1. [email protected] : Masumasian :
  2. [email protected] : Masum Talukdar : Masum Talukdar
শুক্রবার, ২১ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০৫:২৯ পূর্বাহ্ন

গাজায় বাড়িঘর ধ্বংস করছে ইসরাইল, স্যাটেলাইট চিত্রে যুদ্ধবিরতির সুস্পষ্ট লঙ্ঘন

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট এর সময় : সোমবার, ১৭ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫
  • ১৩ বার পঠিত হয়েছে
গাজায় বাড়িঘর ধ্বংস করছে ইসরাইল, স্যাটেলাইট চিত্রে যুদ্ধবিরতির সুস্পষ্ট লঙ্ঘন

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : গাজা উপত্যকায় যুদ্ধবিরতি চুক্তি গত ১৯ জানুয়ারি থেকে কার্যকর হয়েছে। এর আওতায় এ পর্যন্ত ষষ্ঠ দফায় এ পর্যন্ত মোট ১৯ জন ইসরাইলি ও ৯৩৫ জন ইসরাইলি বন্দির মুক্তি দেওয়া হয়েছে।

যুদ্ধ বিধ্বস্ত উপত্যকাজুড়ে যুদ্ধবিরতি কার্যকর থাকার পরও দক্ষিণ গাজার রাফাহ শহরে বহু বাড়িঘর ধ্বংস করে দিয়েছে ইসরাইল। যা সম্প্রতি আল জাজিরার ফ্যাক্ট-চেকিং সংস্থা সানাদের স্যাটেলাইট চিত্র বিশ্লেষণে প্রকাশ পেয়েছে।

রাফাহ ক্রসিং মূলত গত কয়েক দশক ধরে গাজা ও মিশরের মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রবেশদ্বার ছিল। তবে ২০২৪ সালের মে মাসে দখলদার ইসরাইল এটি বন্ধ করে দেয়।

সীমান্ত দখল ও সামরিক নির্মাণ

১৯৭৯ সালের মিশর-ইসরাইল শান্তিচুক্তি লঙ্ঘন করে ইসরাইল এখন রাফাহ সীমান্তে শক্ত অবস্থান নিচ্ছে এবং ১৪ কিলোমিটার দীর্ঘ ফিলাডেলফি করিডোর এলাকায় খনন কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।

ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু সম্প্রতি এই করিডোরের দখল ধরে রাখার ওপর জোর দিয়েছেন, যদিও এটি আন্তর্জাতিকভাবে অবৈধ।

সানাদের বিশ্লেষণ অনুযায়ী, জানুয়ারি ১৯ থেকে ২১ তারিখের মধ্যে নেওয়া স্যাটেলাইট চিত্রে দেখা গেছে, ইসরাইলি বাহিনী রাফাহ ক্রসিংয়ের চারপাশে বালির প্রতিরক্ষা বাঁধ তৈরি করেছে।

এছাড়াও ক্রসিংয়ের উত্তর অংশে একটি নতুন সামরিক চৌকি স্থাপন করা হয়েছে এবং সেখানে ১.৭ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের একটি রাস্তা নির্মাণ করা হয়েছে, যা বালির প্রতিরক্ষা বাঁধের সমান্তরালে বিস্তৃত।

স্যাটেলাইট চিত্র

গাজাবাসীর ওপর হামলা ও ঘরবাড়ি ধ্বংস

এদিকে দখলদার ও বর্বর ইসরাইলি বাহিনী রাফাহ শহরের হাজার হাজার ফিলিস্তিনি বাসিন্দাকে তাদের বাড়িতে ফিরতে বাধা দিচ্ছে। এমনকি বাড়ি ফেরার চেষ্টা করা লোকজনের ওপর সামরিক যান থেকে গুলি চালানো হচ্ছে, যাতে বহু মানুষ হতাহত হয়েছেন।

গত ১৯ জানুয়ারি থেকে কার্যকর হওয়া যুদ্ধবিরতির অংশ হিসেবে ৫০ দিনের মধ্যে ইসরাইলকে ওই অঞ্চল থেকে সেনা প্রত্যাহার করার কথা ছিল। কিন্তু স্যাটেলাইট চিত্র বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ইসরাইলি বাহিনী সেখানে স্থাপনা ও বসতি নির্মাণকাজ চালিয়ে যাচ্ছে এবং রাফাহ শহরের আস-সালাম, ইদারি ও তেল জাআরাব এলাকায় ফিলিস্তিনিদের ৬৪টি ভবন গুঁড়িয়ে দিয়েছে।

এছাড়াও শহরের পশ্চিম অংশে তাল আস-সুলতান এলাকায় অন্তত ৬টি বাড়ি ধ্বংস করা হয়েছে। যা মিশরীয় সীমান্ত থেকে মাত্র ৭৫০ মিটার দূরে অবস্থিত।

মানবাধিকার লঙ্ঘন ও যুদ্ধাপরাধ

ফিলিস্তিনি প্রতিরক্ষা বিশ্লেষক হামজা আত্তার বলেন, ‘এটি স্পষ্ট যুদ্ধাপরাধ। কারণ তারা আবাসিক ভবনগুলো ধ্বংস করছে এবং মানুষও মারছে’।

চতুর্থ জেনেভা কনভেনশন অনুযায়ী, বেসরকারি সম্পত্তি ধ্বংস করা আন্তর্জাতিক আইনের স্পষ্ট লঙ্ঘন।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক মুনির আল-বুরশ জানিয়েছেন, যুদ্ধবিরতি চুক্তি কার্যকর হওয়ার পর থেকে ইসরাইলি হামলা, অবিস্ফোরিত গোলাবারুদ বা পূর্বের গুরুতর আঘাতের কারণে কমপক্ষে ১১৮ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।

মানবিক সহায়তা আটকে দিচ্ছে ইসরাইল

এদিকে যুদ্ধবিরতি শুরুর পরও ইসরাইল গাজাবাসীর জন্য পর্যাপ্ত মানবিক সহায়তা প্রবেশ করতে দেয়নি। খাদ্য, জ্বালানি, তাঁবু ও জরুরি আশ্রয় সামগ্রী আসলেও তা আসছে খুবই সীমিত পরিমাণে। যা বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিদের জন্য চরম সংকট সৃষ্টি করেছে।

রাফাহ শহরের মেয়র আহমেদ আল-সুফি জানিয়েছেন, শহরের অধিকাংশ বাসিন্দাই বাস্তুচ্যুত অবস্থায় রয়েছে। আনুমানিক ২ লক্ষ মানুষ এখন আল-মাওয়াসি, খান ইউনিস ও গাজার অন্যান্য এলাকায় আশ্রয় নিয়েছে। কিন্তু তাদের নিজ বাড়িতে ফেরার কোনো সুযোগ নেই।

প্রাথমিক অনুমান অনুযায়ী, রাফাহ শহরের ৯০ শতাংশ বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং প্রায় ৫২,০০০ বসতবাড়ি আংশিক বা সম্পূর্ণরূপে ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়েছে।

এমন অবস্থাতেও অধিকৃত পশ্চিম তীরে বর্বর ও দখলদার বাহিনী সামরিক অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে। এমনকি যুদ্ধবাজ ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু আবারও হামলার হুমকি দিচ্ছেন।

(আল-জাজিরার প্রতিবেদন থেকে অনূদিত)

দয়া করে পোস্টটি আপনার স্যোসাল মিডিয়া শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো সংবাদ
© All rights reserved © 2019 LatestNews
Theme Customized BY LatestNews