1. [email protected] : Masumasian :
  2. [email protected] : Masum Talukdar : Masum Talukdar
বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৭:৩৪ অপরাহ্ন

ব্যবসায়ী থেকে প্রেসিডেন্ট হয়ে ওঠা ডোনাল্ড ট্রাম্প

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট এর সময় : বুধবার, ৬ নভেম্বর, ২০২৪
  • ৩৭ বার পঠিত হয়েছে
ডোনাল্ড ট্রাম্প

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : যুক্তরাষ্ট্রের রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প আগামী প্রেসিডেন্ট হচ্ছেন। তবে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা না এলেও ফ্লোরিডার ওয়েস্ট পাম বিচে নির্বাচনী পর্যবেক্ষণ অনুষ্ঠানে ভাষণে নিজেকে যুক্তরাষ্ট্রের পরবর্তী প্রেসিডেন্ট হিসেবে ঘোষণা করেছেন রিপাবলিকান ডোনাল্ড ট্রাম্প। তথ্য, ফক্স নিউজ।

ধনাঢ্য ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিত ডোনাল্ড ট্রাম্প ১৯৮৭ সাল থেকে মার্কিন রাজনীতিতে আধিপত্য বিস্তারে মরিয়া হয়ে ওঠেন। রিপাবলিকান পার্টি ছেড়ে ডেমোক্র্যাটিক পার্টিতেও পরোক্ষভাবে জড়িয়ে পড়ার ইতিহাসে আছে ট্রাম্পের। তার বিরুদ্ধে রয়েছে যৌন নিপীড়ন ও বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কের অভিযোগ। এতো সমালোচনা ও বিতর্কের পরও রিপাবলিকান পার্টিতে কীভাবে নিজের শক্ত ভিত গাড়লেন ৭৮ বছর বয়সী ট্রাম্প।

চারটি ফৌজদারি মামলায় ৯১টা গুরুতর অভিযোগের মুখোমুখি মামলা বিলম্বিত করাতে তার আইনি কৌশল অনেকাংশেই সফল হয়েছে। যদিও  তিনটি মামলায় তেমন কোনো অগ্রগতি নেই। এছাড়া পর্ন তারকাকে ঘুষের মামলায় সাজা ঘোষণা ২৬ নভেম্বর পর্যন্ত স্থগিত করা হয়েছে।

মার্কিন রাজনীতিতে হার না মানা এক রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের নাম ডোনাল্ড ট্রাম্প। মাথার ওপর আছে ফৌজদারি মামলার চাপ। তবে কোনো প্রতিকূলতাই তার আত্মবিশ্বাসে ভাটা ফেলতে পারেনি। সব সমালোচনা ও বাধাকে পাশ কাটিয়ে রাজনীতির মাঠে এগিয়ে চলছেন অপ্রতিরোধ্য গতিতে।

২০২০ সালে হেরে যাওয়ার পরও ২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের লড়াই থেকে সাবেক এই মার্কিন প্রেসিডেন্টকে পিছু হটানো সম্ভব হয়নি। এদিকে, ২০২১ সালের ৬ জানুয়ারি ক্যাপিটল হিল দাঙ্গার ঘটনায় সমর্থন দেয়ার অভিযোগে ট্রাম্পের রাজনৈতিক ক্যারিয়ার বিলুপ্তির শঙ্কা দেখা দেয়। দাতা এবং সমর্থকরাও তাকে আর কিছুতেই সমর্থন করবেন না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছিলেন। তবে হেভিওয়ট প্রার্থীর খরায় ২০২২ সালের মধ্যবর্তী নির্বাচন থেকেই প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হিসেবে ট্রাম্পের ওপরই ভরসা রাখতে হয় রিপাবলিকানদের।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট পদে লড়ার জন্য ট্রাম্প প্রথম আগ্রহের কথা জানিয়েছিলেন ১৯৮৭ সালে। বিপুল পরিমাণ অর্থ ও ব্যবসায়িক আধিপত্য থাকা সত্ত্বেও যখন প্রার্থী হতে পারছিলেন না, তখন ১৯৯৯ সালে রিপাবলিকান দল ছেড়ে রিফর্ম পার্টিতে যোগ দেন। সেখানেও ব্যর্থ হয়ে ২০০১ থেকে ২০০৯ পর্যন্ত ডেমোক্র্যাট রাজনীতিতে সম্পৃক্ত ছিলেন। ২০০৮ সালে বারাক ওবামাকে প্রার্থী করাতে রাগে ক্ষোভে ডেমোক্র্যাটিক পার্টি ছেড়ে আবারও ২০০৯ সাল থেকে রিপাবলিকান রাজনীতি শুরু করেন। তবে অধৈর্য্য ও অভিমানী ট্রাম্প ২০১১ সালে গিয়ে যোগ দেন ছোট রাজনৈতিক দল ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইউনিয়নে।

ট্রাম্প বুঝে গিয়েছিলেন, ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইউনিয়নের মতো ছোট রাজনৈতিক দলে থেকে তার প্রেসিডেন্ট হওয়ার স্বপ্ন পূরণ হবে না। ফলে, ২০১২ সালে আবারও রিপাবলিকান পার্টিতে ভেড়েন তিনি। বিপুল অর্থ-সম্পদের মালিক হওয়ায় এতবার দল পাল্টালেও তাকে না করতে পারেনি রিপাবলিকান পার্টি। এরপর দলটি থেকে প্রথমবার প্রেসিডেন্ট পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতার সুযোগ আসে ২০১৫ সালে। প্রচারণার মাঠে ৪০তম মার্কিন প্রেসিডেন্ট রোনাল্ড রেগানের মেইক অ্যামেরিকা গ্রেট অ্যাগেইন শ্লোগানে ভর করেছিলেন। সেই সঙ্গে অভিবাসীবিরোধী নানা প্রতিশ্রুতি দিয়ে ২০১৬ সালের নির্বাচনে হোয়াইট হাউজের মসনদও নিশ্চিত করেছিলেন ট্রাম্প।

বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের তথ্য বলছে, কিশোর বয়স থেকেই অধৈর্য, অতিরিক্ত দুষ্টুমি ও উশৃঙ্খল আচরণের ছিলেন ট্রাম্প। মাথায় যা আসতো তাই করতেন। এসবের জন্য ১৩ বছর বয়সে স্কুল থেকে নিয়ে তাকে নিউইয়র্ক মিলিটারি অ্যাকাডেমিতে ভর্তি করানো হয়। এরপর পেনসিলভেনিয়া বিশ্ববিদ্যালয় অধীন ওয়ার্টন স্কুল থেকে ডিগ্রি অর্জন করেন ১৯৬৮ সালে।

পড়াশোনা শেষে রিয়েল এস্টেট ব্যবসায়ী বাবা ফ্রেডরিক ট্রাম্পের কাছ থেকে ১০ লাখ ডলার ঋণ নিয়ে নিজেই একটি রিয়েল এস্টেট ব্যবসা দাঁড় করান। নিজের ব্যবসার পাশাপাশি বাবার প্রতিষ্ঠান ট্রাম্প ম্যানেজমেন্ট পরিচালনায়ও সহযোগিতাও করতেন। ১৯৭১ সালে প্রতিষ্ঠানটির প্রেসিডেন্ট বানানো হয় তাকে। পরে কোম্পানিটির নাম পরিবর্তন করে রাখেন ‍‍`ট্রাম্প অর্গানাইজেশন‍‍`। ১৯৯৯ সালে বাবা মারা যাওয়ায় রিয়েল এস্টেট ব্যবসার পুরো দায়িত্ব পান ট্রাম্পই।

বিনোদন জগতের ব্যবসায়িক সাম্রাজ্য গড়েছেন ট্রাম্প। ১৯৯৬ সাল থেকে ২০১৫ পর্যন্ত মিস ইউনিভার্স, মিস ইউএসএ সহ বিভিন্ন সুন্দরী প্রতিযোগিতার মালিক ছিলেন তিনি। বিভিন্ন বিজ্ঞাপনে ট্রাম্পকেও মডেল হতে দেখা গেছে। এছাড়া ২০০৪ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত জনপ্রিয় টেলিভিশন শো, দ্য অ্যাপ্রেন্টিসের অন্যতম প্রযোজক ছিলেন তিনি। প্রথম চৌদ্দটি সিজনে হোস্ট হিসেবেও দেখা গেছে তাকে। বেশিরভাগ সুটিং হয়েছে তার বিখ্যাত ট্রাম্প টাওয়ারে। ১৯৭০ ও ১৯৮০ দশকের ট্রাম্প কেমন ছিলেন, তারই জীবন কাহিনি নিয়ে দ্য অ্যাপ্রেন্টিস নামে একটি ড্রামা ফিল্মও মুক্তি পেয়েছে চলতি বছরের ১১ অক্টোবর। যাতে খরচ হয়েছে ১৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের বেশি।

এমনকি জনপ্রিয় মার্কিন রেসলিং প্রতিষ্ঠান ডব্লিউডব্লিউইতেও অর্থ লগ্নি করেন ট্রাম্প। নিজেও অংশ নিতেন রেসলিংয়ে। এসব করেই নিজের পরিচিতির জায়গা বাড়িয়েছেন। বলতে গেলে, আপাদমস্তক একজন ব্যবসায়ী থেকে রাজনৈতিকভাবে আধিপত্য বিস্তারে নিজেকে সুপরিচিত করে তুলতে যে পথে হাঁটা দরকার তার সবটাই করেছেন ট্রাম্প।

ব্যক্তিগত জীবনে তিনটি বিয়ে করেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। প্রথম স্ত্রী ছিলেন বিখ্যাত মডেল ইভানা জেলনিকোভা । ১৯৯০ সালে তাদের বিয়ে ভেঙে গেলে ১৯৯৩ সালে বিয়ে করেন অভিনয়শিল্পী মারলা ম্যাপলসকে। তাদের কন্যাসন্তানের নাম টিফানি। দ্বিতীয় বিয়েও ভেঙে যায় ১৯৯৯ সালে। এরপর ২০০৫ সালে বিয়ে করেন তার বর্তমান স্ত্রী, মডেল মেলানিয়া নাউসকে। ব্যারন উইলিয়াম ট্রাম্প নামে তাদের একটি পুত্রসন্তান আছে।

ডোনাল্ড ট্রাম্প ১৯৪৬ সালের ১৪ জুন নিউইয়র্কের কুইন্স শহরে জন্মগ্রহণ করেন। পাঁচ ভাই-বোনের মধ্যে ট্রাম্প চতুর্থ। বড় ভাই ফ্রেড জুনিয়র অতিরিক্ত মদ্যপানের কারণে মাত্র ৪৩ বছর বয়সে মারা যাওয়ার পর জীবনে মদ ও সিগারেট ছোঁননি বলে দাবি ট্রাম্পের।

উল্লেখ্য, আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে যদি রিপাবলিকানরা জয়ী হয় তাহলে বিদেশে কোনো যুদ্ধ করবে না যুক্তরাষ্ট্র। কোনো মার্কিন সেনাকে আর যুদ্ধের জন্য বিদেশে পাঠানো হবে না। এমন প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প। পেনসিলভেনিয়া রাজ্যে এক নির্বাচনী প্রচারণা সভায় বক্তব্য দেওয়ার সময় এই প্রতিশ্রুতি দেন তিনি।

দয়া করে পোস্টটি আপনার স্যোসাল মিডিয়া শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো সংবাদ
© All rights reserved © 2019 LatestNews
Theme Customized BY LatestNews