া হয়েছিল। এছাড়া গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের ৯০ এর (চ)(১) এর ক-তে বলা আছে, কোনো দলকে কোনো প্রতীক দিলে তা সংরক্ষিত রাখতে হবে।
তিনি আরো বলেন, এখন সামনে আসছে যে আদালতের ফুল কোর্ট সভার আদেশে দাঁড়িপাল্লা প্রতীকটি বাতিল করা হয় ২০১৬ সালে। এটি ছিল একটি প্রশাসনিক পত্র, যেটি রেজিস্ট্রারের মাধ্যমে নির্বাচন কমিশন পেয়েছিল এবং ব্যবস্থাটি নিয়েছিল। কিন্তু আমাদের সামনে জামায়াতের ইসলামের আবেদন ছিল, সেখানে একটি রিট পিটিশন এবং একটি আদেশও এসেছে। রিট পিটিশন নম্বর ৩৭৯৭, ২০০৬। দাঁড়িপাল্লা আদালতের ন্যায় বিচারের প্রতীক, তাই যেন এটা দলীয় প্রতীক না হতে পারে এই মর্মে একটি আপিল দাখিল হয়েছিল। সেই আপিল আবেদন মাননীয় আদালত খারিজ করে দেন এবং বলেন, এটি নির্বাচনী প্রতীক হিসেবে ব্যবহার করার কারণে কোনোভাবেই আদালতের মান ক্ষুণ্ন করবে না। এই রায় এখনো বলবৎ আছে। এই সবকিছু বিবেচনায় নিয়ে নির্বাচন কমিশন নীতিগতভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছে জামায়াতে ইসলামের দাঁড়িপাল্লা প্রতীক ফেরত দেওয়া হবে। অর্থাৎ তারা তাদের দলীয় নিবন্ধন ও দলীয় প্রতীক দুটিই ফেরত পাবেন। তবে দলীয় প্রতীকটি যেহেতু আমাদের প্রতীকের তফসিলে আনতে হবে, এটার দাপ্তরিক প্রক্রিয়া আছে। একটু সময় লাগবে। আরেকটা কারণে একটু সময় লাগবে। কারণ আমরা প্রতীকের সংখ্যাটা ৬৯ থেকে ১০০টিতে উন্নীত করব। এমনও হতে পারে নিবন্ধন তাৎক্ষণিকভাবে পাবে। আর এমনও হতে পারে অ্যাজ আ হোল হয়ে আসার পর প্রতীক পাবে।