1. [email protected] : Masumasian :
  2. [email protected] : Masum Talukdar : Masum Talukdar
শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৮:৫৫ অপরাহ্ন

রোগে আক্রান্তদের রোজার খাবার

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট এর সময় : শুক্রবার, ৮ মার্চ, ২০২৪
  • ৭২ বার পঠিত হয়েছে

অনলাইন ডেস্ক – রোজা আসন্ন। আজ থেকেই রোজা রাখার প্রস্তুতি শুরু করা প্রয়োজন। রোজার সময় খাদ্যাভ্যাসের পরিবর্তনে নিজেকে অভ্যস্ত করে তুলতে হবে। যারা সুস্থ আছেন, তাদের চেয়ে যারা বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত তাদের বেশি ভাবনায় পড়তে হয়।

ডায়াবেটিসের রোগী

ইফতারে অন্যদের মতোই ছোলা, পেঁয়াজু, বেগুনি, মুড়ি ইত্যাদি খাবেন। তবে তাদের চিনি বা গুড়ের শরবত পরিহার করতে হবে। এর পরিবর্তে তারা ডাবের পানি, লেবুর পানি, তোকমা, ইসুপগুলের পানি, তেতুল-লবণ দিয়ে শরবত, অথবা টকদই-পুদিনা পাতা-লবণ-গোলমরিচ দিয়ে শরবতের মতো করে খেতে পারেন।

যদি কেউ বিকল্প চিনি ব্যবহার করতে চান সেটাও পারেন। অনেকে ইফতারে জিলাপি পছন্দ করেন। সেটা একেবারে বাদ দিতে হবে। মোট কথা, মিষ্টি খাবার একেবারেই খাবেন না। খেজুর খেলে একটার বেশি নয়। মুড়ি-চিড়া যাই খান না কেন, পরিমাণ ঠিক রেখে খেতে হবে।

সেহরিতে দুধ খেলে সেসময় ডাল খাওয়ার প্রয়োজন নেই। অন্য দিনের পাঁচ বেলার খাবারকে তিন বেলায় নিয়ে আসতে হবে। সকালের নাশতার সমপরিমাণ হবে ইফতারে। রাতের খাবারের পরিমাণ থাকবে সন্ধ্যারাতে এবং দুপুরের খাবারের সমপরিমাণ হবে সেহরিতে। অর্থাৎ কোনো ক্রমেই ক্যালরির পরিমাণ বাড়বে না এবং কমানো যাবে না।

আবার কোনো বেলায় না খেয়ে থাকা যাবে না। এতে হাইপোগ্লাইসেমিয়া হয়ে রোজা রাখা কঠিন হয়ে যাবে। ইফতারে যদি মাংস ও ডাল বেশি খাওয়া হয়, তাহলে সন্ধ্যা রাতে শুধু ভাত বা রুটি ও সবজি খেতে হবে।

উচ্চরক্তচাপের রোগী

ইফতারে যতটা সম্ভব লবণ কম খেতে হবে। এছাড়া ডুবো তেলে ভাজা পেঁয়াজু, বেগুনি, আলুর চপ না খেয়ে, স্টোর ফ্রাই করে খাওয়া যেতে পারে। খুব বেশি মিষ্টি না খাওয়া ভালো। এ সময় ম্যাগনেশিয়াম ও পটাশিয়ামের জন্য ফল বা বিভিন্ন ফলের সালাদ খেলে উপকার হবে। ইফতার অথবা সেহরিতে যেকোনো মাছ খেতে পারলে ভালো হয়। ডিম দুয়ের অধিক খেলে একটির কুসুম বাদ দিতে হবে। এছাড়া তিন বেলার খাবারে তেল কম থাকতে হবে।

বাত-ব্যথার রোগী

এ রোগীদের খাবারে ছোলা, পেঁয়াজু, বেসন, হালিম অর্থাৎ ডাল জাতীয় খাবার বাদ দিতে হবে। তাদের খেতে হবে শরবত। চিড়া, মুড়ি, খই, ময়দা-আটা ও চালের গুঁড়ার নাশতা তারা খাবেন। কারণ ডালের পিউরিন বাত-ব্যথাকে বাড়িয়ে দেবে। ক্যালসিয়ামের জন্য দুধ-মুড়ি, দুধ-সেমাই, পায়েশ, দই-চিড়া, দুধ-সুজি খাবেন। অবশ্য যে কোনো শরবতে কোনো সমস্যা নেই। এছাড়া সন্ধ্যা রাতে ও সেহরিতে যতটা সম্ভব মাংস কম খেতে হবে। ডিম খেলে কোনো ক্ষতি নেই। ইফতারে প্রতিদিন আনারসের টুকরা বা জুস খেলে ভালো হয়।

পেপটিক আলসারের রোগী

অনেকে মনে করেন এ ধরনের রোগীদের রোজা রাখলে সমস্যা বেড়ে যাবে। আসলে তা নয়, রোজার সময় একটা শৃঙ্খলার মধ্যে খাবার খেতে হয়। ফলে পাকস্থলিও কিছুটা বিশ্রাম পায়। এজন্য এসময় তেমন অসুবিধা হতে দেখা যায় না। তবে কিছু কিছু খাবার বাদ দিতে পারলে ভালো হয়। যেমন- খুব টক, খুব ঝাল, মশলা, কাঁচা সবজি, খোসাসহ ফল, খুব ঠাণ্ডা ও খুব গরম খাবার, ডুবো তেলে ভাজা খাবার। ইফতারে দই-ছানা, চিড়া, ভেজানো মুড়ি খাবেন। সিদ্ধ ছোলা, নরম খিচুড়ি খেলে ভালো হয়। সন্ধ্যারাতে ও সেহরিতে অন্যান্য দিনের মতো স্বাভাবিক সহজপাচ্য খাবার খেতে হবে।

হৃদরোগী

হৃদরোগীদের ওপর রোজায় কোনো ক্ষতিকর প্রভাব পড়ে না। তবে ইফতারে ট্রান্সফ্যাটের জন্য ডুবো তেলে ভাজা খাবারের উপাদানগুলো এড়িয়ে চলা ভালো। এছাড়া চর্বিযুক্ত খাবার না খেয়ে হালকা তেলে রান্না সহজপাচ্য খাবার খাওয়া উচিত। পটাশিয়াম ও ভিটামিন সি-এর জন্য বিভিন্ন ধরনের ফল খাওয়া ভালো। এসময় কাঁচা ছোলার সঙ্গে আদা-টমেটো-পুদিনাপাতা কুচি ও হালকা লবণ দিয়ে খেতে পারলে ভালো হয়। কাঁচা ছোলা রক্তের কোলেস্টরেল কমাতে সাহয্য করে। কোষ্টকাঠিন্যও দূর করে।

কিডনি রোগী

কিডনি রোগীদেরও রোজা রাখায় কোনো সমস্যা নেই। ইফতারে প্রচলিত খাবারগুলো বাদ দিয়ে চালের গুঁড়া-ময়দার তৈরি চপ, আলুর চপ খেতে পারেন। এছাড়া খাওয়া যাবে মুড়ি (হাতে ভাজা), চালের রুটি, ফ্রায়েড রাইস, স্যান্ডউইচ। ডায়াবেটিস না থাকলে শরবত খেতে কোনো বাধা নেই। কিডনি রোগীদের জন্য ডিম অপরিহার্য। প্রতিদিন ২টি ডিম খেতে হবে এবং ১টির কুসুম বাদ দিয়ে খেলে ভালো।

গরু ও খাসির মাংস না খেলে ভালো হয়। যেসব মাছে ফসফরাস বেশি সেগুলো বর্জন করা উচিত। ডালে পটাশিয়াম ও ফসফরাস, প্রোটিন বেশি আছে। সেজন্য ডালের তৈরি খাবার বাদ দেওয়া উচিত। প্রোটিন সীমিত করার প্রয়োজন হয় বলে বেশি বেশি মাছ-মাংস না খাওয়াই ভালো। তেমনি গুঁড়া দুধ বাদ দিয়ে সম্ভব হলে উন্নতমানের গরুর দুধ ১ কাপ খাওয়া যাবে।

ওজন বেশি থাকলে

অনেকের ধারণা রোজা রাখলে ওজন কমে যাবে। অথচ হয় তার বিপরীত। কারণ এসময় তেলে ভাজা এবং মিষ্টান্ন খাওয়া হয় বেশি। দেখা যায় আগের তুলনায় আরও তিন-চার কেজি বেড়ে যায়। এ কারণে সতর্কতার সঙ্গে খাবার খেতে হবে। ইফতারে তেলের পরিমাণ এবং খাবারের পরিমাণ কমাতে হবে। মিষ্টি ফল এবং মিষ্টি খাবার যতটা সম্ভব এড়িয়ে যেতে হবে। কোনোক্রমেই যেন বরাদ্দকৃত ক্যালরির বেশি খাবার খাওয়া না হয়। ইফতার-সন্ধ্যা রাত-সেহরিতে সব বেলায়ই সীমিত পরিমাণে খেতে হবে।

দয়া করে পোস্টটি আপনার স্যোসাল মিডিয়া শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো সংবাদ
© All rights reserved © 2019 LatestNews
Theme Customized BY LatestNews