পর্যটন নগরী কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার খুটাখালীতে পারিবারিক বিরোধের জের নাতনি জামাইয়ের হাতে বেধড়ক পিটুনির শিকার হয়ে প্রাণ হারিয়েছেন ৬৩ বছরের বৃদ্ধা নানী শাশুড়ি গোলতাজ বেগম। এই ঘটনায় স্থানীয় জনতা অভিযুক্ত নাতনি জামাই হেফজখানার শিক্ষক মোহাম্মদ আবদুল্লাহকে (২৮) আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেছে।
সোমবার (১৪ অক্টোবর) বিকেল সাড়ে চারটার দিকে উপজেলার খুটাখালী ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের পূর্ব নয়াপাড়ার থমতলা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। বেধড়ক মারধরে খুনের শিকার বৃদ্ধা নানী শাশুড়ি গোলতাজ বেগম ওই এলাকার মৃত আবুল কাশেমের স্ত্রী।
অভিযুক্ত নাতনি জামাই মোহাম্মদ আবদুল্লাহর বাড়ি পাশ্ববর্তী ঈদগাঁও উপজেলার পোকখালী ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের পূর্ব গোমাতলীস্থ বার আউলিয়া পাড়ার মৃত মোহাম্মদ জাকারিয়ার ছেলে। সে কক্সবাজার শহরের তারাবনিয়ার ছড়ার নুরুল কোরআন হেফজখানার শিক্ষক।
মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে স্থানীয় ইউপি সদস্য জিশান শাহরিয়ার জানান, পারিবারিক বিষয় নিয়ে দুইমাস আগে থেকে আবদুল্লাহ’র সঙ্গে বিরোধ চলে স্ত্রী ও নানী শাশুড়ি গোলতাজ বেগমের। এর জের ধরে সোমবার বিকেলে লোহার বস্তু (হন্দা) দিয়ে পিটিয়ে রক্তাক্ত জখম করা হয় গোলতাজকে।
এ সময় তাকে উদ্ধার করে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে নেওয়া হলে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সন্ধ্যা সাতটার দিকে মারা যান।
জিশান শাহরিয়ার আরও জানান, এই ঘটনার পর পরই স্থানীয় জনতা অভিযুক্ত নাতনি জামাই মোহাম্মদ আবদুল্লাহকে ধরে পুলিশের কাছে সোপর্দ করে।
স্থানীয় জনতার কাছে ধরা পড়ার পর অভিযুক্ত নাতনি জামাই মোহাম্মদ আবদুল্লাহ সরল স্বীকারোক্তিও দেন হত্যাকাণ্ড নিয়ে।
আবদুল্লাহ দাবি করেন দুইমাস আগে থেকে স্ত্রী নাইরা জন্নাতের সঙ্গে তার মনোমালিন্য চলে আসছিল। এমনকি এ সময় পর্যন্ত নানী শাশুড়ি তাঁর স্ত্রীকে বাপের বাড়িতে রেখে দেয়। এ নিয়ে মোবাইল ফোনে নানীকে গালিগালাজ করি। এর পর তাঁর (আবদুল্লাহ) বাড়িতে গিয়ে বিয়ের সময় দেওয়া আসবাবপত্রও নিয়ে আসে।
মূলতঃ এসব ঘটনার কারণে রাগের মাথায় আজ স্ত্রীকে নিয়ে আসতে গেলে তর্কাতর্কির একপর্যায়ে লোহার রড দিয়ে নানী শাশুড়িকে কয়েকটি আঘাত করি।
চকরিয়া থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মিজানুর রহমান বলেন, খবর পেয়ে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ জনতার সহায়তায় অভিযুক্ত নাতনি জামাই মোহাম্মদ আবদুল্লাহকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।
চকরিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি)মোঃমঞ্জুর কাদের ভূঁইয়া বলেন, এই ঘটনায় পরিবার থেকে লিখিত অভিযোগ পাওয়ার পর আসামির বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।