বিনোদন ডেস্ক : রাজধানীর উত্তরার দিয়াবাড়ীতে মাইলস্টোন কলেজ ক্যাম্পাসের ওপর বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার ঘটনায় অন্তত ১৯ জন নিহত এবং বহু শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। মর্মান্তিক এই দুর্ঘটনায় সারাদেশে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শোক, ক্ষোভ ও প্রার্থনা জানিয়েছেন দেশের শিল্প-সংস্কৃতি অঙ্গনের বহু পরিচিত মুখ।
আঁখি আলমগীর লিখেছেন, ‘আহা, কী অসহায় আমরা। আল্লাহ সবাইকে ক্ষমা করুন, সহায় হোন।’ তাসনিয়া ফারিণ বলেন, ‘মাইলস্টোনের জন্য প্রার্থনা।’ সোহানা সাবা বিস্ময় প্রকাশ করে লেখেন, ‘ঢাকার মতো জনবহুল এলাকায় বিমান চালানো প্রাক্টিস করা হয়!’
সামিরা খান মাহি লেখেন, ‘প্রাথমিক খবরে জানা গেছে, বহু ছাত্র-ছাত্রী হতাহত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। আল্লাহ তুমি সবাইকে হেফাজতে রাখো।’ গায়িকা পড়শি বলেন, ‘উত্তরা মাইলস্টোন স্কুলে ট্রেনিং বিমান বিধ্বস্ত। সকল শিক্ষার্থীসহ যারা আক্রান্ত হয়েছেন, সবার জন্য প্রার্থনা করছি।’
ইমন চৌধুরী লিখেছেন, ‘এখন পর্যন্ত ১৯টি তাজা প্রাণ ঝরে গেল। এই মৃত্যু উপত্যকায় সৃষ্টিকর্তার কাছে সাহায্য প্রার্থনা ছাড়া আমাদের আর কিছুই করার উপায় নেই।’
জিনাত হাকিম শিশুদের ছবি পোস্ট করে লেখেন, ‘নিয়তির খেলায় আমরা এভাবেই অসহায় হয়ে পড়ি। আহারে এই শিশুরা কীভাবে যন্ত্রণা সহ্য করছে!’ পূজা চেরী লেখেন, ‘এখন স্কুল, কলেজেও মৃত্যুর ভয় নিয়ে যেতে হবে।’ কচি খন্দকার বলেন, ‘এই রকম ভয়াবহ ঘটনা অনাকাঙ্ক্ষিত। শোক নেওয়ার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলেছি।’
সাইফ খান জানান, বিমান একটি ভবনের ওপর ভেঙে পড়ে, ফলে পুরো ভবন আংশিক ধসে যায়। তিনি সবাইকে উদ্ধারকাজে বাধা না দিয়ে নিরাপদ দূরত্বে থাকার অনুরোধ জানান। তৌসিফ মাহবুব বলেন, ‘যারা উত্তরার আশপাশে আছেন, রক্ত দিতে পারবেন, তারা আশপাশের হাসপাতালে চলে যান।’
সাদিয়া আয়মান জানান, উত্তরা আধুনিক হাসপাতাল ও মনসুর আলী মেডিকেলে প্রচুর রক্তদাতার প্রয়োজন। লিংকন লেখেন, ‘মাইলস্টোনের কারও খোঁজ বা রক্তের দরকার হলে আমাকে জানান, আমি পোস্ট করব।’
আজমেরি হক বাঁধন লেখেন, ‘এই ঘটনা আমি খুব ব্যক্তিগতভাবে নিয়েছি। আমি প্রতিদিন আমার মেয়েকে স্কুলে নিয়ে যাই সেই রাস্তা দিয়ে। সৌভাগ্যবশত এখন ছুটি চলছে, কিন্তু এই ঘটনা আমাকে মানসিকভাবে বিধ্বস্ত করেছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এই শিশুদের কেউ জানতেও পারেনি সেটাই তাদের জীবনের শেষ দিন হবে। যারা বেঁচে গেছে, তারা ভয়াবহ মানসিক ট্রমার মধ্য দিয়ে যাবে।’
জয়া আহসান লেখেন, ‘আমি টেলিভিশনের দিকে তাকাতে পারছি না। এতগুলো কচি কচি বাচ্চার বিদায় কীভাবে মেনে নেওয়া যায়!’ তিনি আরও লেখেন, ‘আহারে এই বাচ্চাদের মা-বাবারা কীভাবে এই শূন্যতার ভার বইবেন, আল্লাহ যেন তাদের মনে শক্তির সঞ্চার ঘটান।’
শাকিব খান বলেন, ‘আল্লাহ যেন আহতদের দ্রুত সুস্থতা দান করেন।’ একইসঙ্গে তিনি লেখেন, ‘ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে এই কঠিন সময় পার করার শক্তি দিন।’
সালমান মুক্তাদির তীব্র হতাশা ও ক্ষোভ প্রকাশ করে লেখেন, ‘আমি আমার সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি চুপ করে থাকার জন্য। এই দেশ নিজের মানুষদের দ্বারাই অভিশপ্ত।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমরা যে মৃত্যু পাই, সেটাই আমাদের প্রাপ্য। হোক সেটা ভবন ভেঙে পড়া, ট্রাক চাপা, বাসে মাথা থেঁতলে যাওয়া বা স্কুলের উপর বিমান ভেঙে পড়া-সবই আমাদের প্রাপ্য।’ তিনি বলেন, ‘সবাই চুপ থাকে, মুখ না খুললে এমন চক্র চলতেই থাকবে। কেউ বলে না ‘এবার শেষ’, ‘এবার বদলানোর সময় এসেছে।’ একজনও নেই।’
এই ভয়াবহ দুর্ঘটনায় গোটা দেশের মানুষ একসঙ্গে শোকাহত। সামাজিক মাধ্যমে তারকারা যে যেভাবে পেরেছেন, তাৎক্ষণিকভাবে তাদের কষ্ট, ক্ষোভ ও সহমর্মিতা প্রকাশ করেছেন। এখন সবার একটাই প্রার্থনা-আল্লাহ যেন নিহতদের শান্তি, আহতদের আরোগ্য ও ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে শক্তি দান করেন।