1. [email protected] : Masumasian :
  2. [email protected] : Masum Talukdar : Masum Talukdar
বৃহস্পতিবার, ২০ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০৯:২৩ অপরাহ্ন

কমপ্লিট শাটডাউন : বরিশাল শেবামেকে অচলাবস্থা

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট এর সময় : বৃহস্পতিবার, ২০ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫
  • ২ বার পঠিত হয়েছে
কমপ্লিট শাটডাউন : বরিশাল শেবামেকে অচলাবস্থা

নিউজ ডেস্ক : বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজে (শেবামেক) শিক্ষক পদায়নের দাবিতে কমপ্লিট শাটডাউনের চতুর্থ দিনে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করে শিক্ষার্থীরা। গত সোমবার কলেজ গেটের সামনে বিক্ষোভ করে কমপ্লিট শাটডাউন কর্মসূচি ঘোষণা করে, এর পর থেকে গত চার দিন এই মেডিকেল কলেজে শিক্ষা কার্যক্রম সম্পূর্ণভাবে বন্ধ রয়েছে।

বৃহস্পতিবার বেলা ১২টা থেকে বরিশাল শহরের ব্যস্ততম বান্দরোডে অবরোধ করে বিক্ষোভ করায় ওই সড়কে ভয়াবহ যানজটের সৃষ্টি হয়। এ সময় ৬জন জুনিয়র চিকিৎসককে এখানে পদায়ন করে দেওয়া স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বুধবারের একটি প্রজ্ঞাপন শিক্ষার্থীরা প্রত্যাখ্যান করে তাতে আগুন ধরিয়ে দেন। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।

আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজে ৬০ ভাগের বেশি শিক্ষকের পদ শূন্য। এতে মানসম্মত ক্লাস ও প্রশিক্ষণ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। এ কারণে ভবিষ্যতে দেশের চিকিৎসাব্যবস্থার ওপরও নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। এমন পরিস্থিতির মধ্যেই এখানে বেশ কয়েকজন শিক্ষককে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে অন্যত্র বদলি করা হয়েছে। এতে অবস্থা আরও নাজুক হয়ে পড়েছে।

শিক্ষক পদায়নের দাবিতে শিক্ষার্থীরা গত সোমবার কলেজের প্রশাসনিক ভবন, অধ্যক্ষের কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে কমপ্লিট শাটডাউন কর্মসূচি ঘোষণা ও ক্লাস বর্জন করে আন্দোলনে নামেন। কিন্তু এরপর ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে সম্পূর্ণ উদাসীন।

সড়ক অবরোধ কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরা বলেন, তারা নিরুপায় হয়ে কমপ্লিট শাটডাউন কর্মসূচি ঘোষণা করতে বাধ্য হয়েছেন। এতে একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ থাকায় তারা যথাসময়ে সিলেবাস শেষ করা নিয়ে অনিশ্চয়তার মধ্যে আছেন।

শিক্ষার্থীরা বলেন, দেশের অন্যতম প্রধান চিকিৎসা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হিসেবে শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করলেও বর্তমানে শিক্ষক সংকটের কারণে শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবায় বড় চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয়েছে। প্রয়োজনীয় সংখ্যক শিক্ষক না থাকায় একাডেমিক কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। বিশেষ করে মেডিসিন, মাইক্রোবায়োলজি, প্যাথলজি, ফিজিওলজি, সিসিইউ, গ্যাস্ট্রোএন্টারোলজি বিভাগ এবং ডেন্টাল ইউনিটে শিক্ষক সংকট তীব্র আকার ধারণ করেছে।

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা আরও জানান, কমিউনিটি মেডিসিন, মাইক্রোবায়োলজি, প্যাথলজি ও অন্য বিভাগ থেকে বদলি হওয়া শিক্ষকদের অবিলম্বে স্বপদে ফিরিয়ে আনতে হবে, অন্যথায় আরও কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে। কলেজে ৬০ শতাংশের ওপর শিক্ষকের পদ শূন্য রয়েছে।

কলেজ প্রশাসন সূত্র জানায়, দেশের প্রাচীন ও বৃহত্তম এই মেডিকেল কলেজে অধ্যাপক, সহযোগী অধ্যাপক ও সহকারী অধ্যাপকের ৩৩৪টি পদের বিপরীতে কর্মরত আছেন মাত্র ১৪৬ জন। বাকি ১৮৮টি পদ শূন্য রয়েছে।

এমবিবিএস চূড়ান্ত বর্ষের শিক্ষার্থী আরাফাত রহমান বলেন, প্রতি ব্যাচে ২৫০ জন শিক্ষার্থী ভর্তি হলেও তাদের অর্ধেকের বেশি শিক্ষার্থীর জন্য কোনো শিক্ষক নেই। ফলে আমাদের পড়াশোনা মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। ৫০টি অধ্যাপকের পদের বিপরীতে মাত্র ৬জন অধ্যাপক রয়েছেন। আমরা এ সংকট নিরসনের দাবিতে চার দিন ধরে আন্দোলন করছি। বৃহস্পতিবার বেলা ১২টা থেকে রাস্তায় অবস্থান নিয়েছি।’

চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী আজিমুল ইসলাম বলেন, ‘১৭ ফেব্রুয়ারি আনুষ্ঠানিকভাবে স্মারকলিপি দিয়ে কলেজ প্রশাসন ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরকে দাবির কথা জানিয়েছি আমরা। কিন্তু এ পর্যন্ত স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কোনো উদ্যোগ নেননি। গত বুধবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তর শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে বিভিন্ন ইউনিয়ন ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্মরত ৬জন কনিষ্ঠ চিকিৎসককে প্রভাষক ও কিউরেটর হিসেবে পদায়ন করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। এটা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে তামাশা ছাড়া আর কিছুই নয়। কারণ, এখানে অধ্যাপক, সহযোগী ও সহকারী অধ্যপকের সংকট প্রকট। সেই অবস্থায় কয়েকজন জুনিয়র চিকিৎসককে পদায়ন করার বিষয়টি আমরা প্রত্যাখ্যান করেছি এবং ওই প্রজ্ঞাপন পুড়িয়ে প্রতিবাদ করেছি।’

এমবিবিএস পঞ্চম বর্ষের শিক্ষার্থী নাইমুর রহমান বলেন, ‘২৪ ফেব্রুয়ারি ডেন্টাল অনুষদের প্রফেশনাল পরীক্ষা এবং ২৮ ফেব্রুয়ারি ওই অনুষদের ভর্তি পরীক্ষার কার্যক্রম ব্যাহত হলে এর দায়ও ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে নিতে হবে। দাবি না মানা হলে কোনোভাবে আমাদের অবস্থান থেকে সরে দাঁড়াব না এবং কমপ্লিট শাটডাউন কর্মসূচি চলবে।’

বৃহস্পতিবার ক্যাম্পাসে গিয়ে দেখা যায়, শিক্ষার্থীরা সড়কে অবস্থান করছেন এবং আর প্রধান ফটকগুলো তালাবদ্ধ। এতে শিক্ষকেরা কার্যালয়ে ঢুকতে পারছেন না।

শিক্ষক সংকটের কথা স্বীকার করে বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ফয়জুল বাশার রূপালী বাংলাদেশ বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের এই দাবি যৌক্তিক এবং তাদের দাবি-দাওয়া নিয়ে মন্ত্রণালয়ে আলোচনা চলছে। আশা করা যায়, শিগগিরই সমস্যা সমাধান করার চেষ্টা চলছে।’

দয়া করে পোস্টটি আপনার স্যোসাল মিডিয়া শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো সংবাদ
© All rights reserved © 2019 LatestNews
Theme Customized BY LatestNews