নিউজ ডেস্ক : চলতি বছরের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে। এ বছর পাসের হার ৭৭ দশমিক ৭৮ শতাংশ।
আর জিপিএ-৫ পেয়েছে এক লাখ ৪৫ হাজার ৯১১ শিক্ষার্থী।
মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) সকালে রাজধানীর বকশি বাজারে ঢাকা শিক্ষা বো্র্ডে এক সংবাদ সম্মেলনে আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটির সভাপতি ও ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান তপন কুমার সরকার এ ফলাফল প্রকাশ করেন।
তিনি জানান, এবার এইচএসসি পরীক্ষায় পাসের হার ৭৫ দশমিক ৫৬ শতাংশ। জিপিএ-৫ পেয়েছে এক লাখ ৩১ হাজার ৩৭৬ শিক্ষার্থী। আলিম পরীক্ষায় পাসের হার ৯৩ দশমিক ৪০ শতাংশ। জিপিএ-৫ পেয়েছে নয় হাজার ৬১৩ পরীক্ষার্থী। ভোকেশনাল/বিএম/ডিপ্লোমা ইন কমার্সে পাসের হার ৯৯ দশমিক ০৯ শতাংশ। জিপিএ-৫ পেয়েছে চার হাজার ৯২২ শিক্ষার্থী।
গত বছর এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় গড় পাসের হার ছিল ৭৮ দশমিক ৬৪ শতাংশ। সেবার জিপিএ-৫ পেয়েছিল ৯২ হাজার ৫৯৫ শিক্ষার্থী।
প্রকাশিত ফলাফলে দেখা গেছে, গতবারের তুলনায় পাসের হার কিছুটা কমেছে। ২০২৩ সালে ১১টি শিক্ষা বোর্ডে গড় পাসের হার ছিল ৭৮ দশমিক ৬৪ শতাংশ, তা এবার কমে ৭৭ দশমিক ৭৮ শতাংশে এসেছে। গত বছরের চেয়ে এবার পাসের হার কমেছে শূন্য দশমিক ৮৬ শতাংশ।
পাসের হার কমলেও জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা বেড়েছে। গত বছর জিপিএ-৫ পেয়েছিল ৯২ হাজার ৫৯৫ জন শিক্ষার্থী। এবার জিপিএ-৫ পেয়েছে এক লাখ ৪৫ হাজার ৯১১ জন। সেই হিসাবে গতবারের তুলনায় এবার জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা বেড়েছে ৫৩ হাজার ৩১৬ জন।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, এ বছর এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষায় অংশ নিতে ফরম পূরণ করে ১৪ লাখ ৫০ হাজার ৭৯০ জন শিক্ষার্থী। পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে ১৩ লাখ ৩১ হাজার ৫৮ জন। তাদের মধ্যে ছাত্র ছয় লাখ ৬৬ হাজার ১৩ জন এবং ছাত্রী ছয় লাখ ৬৫ হাজার ৪৫ জন। সারা দেশের নয় হাজার ১৯৭টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নেয়। পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয় ২ হাজার ৬৯৫টি কেন্দ্রে।
অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীদের মধ্যে পাস করেছে ১০ লাখ ৩৫ হাজার ৩০৯ জন। উত্তীর্ণদের মধ্যে ছাত্র পাঁচ লাখ তিন হাজার ৫৯৫ জন এবং ছাত্রী পাঁচ লাখ ৩১ হাজার ৭১৪ জন। গড় পাসের হার ৭৭ দশমিক ৭৮ শতাংশ। ছাত্রদের গড় পাসের হার ৭৫ দশমিক ৬১ শতাংশ এবং ছাত্রীদের পাসের হার ৭৯ দশমিক ৯৫ শতাংশ। মোট জিপিএ-৫ প্রাপ্তদের মধ্যে ছাত্র ৬৪ হাজার ৯৭৮ জন এবং ছাত্রী ৮০ হাজার ৯৩৩ জন।
পরীক্ষায় বিঘ্ন, ফল নির্ধারণেও ভিন্নতা
গত ৩০ জুন থেকে সারা দেশে একযোগে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা শুরু হয়। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কারণে গত ১৮, ২১, ২৩ ও ২৫, ২৮ জুলাই ও ১ ও ৪ আগস্টের পরীক্ষা স্থগিত করা হয়। সবশেষে ১১ সেপ্টেম্বর থেকে নতুন সূচিতে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল।
কিন্তু নতুন করে আর পরীক্ষা না নিয়ে যেগুলো হয়েছে সেগুলোর ওপর ভিত্তি করে এইচএসসির ফলাফল প্রকাশের দাবি নিয়ে শত শত পরীক্ষার্থী নজিরবিহীনভাবে ২০ আগস্ট দুপুরে প্রশাসনের কেন্দ্রবিন্দু সচিবালয়ে ঢুকে পড়ে। পরে তাদের প্রতিনিধিদের নিয়ে বৈঠকে বসে শিক্ষা মন্ত্রণালয় অবশিষ্ট পরীক্ষা বাতিলের সিদ্ধান্ত নেয়।
কীভাবে ফলাফল প্রকাশ হবে, তা নিয়ে গত ২৫ সেপ্টেম্বর শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটিকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
অনুষ্ঠিত বিষয়গুলো পূর্ণ মানে এবং বাতিল হওয়া পরীক্ষাগুলোর ক্ষেত্রে শুধু পরীক্ষার্থীদের এসএসসিতে প্রাপ্ত নম্বরের ভিত্তিতে সাবজেক্ট ম্যাপিং করার নির্দেশনা দেওয়া হয়। সে অনুসারেই প্রকাশিত হলো ফলাফল।
যেভাবে মিলবে ফলাফল
ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক প্রফেসর মো. আবুল বাশার জানান, দুই পদ্ধতিতে স্ব স্ব প্রতিষ্ঠানের রেজাল্ট শিট ডাউনলোড করা যাবে।
ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের ওয়েবসাইট www.dhakaeducationboard.gov.bd, www.educationboardresults.gov.bd, www.eduboardresults.gov.bd-এ রেজাল্ট (Result) কর্নারে ক্লিক করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ইআইআইএন (EIIN) এন্ট্রি করে প্রতিষ্ঠানভিত্তিক এবং রোল ও রেজিস্ট্রেশন নম্বরের মাধ্যমে রেজাল্ট শিট ডাউনলোড করা যাবে।
এসএমএসের মাধ্যমেও ফলাফল সংগ্রহ করা যাবে। এজন্য HSC Board name (first 3 letters) Roll Year টাইপ করে 16222 নম্বরে পাঠাতে হবে। উদাহরণ: HSC Dha 123456 2024 লিখে 16222-তে পাঠাতে হবে। প্রি-রেজিস্ট্রেশন করেও ফল জানতে পারবেন পরীক্ষার্থীরা।
পুনঃনিরীক্ষণের আবেদন নেওয়া শুরু বুধবার
প্রকাশিত এ ফলাফলে কেউ যদি সন্তুষ্ট না হন, তাহলে উত্তরপত্র চ্যালেঞ্জ বা ফল পুনঃনিরীক্ষণের সুযোগ রয়েছে। এ ফল পুনঃনিরীক্ষণের জন্য শিক্ষার্থীদের টেলিটক সিম ব্যবহার করে এসএমএসের মাধ্যমে আবেদন করতে হবে।
তপন কুমার সরকার জানান, পুনঃনিরীক্ষণ আবেদন প্রক্রিয়া শুরু হবে বুধবার (১৬ অক্টোবর), যা চলবে ২২ অক্টোবর পর্যন্ত।
ফলাফল পুনঃনিরীক্ষণের জন্য আবেদন করতে টাইপ করুন: RSC<space>First 3 Letter of Your Board Name<space>roll<space>subject_code and send to 16222.
প্রতি পত্রের জন্য আবেদন ফি ১৫০ টাকা।
পুনঃনিরীক্ষণের আবেদন প্রক্রিয়ার বিস্তারিত ও ফি ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের ওয়েবসাইটে পাওয়া যাবে।