আন্তর্জাতিক ডেস্ক : বিদ্রোহী যোদ্ধাদের রাজধানী দামেস্কে প্রবেশের আগমুহূর্তে রোববার সকালেই দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ। এর মধ্য দিয়ে দেশটিতে আসাদ পরিবারের ৫৩ বছরের শাসনামলের অবসান হয়েছে।
সংকটময় এ পরিস্থিতিতে বাশারের ক্যানসারে আক্রান্ত স্ত্রী ও সন্তানেরা এখন কোথায়, এ কৌতূহল অনেকের মনেই।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের বরাতে বিবিসি জানায়, বাশার ব্যক্তিগত উড়োজাহাজে দামেস্ক আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে উড়াল দিলেও তিনি কোথায় গেছেন, সেটি জানা যায়নি।
বাশার আল-আসাদ গতকাল শনিবার স্থানীয় সময় রাত আটটায় জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু সেই ভাষণ আর দেওয়া হয়নি তার। এরপর আজ সকালে দেশ ছাড়তে হয় টানা ২৪ বছর ক্ষমতায় থাকা বাশারকে।
ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল জানিয়েছে, বাশার আল-আসাদের ব্রিটিশ-সিরীয় স্ত্রী আসমা আসাদ এবং তাদের তিন সন্তান আগেই সিরিয়া ছেড়েছেন। সন্তানদের নিয়ে আসমা গত নভেম্বরের শেষের দিকে রাশিয়ায় চলে যান।
সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট দপ্তরের বরাতে গত মে মাসে রয়টার্স এক প্রতিবেদনে জানিয়েছিল, ৪৮ বছর বয়সী আসমার লিউকেমিয়া (রক্ত বা অস্থিমজ্জার ক্যানসার) শনাক্ত হয়েছে। এ কারণে তিনি জনসম্মুখে কোনো অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়া থেকে বিরত আছেন।
এর বছর পাচেক আগে আসমা স্তন ক্যানসার থেকে পুরোপুরি সুস্থ হয়ে ওঠার কথা জানিয়েছিলেন।
আসমার জন্ম ও বেড়ে ওঠা যুক্তরাজ্যের লন্ডনে। সেখানেই বাশার আল-আসাদের সঙ্গে তার পরিচয়। বিনিয়োগ ব্যাংকে চাকরি করতেন আসমা। পরে বাশারকে বিয়ে করে সিরিয়ায় চলে আসেন।
২০১১ সাল থেকে সিরিয়ায় গৃহযুদ্ধ চলছে। তখন থেকে সিরিয়ার নিহত সেনাদের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দেখা করে ও দাতব্য কাজে নিজেকে ব্যস্ত রেখেছিলেন আসমা। কিন্তু বিদ্রোহীরা তার এ কাজ ভালো চোখে দেখেননি।
স্বামীর সঙ্গে গত বছর রাষ্ট্রীয় সফরে সংযুক্ত আরব আমিরাতে যান আসমা। ২০১১ সালের পর দেশের বাইরে এটাই ছিল তার প্রথম রাষ্ট্রীয় সফর।
এর আগে, বিদ্রোহী গোষ্ঠী হায়াত তাহরির আল শাম (এইচটিএস) তাদের টেলিগ্রামে বলেছে, ‘একটি অন্ধকার যুগের সমাপ্তি হয়েছে এবং একটি নতুন যুগের সূচনা হয়েছে। স্বৈরাচার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদ পালিয়েছেন। সিরিয়া মুক্ত হয়েছে।’